RANIGANJ-JAMURIA

রানিগঞ্জে বিজেপি সমর্থকের মৃত্যু, কাঠগড়ায় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য ও তার পরিবার

বেঙ্গল মিরর, রানিগঞ্জ ও আসানসোল, চরণ মুখার্জি, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্যঃ পারিবারিক অশান্তির কারণে পাশাপাশি দুই পরিবারের বিবাদ। আর তাতে হওয়া মারামারিতে এক বিজেপি সমর্থকের মৃত্যুর ঘটনার ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ালো পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের রানিগঞ্জ এলাকায়। সৌমেন বাউরি ( ৪৩) নামে ঐ বিজেপি সমর্থকের বাড়ি রানিগঞ্জ থানার ওল্ড এগারা মাঝপাড়ায়। মঙ্গলবার দুপুরে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ঐ বিজেপি সমর্থকের মৃতদেহর ময়নাতদন্ত হয়। এই ঘটনায় কাঠগড়ায় উঠেছেন রানিগঞ্জের তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য রঞ্জন বাউরি ও তার পরিবারের সদস্যরা। অভিযুক্তরা সবাই পলাতক বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় দলের সমর্থকের মৃত্যুতে তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্যকে দায়ী করে ও অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি ও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলছেন বিজেপি নেতৃত্ব।


ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রানিগঞ্জের ওল্ড এগারার মাঝপাড়ার বাসিন্দা বছর ৪৩ র সৌমেন বাউরির সঙ্গে ২০২৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর তৃনমুল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য রঞ্জন বাউরি ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পারিবারিক কারণে বিবাদ হয়। তাকে কেন্দ্র করে মারধর বা মারামারির ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় গুরুতরভাবে আহত হন সৌমেন। এরপর গত একমাসেরও বেশি সময় ধরে আসানসোল জেলা হাসপাতাল সহ একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসা হয়। তাকে কিছুদিনের জন্য তাকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। বাড়িতে থাকাকালীন সোমবার রাতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তখন তাকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় তার।


এই ঘটনার পরেই বিজেপির কর্মী ও সমর্থকরা সৌমেন বাউরিকে দলীয় সমর্থক বলে দাবি করেন তারা এই ঘটনায় যুক্ত রয়েছেন তৃনমুল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য রঞ্জন বাউরি ও আরো ছয় জন বলে দাবি করেন। অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে ও দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে সরব হয় বিজেপি নেতৃত্ব। এই মৃত্যুর ঘটনাকে তারা পরিকল্পিতভাবে হত্যা বলে দাবি করেন ও এই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেস সমস্ত ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে চাইছে বলেই জানিয়েছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব।


এদিকে সমগ্র এই ঘটনার সঙ্গে দলের কোন যোগ নেই বলেই দাবি করেন ও সমস্তটাই প্রতিবেশীদের মধ্যেকার বিষয় বলেই দাবি করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা।
এদিকে এই মৃত্যুর ঘটনার খবর প্রকাশ পাওয়ার পরই এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্য রঞ্জন বাউরি সহ তার পরিবারের এলাকা ছাড়া হয়েছে। বাড়িঘর ছেড়ে তারা চম্পট দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, আসানসোল দক্ষিণ গ্রামীণ ব্লক এর তৃণমূল সদস্য আশীষ বাউরির বক্তব্য, যেদিন মারামারি হচ্ছিল সেদিন রঞ্জন বাউরি গিয়ে ওকে ছাড়াতে গিয়েছিল। যেহেতু সে পাশেই থাকে। তাই তারা বাড়িছাড়া হতে পারে আতঙ্কের কারণে। তিনি বলেন, পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করতেই হবে।


বিজেপির মন্ডল সভাপতি সন্দীপ গোপ বলেন, পরিকল্পিতভাবে সৌমেনকে মেরে ওকে খুন করা হয়েছে। পারিবারিক বিষয় নিয়ে রঞ্জন বাউরির গোটা পরিবারের সদস্যরা তাকে প্রথমে সেদিন সকালের দিকে মারে। তারপর রাতেও তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছিল।
তবে কি কারনে এই মারধর ও আদৌও এই ঘটনাটি হত্যা নাকি নিছকই দুর্ঘটনা তা নিয়ে রয়েছে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে সোমবার রাতে রানিগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। তার প্রেক্ষিতে পুলিশ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে রানিগঞ্জ পুলিশ এদিন জানায়।

Leave a Reply