BARABANI-SALANPUR-CHITTARANJAN

চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানাকে ১০০ টি উচ্চ ক্ষমতার টুইন ইঞ্জিন তৈরীর বরাত

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য,  আসানসোল।চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানার কর্মী এবং আধিকারিকদের  দক্ষতা রেল বোর্ডকে প্রভাবিত করেছে। তার প্রতিফলন দেখা গেল ১৪ ফেব্রুয়ারি জারি করা রেল বোর্ডের বিজ্ঞপ্তিতে। ‌‌ যেখানে নির্ধারিত ইঞ্জিন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার বাইরে গিয়ে চিত্তরঞ্জন রেল কারখানাতে আরও ১০০ টি উচ্চ ক্ষমতার টুইন ইঞ্জিন (১২০০০ অশ্ব শক্তি) তৈরীর বরাত দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই কারখানায় এমন ৪টি ইঞ্জিন তৈরির পর তা ভারতীয় রেলে পরীক্ষামূলকভাবে চালিয়ে সার্থক হয়েছে বলে জানা গেছে। আরো ৬টি এমন ইঞ্জিনের কাজ বর্তমানে এখানে চলছে বলে জানিয়েছেন এখানকার ডেপুটি জোনারেল ম্যানেজার উত্তম কুমার মাইতি।

তিনি বলেন এই ১০০টি টুইন ইঞ্জিনের অর্ডারের চিঠি আমাদের হাতে এসে ১৪ই ফেব্রুয়ারি পৌঁছেছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে এখানে মাল গাড়ি চালানোর জন্য এর আগেই যে চারটি টুইন ইঞ্জিন তৈরি করে ভারতীয় রেলকে দেওয়া হয়েছিল সেগুলি সার্থকভাবেই রেলে ব্যবহার হচ্ছে। রেল সূত্রে জানা গেছে  এই ইঞ্জিনগুলি ডব্লুএজি-১২ শ্রেণীর, যেগুলি অতি ভারবাহী ট্রেনকে বহন করে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করেছে। ‌ চিত্তরঞ্জনের শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্ব বলেন এবার এই সাফল্যকে ধরে রাখতে রেলবোর্ড আরও ১০০ টি ডব্লুএজি-৯ এইচ ,টুইন ইঞ্জিন তৈরির বরাত দিল চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানাকে। ‌


সিটু ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাজিব গুপ্ত বলেন এই সাফল্য চিত্তরঞ্জনের ইতিহাসকে গর্বিত করার পাশাপাশি কারখানার কর্মী এবং আধিকারিকদের দক্ষতা ও মনোবল কে আরো বাড়াবে। রাজীব বাবু বলেন আমরা এতদিন ধরে বারবার বলে আসছি যে এখানকার কর্মীরা ১২ হাজার অশ্বশক্তি সম্পন্ন  এই ধরনের দুটি ইঞ্জিনকে টুইন ইঞ্জিন করে তা ভারতীয় রেলে চালানোর উদ্যোগ নিতে পারে। ইঞ্জিন দুটি প্রথম এবং শেষে কেবিন থাকবে।আজকে খোদ রেল বোর্ড লিখিতভাবে অর্ডার দেওয়ার চিঠিতে সেই সাফল্যের কথার স্বীকার করে নিল। এগুলি সবই মালগাড়ি চালানোর জন্য তৈরি হবে। আমাদের আবেদন একইভাবে পুসপুল সিস্টেমে যে ১২ হাজার রেল ইঞ্জিন অমৃত ভারত যাত্রী ট্রেনের জন্য জন্য আমরা তৈরি করেছি তার আরো বেশি মাত্রায় অর্ডার এখানে দেয়া হোক।

তিনি হিসেব দিয়ে বলেন বিদেশ থেকে যে রেল ইঞ্জিন আমরা ৩০-৩২ কোটি টাকায় আনছি সেটা চিত্তরঞ্জন এর এই টুইন ইঞ্জিন ২১/ ২২ কোটি টাকায় তৈরি হয়ে যাচ্ছে। তাহলে ভারতীয় রেল বিদেশ থেকে না এনে চিত্তরঞ্জনে যদি এই ইঞ্জিন তৈরি করে তাহলে শত শত কোটি টাকা বাঁচবে । একই সঙ্গে আমরা দাবি জানাচ্ছি আমাদের কারখানার শূন্যস্থান পদগুলো এখন পূরণ করা কিন্তু জরুরী।


আই এন টি ইউ সির সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ সিং বলেন এখানকার কর্মী এবং আধিকারিকদের যৌথ উদ্যোগে এই টুইন ইঞ্জিন তথা নতুন ধরনের ১২০০০ অশ্ব শক্তির রেল ইঞ্জিন আমাদের অর্ডার দেওয়াতে শুধু সাহায্য করলো তাই নয়, প্রমাণিত হলো এখনো দেশের সেরা ইঞ্জিন তৈরীর দায়িত্ব এখানকার কর্মী এবং আধিকারিকরাই নিতে পারেন। এজন্য তিনি  চিত্তরঞ্জন এর জেনারেল ম্যানেজার থেকে রেলমন্ত্রী সকলকেই  ধন্যবাদ জানান। রেল এমপ্লয়ীজ ইউনিয়নের শ্রমিক নেতা প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন চিত্তরঞ্জন চলতি অর্থ বর্ষে শুধু এখানকার নয় ভারতের সমস্ত রেল কারখানার মধ্যে ইঞ্জিন উৎপাদনে ৫০০র বেশি ইঞ্জিন উৎপাদন করে নয়া রেকর্ড করতে চলেছে। সেই জন্যেই এই অর্ডার তাদের কাছে প্রকৃত পুরস্কার হিসেবে প্রাপ্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *