ঘন জঙ্গলে রাতের অন্ধকারে অতর্কিত অভিযান, বাজেয়াপ্ত অবৈধ কয়লা
বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জি, রানীগঞ্জ : রাতের অন্ধকারে, অতর্কিতে হানা দিয়ে, অবৈধ কয়লা পাচার রুখে দিল ইসিএল কর্তৃপক্ষ। চুপিসারে রাতের অন্ধকারে, গভীর জঙ্গলের মাঝে চলছিল বিশাল আয়তনের গর্ত খুঁড়ে, জীবনকে বাজি রেখে, সেই গর্ত থেকে কয়লা উত্তোলনের কাজ। আর এই খবর ইসিএল নিরাপত্তা রক্ষিদের কানে পৌঁছতেই, ইসিএল কর্তৃপক্ষ কে এ বিষয়ে জানিয়ে, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা নিয়ে, গভীর জঙ্গলের মাঝেই, রাতের অন্ধকারে, অতর্কিতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে, ব্যাপক পরিমাণে, সদ্য অবৈধ খনি মুখ থেকে উত্তোলন করা, কয়লা বাজেয়াপ্ত করল ইসিএলের নিরাপত্তা রক্ষির দল। বাজেয়াপ্ত করা হল বেশ কিছু কয়লা পাচারে, ব্যবহার করা সাইকেল।
সোম ও মঙ্গলবার ইসিএল এর সাতগ্রাম এরিয়ার, সাতগ্রাম, মিঠাপুর, নাগেশ্বর অঞ্চলে এই বিশেষ অভিযান চালিয়ে রুখে দেওয়া হল কয়লা পাচার। এদিন ঘটনাস্থলে যেতে গিয়ে দেখা যায়, চারিদিকে যখন রাতের অন্ধকারে পথ চলা মুশকিল, ঘন জঙ্গলের মাঝেই কোথাও কোথাও রয়েছে গভীর গহবর, বেশ কিছু অংশেই পরিতক্ত অবৈধ খনি,যা ঢেকে গিয়েছে গভীর জঙ্গলে সেই অংশেই এবার চলল অতর্কিতে অভিযান। রাতের অন্ধকারেই কোনক্রমে ঝোপ জঙ্গল পেরিয়ে গভীর জঙ্গলের মাঝে কয়লা পাচার রুখতে উদ্যত হল নিরাপত্তা রক্ষীরা। সাতগ্রাম ফাটকের, সাতগ্রাম শ্মশান এলাকাতেই, পুরনো এক পরিতক্ত ভাটার পাশে, ছটি অবৈধ কয়লা খনি মুখ দিয়ে, কয়লা পাচারকারী দল, রাতের অন্ধকারে ব্যাপক পরিমাণ কয়লা সেখানে কেটে মজুত করছিল।
সে বিষয়টি জানতে পেরেই চলল এই অতর্কিত অভিযান। আর এই অভিযানের জেরে সফলতা ও পেল ই সি এল। যদিও এই কয়লা পাচারের সঙ্গে যুক্ত কোন ব্যক্তিকেই খুঁজে পায়নি ই. সি.এল নিরাপত্তা রক্ষী ও পুলিশ প্রশাসন, ঘন জঙ্গলের মাঝে তারা এই অভিযানের বিষয় লক্ষ্য করে গা ঢাকা দেয়। এদিকে জঙ্গলের মাঝেই অবৈধ কয়লা খনির মুখ লক্ষ্য করে, তার চারপাশে তল্লাশি করতেই মিলল ব্যাপক পরিমাণে সদ্য উত্তোলন করা কয়লা। যে কয়লা বাজেয়াপ্ত করে, স্থানীয় কোল্ড ডিপু-তে জমা করলো ইসিএল। উল্লেখ্য দীর্ঘ কয়েকটা বছর ধরেই অবৈধ কয়লা পাচারে অনেকটাই লাগাম টানা গেছে পুলিশ প্রশাসন, ও ইসিএল নিরাপত্তা রক্ষীদের কড়া নজরদারির কারণে। ব্যাপক ধরপাকড় ও দিকে দিকে টানা অভিযানের জেরে, কয়লা চোরেরা যেন কোন ঠাসা হয়ে পড়েছে খনি অঞ্চলে।
এক সময় কয়লা চুরির মুক্তাঞ্চল হিসেবে প্রসিদ্ধ রানীগঞ্জ, জামুড়িয়া এলাকায়, বর্তমানে কয়লা চুরি একেবারে প্রায় বন্ধের মুখে চলে এসেছে। ইদানিং বেশ কয়েক দফায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দাপাদাপিতে, কয়লা চোরেরা পড়েছে আরও বিপাকে । ইসিএল কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েক দফায়, কয়লা চুরি নিয়ে রণংদেহি মনোভাব নেওয়ায়, পুলিশ প্রশাসন সি.আই.এস.এফ ও ই সিএল নিরাপত্তা রক্ষীরা কয়লা চুরি রুখতে ব্যাপক তৎপর হয়েছেন। যার জেরে দিকে দিকে ঘনঘন অভিযানের ফলে, অবৈধ কয়লা কারবার করতে গিয়ে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ছে কয়লা পাচারকারীর দল। ই.সি.এলের সাতগ্রাম এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজার জানিয়েছেন, কয়লা পাচার বন্ধে তারা জোর তৎপর রয়েছেন। যে কোন রূপ পরিস্থিতিতে, কয়লা পাচার রুখে দিতে তৎপর তারা। তার জন্য তারা রাজ্য পুলিশের সাথেই, সি.আই.এস.এফ ও ইসিএল নিরাপত্তা রক্ষীদের সাহায্য নিয়ে, এই কয়লা চুরি বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। আগামীতেও এই অভিযান লাগাতার চলবে বলেই জানিয়েছেন সাত গ্রাম এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজার।