আসানসোলে হকার খুনের ঘটনা , তিনদিন পরে গ্রেফতার এফআইআরে নাম না থাকা এক যুবক
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্যঃ আসানসোলে উত্তর থানার আসানসোল রেল স্টেশনের ৭ নম্বর প্লাটফর্ম লাগোয়া এলাকায় হকার খুনের ঘটনায় তিনদিন পরে বৃহস্পতিবার রাতে এক যুবককে গ্রেফতার করলো পুলিশ। বর্তমানে আসানসোলের রেলপার এলাকার বাসিন্দা ধৃত যুবকের নাম মহঃ মেহমুদ ওরফে গুড্ডু। পেশায় হকার ধৃত যুবকের আসল বাড়ি আসানসোল শহরের বোতল মসজিদ এলাকায়। শুক্রবার সকালে ধৃতকে ১৪ দিনের পুলিশ রিমান্ড চেয়ে আসানসোল আদালতে পেশ করা হয়। বিচারক তার জামিন নাকচ করে ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দেন।




এদিন সকালে যখন আসানসোল উত্তর থানা থেকে ধৃত মহঃ মেহমুদ ওরফে গুড্ডুকে পুলিশের গাড়িতে তোলা হচ্ছিলো, তখন সে সংবাদ মাধ্যমের কাছে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে। গুড্ডু বলে, আমার সঙ্গে সোমবার রাতে মহঃ সনু ওরফে ওয়াসিম আক্রমের ঝগড়া হয়েছিল। কিন্তু সে তাকে মারেনি। তার দাবি, ঝগড়ার পরে সে চলে যায়। তারপর সনুর সঙ্গে কি হয়েছে তার জানা নেই। সে তাকে মারেনি। পুলিশ ঝগড়ার সূত্র ধরে তাকে ধরেছে। এদিকে, আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, খুন হওয়া যুবকের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তিনজনের বিরুদ্ধে খুনের ধারা দিয়ে যে এফআইআর করে, তাতে ধৃতর নাম নেই।
এক্ষেত্রে পুলিশ দাবি, যে তিনজনের নাম এফআইআরে আছে, তাদের যোগ সূত্র ঘটনার তদন্তে নেমে পাওয়া যায় নি। অন্য একটি সূত্র মারফত মহঃ মেহমুদ ওরফে গুড্ডুর নাম জানা যায়। তারপর তদন্তে তার যোগ পাওয়া যায়। তার ভিত্তিতে তাকে আটক করে টানা জেরা করা হয়। তখন সে সনুকে খুন করার কথা স্বীকার করে। পুলিশ সূত্রে এও দাবি করা হয়েছে, রবিবার রাতে পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের আসানসোল রেলস্টেশনের ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মের অদূরে রেল কোয়ার্টারের কাছে বসে সনু ও গুড্ডু খাওয়াদাওয়া করছিলো। তখন তাদের মধ্যে হকারি করা নিয়ে কথা কাটাকাটি ও বচসা হয়। তখন সেখানে থাকা একটি পাথর দিয়ে গুড্ডু সনুর মাথা থেঁতলে দেয়। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পরে সে সেখান থেকে বেপাত্তা হয়ে যায়। পরের দিন ৪ মার্চ সোমবার সকালে সেখান থেকে উদ্ধার হয় সনুর মাথা থেঁতলানো ক্ষতবিক্ষত দেহ। এলাকায় দেহের পাশ থেকে পাওয়া যায় রক্তমাখা একটি পাথর। এই ঘটনায় গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। আসানসোলের পুরনো স্টেশন এলাকার বাসিন্দা মহঃ সনু ওরফে ওয়াসিম আক্রম (২৮) আসানসোল রেল স্টেশনের কাছে ট্রেনে যাতায়াতকারী যাত্রীদের জন্য পানীয় জলের বোতল বিক্রি করতেন। মৃত মহঃ সনুর স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে।
পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ঠিক কি কারণে এই খুনের ঘটনা তা ধৃত যুবককে রিমান্ডে নিয়ে জেরা করে জানার চেষ্টা করা হবে। নিছকই সেদিন রাতে ঝগড়া থেকে রাগের মাথায় খুন, না এর পেছনে পুরনো কোন বিবাদ আছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।