ASANSOL

আসানসোল জেলা হাসপাতালে প্রসূতির মৃত্যুতে উত্তেজনা, গাফিলতির অভিযোগ, নিরাপত্তা রক্ষীকে মারধর

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ  এক প্রসূতির মৃত্য ঘিরে রবিবার সকালে আসানসোল জেলা হাসপাতালে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এই মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান মৃতার পরিবারের সদস্য ও আত্মীয় পরিজনেরা । তাদের আরো অভিযোগ, ওয়ার্ডে কর্মরত নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীরা মৃতার মায়ের সঙ্গে দূর্ব্যবহার করেছেন।  বিক্ষোভ চলাকালীন  হাসপাতালের এক নিরাপত্তা রক্ষীকে মারধর করে রোগীর আত্মীয়রা বলে অভিযোগ। 

রবিবার সকালে মৃত প্রসূতির স্বামী নিথীশ গোয়েল আসানসোল জেলা হাসপাতালের সুপার ডাঃ নিখিল চন্দ্র দাসকে গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করে লিখিত অভিযোগ করেছেন। একই সঙ্গে আসানসোল দক্ষিণ থানায় একটি অভিযোগ করা হয়েছে মৃতার পরিবারের তরফে।  মৃতার নাম লাভলি গোয়েল( ৩৭)। তার বাড়ি আসানসোল দক্ষিণ থানার মুর্গাশোলে। মৃতার স্বামী নিশীথ গোয়েল ও মামাতো ভাই সুশীল বার্নওয়ালের  অভিযোগ শুক্রবার বিকেলে লাভলি গোয়েলকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ এন সোরেনের আন্ডারে ভর্তি করা হয়েছিল। শনিবার রাতে সিজার বা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রসূতি একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। এরপর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তাদের আরো  অভিযোগ, প্রসূতির মা ওয়ার্ডে ছিলেন। কিন্তু তাকে তেমন ভাবে কিছু বলা হয়নি। এমনকি তার স্বামীকে কিছু বলা হয় নি। তাকে রাতে ওয়ার্ডে ঢুকতে দেয়নি কর্মরত নিরাপত্তা রক্ষীরা।


রবিবার সকালে তার শারীরিক অবস্থার আরো খারাপ হয়ে যায়। তখন তাকে সিসিইউকে নিয়ে যাওয়া হয়।  চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে তার মৃত্য হয়। মৃত্যুর খবর চাউর হতেই মৃতের পরিবার ও পরিজনরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ তুলে মৃতার পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন। সেই সময় হাসপাতালের ভেতরে সুপারের চেম্বারের সামনে কর্মরত নিরাপত্তা রক্ষী রবীন্দ্রনাথ স্বর্ণকারকে মারধর করা হয়।
মৃতার পরিবারের দাবি অবিলম্বে এই ঘটনায় অভিযুক্ত চিকিৎসক ও নার্সের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। পরিবারের তরফে মৃত্যুর কারণ জানতে প্রসূতির মৃতদেহর ময়নাতদন্তের দাবি করা হয়। তার ভিত্তিতে চিকিৎসক ময়নাতদন্ত করার নির্দেশ দেন।


প্রহৃত নিরাপত্তা রক্ষী বলেন, আমি কিছুই জানিনা। রাতে কেন ঢুকতে দেওয়া হয় নি, এই কথা বলে হঠাৎ  করে সবাই আমার উপর চড়াও হয়ে মারধর শুরু করেন।
সুপার বলেন, প্রসূতির পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যতটুকু এখনো পর্যন্ত জেনেছি, তার কিছু শারীরিক সমস্যা ছিলো। শনিবার রাতে অস্ত্রোপচার করে তিনি একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। তার পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছিলো। এদিন সকালে তার মৃত্যু হয়। পরিবারের দাবি মেনে ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। রিপোর্ট পেলে জানা যাবে মৃত্যুর সঠিক কারণ। এর পাশাপাশি হাসপাতাল কতৃপক্ষ তদন্ত করবে।
পুলিশ জানায়, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *