BARABANI-SALANPUR-CHITTARANJAN

চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানা ও শহরের নিরাপত্তাকে গুরুত্ব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রিপোর্টে আশঙ্কা, সব পকেট গেট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত কতৃপক্ষের

বেঙ্গল মিরর, চিত্তরঞ্জন, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ( CLW News ) চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানা বা সিএলডব্লু ও রেল শহর চিত্তরঞ্জনের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। ঠিক সেই কারণেই শহরের সীমানা পাঁচিলকে আরো মজবুত করার পাশাপাশি যেসব জায়গায় ” পকেট গেট” আছে তার সবগুলিই বন্ধ করে দেওয়া হবে। সোমবার এক সাংবাদিক সম্মেলন রেল ইঞ্জিন কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হলো। ‌একমাত্র ১, ২ ও ৩ নম্বর গেট দিয়েই যাতায়াত করা যাবে বলেও জানিয়ে দেওয়া হলো কতৃপক্ষের তরফে। সোমবার থেকেই ২ নম্বর গেট সম্পূর্ণরূপে খুলে দেওয়া হয়েছে। চার চাকা সহ অন্যান্য যানবাহন এই গেট দিয়ে যাতায়াত করবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।


সাংবাদিক সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কারখানার সিনিয়র ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রমোদ ক্ষত্রি বলেন, ২০২৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে একটি বিশেষ নির্দেশ চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানা কতৃপক্ষের কাছে আসে। ‌তাতে বলা হয় চিত্তরঞ্জন রেল শহরকে ঘিরে থাকা পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খন্ডে সাম্প্রতিক সময়ে উগ্রপন্থী কার্যকলাপ যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। নানাভাবে আন্তঃরাজ্য দুষ্কৃতিরাও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। নির্দিষ্টভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রিপোর্টে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া, দুমকা, ধানবাদ জেলা দুষ্কৃতিদের সেফ হেভেন বা নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে অতি বামপন্থী বা চরমপন্থীদের কার্যকলাপ অতি মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। ‌এইসব কারণের জন্য চিত্তরঞ্জন রেল শহর এবং রেল ইঞ্জিন  কারখানা যথেষ্ট বিপদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আরো বলা হয়েছে, এরফলে রেলের সম্পত্তি নষ্টের আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে।


এছাড়াও রেল ইঞ্জিন কারখানার স্টিল ফাউন্ড্রি বিভাগ বন্ধ হওয়ার আশঙ্কায় চিত্তরঞ্জনের কর্মীদের মধ্যে একটা উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। সেই উদ্বেগ স্থানীয় এলাকায় বিক্ষোভের সৃষ্টি করছে। ‌স্থানীয় মানুষজনেরা খুব সহজেই রেল শহরের পকেট গেট দিয়ে যাতায়াতের সুবিধে পাওয়ার ফলে যে কোন সময়ে গন্ডগোলের আঁচ করছেন চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানা কতৃপক্ষ। এইসব কারণগুলির উল্লেখ করে, আগাম সতর্কতা হিসেবেই অতি দ্রুত সমস্ত পকেট গেট বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেই রেল কতৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যেই শহরের বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘদিন ধরে থাকা পকেট গেটের অর্ধেক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে রেল আধিকারিক জানান।
সাংবাদিকরা রেল আধিকারিককে প্রশ্ন করেন, নামোকেশিয়া সহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদেরকে  এর ফলে প্রায় ৭/৮ কিলোমিটার ঘুরে চিত্তরঞ্জনে প্রবেশ করতে হবে। যা স্থানীয় এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে অস্থিরতাকেই আরও বাড়িয়ে তুলবে। এই প্রসঙ্গটি নিয়ে রেল কতৃপক্ষ চিন্তা ভাবনা করবে বলে শ্রী ক্ষত্রী এদিন জানিয়েছেন।


রেল ইঞ্জিন কারখানার শ্রমিক সংগঠনগুলি শহরে প্রবেশের আরো নতুন দুটি গেট তৈরির যে প্রস্তাব দিয়েছে সেই বিষয়ে কোন ইতিবাচক সাড়া রেল কর্তৃপক্ষ দেয়নি। পকেট গেট বন্ধ হওয়ার ফলে বেশ কিছু মানুষের অসুবিধা হবে মেনে নিয়েও রেল কর্তৃপক্ষ বলছে শহর ও কারখানাকে পরিচ্ছন্ন ও নিরাপদ রাখতে এই ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। ‌
এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানা কতৃপক্ষ ১ নম্বর গেট থেকে চিত্তরঞ্জন রেল স্টেশন যাওয়ার রাস্তার দুদিকে থাকা দোকানদারদের আরও কিছুটা পিছনে সরে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। বলা হয়েছে, এর ফলে এই রাস্তাটি সবসময় সুস্থভাবে চলাচলের উপযোগী থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *