আসানসোল মাইন্স বোর্ড অফ হেল্থের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দূষ্কৃতি তান্ডব, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
বারাবনিতে চাঞ্চল্য , ভাঙা হলো দরজা, জানালা, মাটিতে ফেলে নষ্ট ওষুধ
বেঙ্গল মিরর, বারাবনি, মনোজ শর্মা ও রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ এলাকার গরীব মানুষদের চিকিৎসা দেওয়া মেটারনিটি এন্ড চাইল্ড ওয়েলফেয়ার সেন্টারে দূষ্কৃতি তান্ডব। আসানসোলের বারাবনি থানার চরণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাশিডাঙ্গায় ” চরণপুর মেটারনিটি এন্ড চাইল্ড ওয়েলফেয়ার সেন্টারে ” এই ঘটনাটি ঘটেছে। আসানসোল মাইন্স বোর্ড অফ হেল্থ সেন্টারটি সাড়ে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে চালিয়ে আসছে। দূষ্কৃতিরা সেন্টারে হামলা চালিয়ে দরজা ও জানালা ভাঙার পাশাপাশি জীবনদায়ি অনেক ওষুধ মাটিতে ফেলে নষ্ট করে দিয়েছে। ভাঙচুর করা বা ওষুধ নষ্ট করা শুধু নয়, এই সেন্টারের ভেতরে কেউ না না থাকার সুযোগে ও প্রতিদিন না খোলায় সেখানে অসামাজিক কার্যকলাপও হয়। যারা প্রমাণও পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ।
দূষ্কৃতিদের তান্ডব এই সেন্টারে প্রথমবার হচ্ছে, এমনটা নয়। গত একবছর ধরে লাগাতার এই ঘটনা ঘটে চলেছে। বারাবনি থানায় এই ঘটনা নিয়ে একাধিকবার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়। কিন্তু পুলিশ দূষ্কৃতিদের তান্ডব আটকাতে কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ। যে কারণে বলতে গেলে প্রায়ই এই ঘটনা ঘটায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যা নিয়ে গোটা এলাকায় যেমন চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে, তেমনই এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে এই সেন্টার বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরী হয়েছে।
জানা গেছে, বারাবনির চরণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কাশিডাঙ্গায় ” চরণপুর মেটারনিটি এন্ড চাইল্ড ওয়েলফেয়ার সেন্টার ” টি রয়েছে আসানসোল মাইন্স বোর্ড অফ হেল্থের তত্ত্বাবধানে। সপ্তাহে একদিন করে প্রতি শুক্রবার আসানসোল মাইন্স বোর্ড হেল্থের চিকিৎসক ডাঃ জিপি সিনহা এখানে আসেন। কাশিডাঙ্গা সহ আশপাশের এলাকার গরীব মানুষদের প্রাথমিক চিকিৎসা করে ওষুধ দেন ডাঃ সিনহা। দূর দূরান্ত থেকে আসা মহিলা ও পুরুষেরা এই সেন্টারে চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসার জন্য আসছেন সেই ১৯৮৩ সাল থেকে।
গত এক বছর ধরে দুষ্কৃতিরা তাণ্ডব চালিয়ে কখনো দরজা-জানলা ভেঙে নিয়ে চলে যাচ্ছে আর কখনো ভালো ভালো জীবনদায়ি ওষুধ আলমারি থেকে ফেলে দিচ্ছে।
অন্য সপ্তাহের মতো এদিন শুক্রবার দুপুর দুটো নাগাদ সেন্টার খোলার পরে ডাঃ সিনহা দেখেন ঘরের মেঝেতে ওষুধ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। পরে তিনি বলেন, নাজেহাল হয়ে পড়েছি দূষ্কৃতিদের তান্ডবে। এমন পরিস্থিতি হলে আমি এখানে সেন্টার বন্ধ করতে বাধ্য হবো। আমার তো কিছু করার নেই। ১৯৮৩ সাল থেকে এখানে আসি। কিন্তু গত একবছর ধরে এই ঘটনা ঘটছে। মনে হচ্ছে, কেউ বা কারা চায়না যে, এই সেন্টার চলুক। মনে হচ্ছে, তারা স্থানীয় দূষ্কৃতিদের দিয়ে এইসব করাচ্ছে। মঙ্গলবার বা বুধবার রাতে এই ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, এর আগে বারাবনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলাম। পুলিশ এসেছিলো। সব দেখে গেছে। কিন্তু কোন কিছু হয়নি। আবারও একই ঘটনা ঘটলো। এবার আর থানায় জানাইনি। এলাকার নেতাদেরকে বলেছি। তারা বলেছেন, দেখছি।
বারাবনি থানার পুলিশ অবশ্য এই নিয়ে কোন মন্তব্য করতে চায়নি।