RANIGANJ-JAMURIA

রানিগঞ্জে সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনা, বিহারের বাসিন্দা আরো এক পুলিশের জালে

বেঙ্গল মিরর, রানিগঞ্জ, চরণ মুখার্জী, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত:  সোনার দোকানের ডাকাতির ঘটনায় ধীরে ধীরে জাল গোটাচ্ছে পুলিশ। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে একের পর এক এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে ইতিমধ্যেই এই ডাকাতির ঘটনায় যুক্ত থাকা তিন অভিযুক্তকে ধরতে তৎপর হয়েছে পুলিশ। এবার সেই ডাকাতির ঘটনায় যুক্ত থাকা আরও একজন কুখ্যাত দুষ্কৃতিকে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিটেকটিভ ডিপার্টমেন্ট ও পুলিশের বিশেষ নজরদারি দল রানীগঞ্জ থানার ৮ সদস্যের পুলিশ বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে বিহারের পাটনা এস টি এফ এর বিশেষ দলকে সঙ্গে নিয়ে রাতভর ব্যাপক খোঁজ তল্লাশি করে, মইনপুরের বাসিন্দা বছর ৩২ এর নগেন্দ্র যাদব কে তার পিসির বাড়ি বিহারের ছাপরা জেলার মানজি থানার মোবারকপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করতে সমর্থ্য হলো পুলিশ।

জানা গেছে শুধুমাত্র নজরদারি চালিয়ে হঠাৎ করে বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়নি, তাকে গ্রেফতার করতে গিয়ে পুলিশকে ব্যাপক বেগ পেতে হয়। পুলিশ প্রশাসনের বেশ কয়েকজন সদস্যের কাছে জানা যায় ওই কুখ্যাত দুষ্কৃতিকে গ্রেফতার করতে গিয়ে রাতভর ঘিঞ্জি এলাকায় টানা নজরদারি চালাতে হয় তাদের। সে সময় সেই এলাকায় তার পিসির বাড়ির বেশ কিছু জন সদস্য ও আশেপাশের গ্রাম গঞ্জের বেশ কিছু জন সদস্য একেবারে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ওই দুষ্কৃতিকে গ্রেফতারের জন্য। তবে বিহার পুলিশের সাথেই এসটিএফের বিশেষ দল এই অভিযান চালানোই অনেকেই এসটিএফের কড়া পদক্ষেপ সম্পর্কে সজাগ থাকায় কেউই এই অভিযানে বাধা দিতে পারেনা। জানা গেছে তার পিসির বাড়ির চারপাশে চার ভাই বসবাস করেন তারই মধ্যে এক বাড়িতে আত্মগোপন করে লুকিয়ে ছিল সে। সে সম্পর্কে রাতভর তল্লাশি চালিয়েও কিছুই বুঝে উঠতে পারেনা তারা তবে সকাল হওয়ার সময় নগেন্দ্র যাদব দেওয়া টপকে পালাতে গেলেই রানীগঞ্জ থানার ২ পুলিশ প্রশাসনের নজরে আসতে তারা একেবারে বন্দুক উঁচিয়ে ঘিরে ধরে।

বিষয়টি লক্ষ্য করে এস টি এফের বিশাল বাহিনী বিহার পুলিশ ও আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারের পুলিশ ও মুহূর্তে ওই এলাকাটিকে ঘিরে ফেলে এরপরই অভিযুক্ত নগেন্দ্র কে পাকড়াও করে তাকে সেখানেই ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে ডাকাতের দিন তার ব্যবহার করা পিঠব্যাগ উদ্ধার করে তার মধ্যে ডাকাতি হওয়া বেশ কিছু স্বর্ণ অলংকার উদ্ধার করেই পুলিশ নিশ্চিত হয় এই ঘটনার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিকভাবে যুক্ত ছিল নগেন্দ্র। যদিও তার সঙ্গে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রসহ অন্য সকল সামগ্রী সম্পর্কে এখনো কোন খোঁজ খবর পায়নি পুলিশ। আর এরপরই পুলিশ অভিযুক্ত নগেন্দ্রকে রানিগঞ্জ থানা নিয়ে এসে সোমবার তাকে আসানসোল জেলা আদালতে হাজির করে।

জানা গেছে পুলিশ নগেন্দ্র কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানিয়েছে। এখন দেখার পুলিশ আদালত থেকে কত দিনের জন্য তাকে নিজেদের হেফাজতে পায়। উল্লেখ্য গত রবিবার রানীগঞ্জের তার বাংলা অঞ্চলে এক সোনার গহনার দোকানে দুঃসাহসিক ডাকাতির ঘটনায় সেই দিনেই সেই সোনার গহনার দোকান থেকে ডাকাতি করে পালানোর সময় ডাকার দলের গতিবিধি লক্ষ্য করে তাদের বিরুদ্ধে একাই বিদ্যুতের খুঁটি কে ডাল করে লড়াই করা শ্রীপুর ফাঁড়ির আইসি এক দুষ্কৃতীকে গুলি করার পর সেই দুষ্কৃতী দল লাগাতার গুলির লড়াই চালিয়ে এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয়। পরে রাস্তার বিভিন্ন অংশে লুটপাট ও ছিনতাই করে গাড়ি ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতী দল। যদিও শেষ রক্ষা হয় না। সে সময় ঝাড়খণ্ডের গিরিডি থানার পুলিশ ওই দুষ্কৃতী দলের ছিনিয়ে নেওয়া চারচাকা গাড়ি আটকে ধরলে তার মধ্যে থাকা সুরজ সিং যে বিহারের গোপালগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা তাকে পুলিশ সারিয়ার জঙ্গল থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ এরপরই দ্বিতীয় দিনে খানা তল্লাশির পর, সেই সারিয়ার জঙ্গল থেকেই গ্রেফতার করা হয় গুলিবিদ্ধ আহত অবস্থায় থাকা সনু সিং কে। এরপরই ধৃতদের টানা জিজ্ঞাসাবাদের পর অন্ডাল থানা এলাকার দক্ষিণ খন্ডের জয়পুরিয়া কোলিয়ারীর বাসিন্দা ফল বিক্রেতা মালিকে শনিবার এই ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করে পুলিশ। আর তারপরই এবার চতুর্থ দফায় পুলিশ পেল বড়সড় সফলতা এবার একেবারে বিহারের শাবরা জেলা থেকে এসটিএফ এর বিশেষ সহায়তায় মোবারকপুর থেকে পিসির বাড়িতে আত্মগোপন করে থাকা নগেন্দ্র যাদব কে গ্রেফতার করতে সমর্থ হল পুলিশ।

জানা গেছে এই নগেন্দ্র যাদব যেখানে তার পিসির বাড়িতে আত্মগোপন করেছিল সেই পিসির ছেলেরা এক্স আর্মি ম্যান তাই স্বভাবতই তাদের আশ্রয় থাকা ওই দুষ্কৃতিকে অতি সহজে যে কাবু করা সম্ভব নয় তা পুলিশ তাদের একদিনের অভিযানে বুঝতে পারে। এরপরও আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের বিশেষ পুলিশ বাহিনী এসিপি সেন্ট্রাল টু বিমান কুমার মৃধার তত্ত্বাবধানে, ও রানীগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর বিকাশ দত্তর নেতৃত্বে এই বিশেষ অভিযান চালিয়ে সফল হল। আগামীতে এই ডাকাতির ঘটনায় যুক্ত থাকা আরও চার সদস্যকে খুঁজে বের করতে জোর তৎপর হয়েছে পুলিশ তাদের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে খোঁজ তল্লাশের জন্য চলছে জোর তৎপরতা।

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *