ASANSOL

আসানসোল পুরনিগমের কাউন্সিলারের জাল সার্টিফিকেট ব্যবহারের অভিযোগ, জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে সরব বোরো চেয়ারম্যান

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ খোদ রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসের কাউন্সিলারের সই, প্যাড ও সই জাল করে জমি কেনাবেচায় (লিগ্যাল হেয়ার) সার্টিফিকেট ব্যবহার করার অভিযোগ উঠলো। ঘটনাটি ঘটেছে আসানসোলের কুলটি পুর এলাকায়। আসানসোল পুরনিগমের ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চৈতন্য মাঝি ৯ নং বোরো চেয়ারম্যান। বৃহস্পতিবার দুপুরে আসানসোলের কফি হাউসে এক সাংবাদিক সম্মেলনে চৈতন্য মাঝি গোটা বিষয়টি নিয়ে সরব হয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরেন। গোটা বিষয়টি নিয়ে কাউন্সিলার তথা বোরো চেয়ারম্যান ইতিমধ্যেই কুলটি থানায় লিখিত ভাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে কুলটি পুলিশ ভারতীয় দন্ডবিধির ৪২০ সহ একাধিক ধারায় একটি এফআইআর করে তদন্ত শুরু করেছে। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ার পরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। 

কাউন্সিলর এদিন আরো বলেন, জমি মাফিয়াদের একটি চক্র এর পেছনে কাজ করছে। যারা এইভাবেই জাল সার্টিফিকেট ও কাগজ দিয়ে অবৈধভাবে জমি রেজিস্ট্রি ও মিউটেশন করাচ্ছে। তিনি বলেন, মাস কয়েক আগে থেকেই আমার মনে হচ্ছিলো যে, ওয়ার্ডে জমি কেনাবেচা হচ্ছে, অথচ, আমার কাছ থেকে সার্টিফিকেট নেওয়া হচ্ছে না। তাই আমি কুলটি বিএলআরও অফিস যাই ও অফিসারের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি জানাই। এর কিছুদিন পরে বিএলআরও অফিস থেকে একটি জমি কেনবেচা নিয়ে তথ্য দেওয়া হয়। একটি জমি রেজিস্ট্রি করার পরে মিউটেশনের জন্য কাগজপত্র দেওয়া হয়েছে। সেখানে দেখতে পাই, কাগজপত্রের সঙ্গে আমার প্যাডে একটি সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। চৈতন্য মাঝি বলেন, ঐ সার্টিফিকেট আমার নয়। কেননা, আমার সার্টিফিকেটে একটা রেফারেন্স নম্বর থাকে। এই সার্টিফিকেট আমার নয়। কিছু লোক আমার কাউন্সিলরের লেটারহেড প্যাড, স্ট্যাম্প ও সই জাল করে এই জাল সার্টিফিকেট তৈরি করেছে। তিনি বলেন, এসব করে এক শ্রেণির লোক বিএলআরও অফিসকেও ফাঁকি দিচ্ছে। যে চক্রটি এই কাজ করেছে তারা এ ধরনের আরও অনেক প্রতারণা করেছে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি আরো বলেন, যে জমিটি অবৈধভাবে রেজিস্ট্রি হওয়ার কথা বলছি সেটি ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। জনৈক বিজয় মাঝি নামে এক ব্যক্তি এই জমিটি কিনেছেন। জমি বিক্রেতার নাম বন্দনা মাহাতো ( স্বামী নির্মল মাহাতো) ও শর্বানী বন্দোপাধ্যায় ( স্বামী সুখেন বন্দোপাধ্যায়)। প্রত্যেকেই কুলটির বাসিন্দা। 

তিনি বলেন, গোটা বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কুলটি থানায় একটি এফআইআর দায়ের করেছি। এছাড়াও কুলটির বিএলআরওকে চিঠি লিখে গোটা বিষয়টি জানিয়েছি। পাশাপাশি আমি রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক, পশ্চিম বর্ধমান জেলাশাসক এস পোন্নাবলম, আসানসোল পুরনিগমের মেয়র বিধান উপাধ্যায় সহ প্রশাসনের সব স্তরে চিঠি লিখে গোটা বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করেছি। তিনি দাবি করে বলেন, আমি আমার স্তরে বিষয়টি জানার পরে চেষ্টা করেছিলাম যে, এর পিছনে কারা রয়েছে, কিন্তু তা খুঁজে বের করতে পারিনি। তাই আমি একজন জনপ্রতিনিধি এই চক্রের পেছনে কে বা কারা আছে, তাদের নাম প্রকাশ করার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি। তিনি বলেন, এর আগেও কুলটি পুর এলাকার কাউন্সিলর অশোক পাসোয়ানের সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে এবং তার লেটার হেড ও স্ট্যাম্পও জাল করা হয়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে যে এর পেছনে একটি বড় চক্র জড়িত রয়েছে। তিনি দাবি করেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পুলিশের তদন্ত করে তাদের গ্রেফতার করে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

Leave a Reply