দুর্গাপূজো কমিটিগুলিকে অনুদান বেড়ে ৮৫ হাজার টাকা
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দোপাধ্যায়: ( Durgapuja Anudan 2024 ) এই বছরের দুর্গাপূজোয় বাংলার পুজো উদ্যোক্তা ক্লাবগুলির অনুদান বাড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার সব পুজো কমিটি গুলিকে নিয়ে মঙ্গলবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি বৈঠক করেন। কলকাতায় হওয়া এই বৈঠকে কলকাতার পুজো উদ্যোক্তারা ছিলেন। অন্য জেলাগুলো ভার্চুয়াল এই বৈঠকে অংশ নিয়েছিলো। পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসনের তরফে আসানসোলের রবীন্দ্র ভবনে এই উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস পোন্নাবলম, আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনার সুনীল কুমার চৌধুরী, আসানসোল পুরনিগমের দুই ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটক ও ওয়াসিমুল হক, মেয়র পারিষদ গুরুদাস ওরফে রকেট চট্টোপাধ্যায় সহ প্রশাসন ও পুলিশ কমিশনারেটের একাধিক আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ছিলেন একাধিক পুজো কমিটির সদস্য ও সদস্যরা।
এই বৈঠকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারি অনুদান বাড়ানোর ঘোষণার কথা জানানোর পাশাপাশি পুজোর সময় রাজ্য সরকার কি কি করবে তা জানিয়েছেন। পুলিশ প্রশাসনকে আগে থেকেই পুজোর প্রস্তুতি করতে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, এই বৈঠক আগে করার কারণ হলো, এবছরের পুজো বেশ কিছুটা এগিয়ে এসেছে। তাই আগে বৈঠক করে সবকিছু জানিয়ে দিলাম। যাতে কারোর কোন সমস্যা না হয়। বলা হয়েছে ২০২৩ সালে এই অনুদান ছিলো ৭০ হাজার টাকা। এবার তা বেড়ে ৮৫ হাজার টাকা হয়েছে। আগামী বছর এই অনুদানের টাকা বাড়তে পারে। এমন একটা ইঙ্গিত দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।শুধু ভর্তুকি বাড়ানো হয়নি, বিদ্যুৎ ছাড়ও বাড়ানো হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নেওয়ার পরে জেলাশাসক বলেন, এই জেলায় ১১৪০ এর মতো সরকারি অনুমোদিত দূর্গাপুজো হয়। এবছর সেই সংখ্যা বাড়বে কিনা তা এখনই বলা সম্ভব নয়। মুখ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে সব কিছু বিস্তারিত ভাবে জানিয়েছেন। আমরাও অনেক আগে থেকেই সব প্রস্তুতি শুরু করে দেবো। প্রথমে থানা স্তরে মিটিং হবে পুজো কমিটিগুলোকে নিয়ে। তারপরে জেলা স্তরে করা হবে। একাধিক বৈঠক করা হবে বলে এদিন জেলাশাসক জানিয়েছেন। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরো বলেন, এবারের পুজোয় কমিটিগুলোর মাধ্যমে যে সব সরকারি প্রকল্প আছে, সেগুলো যাতে মানুষ আরো ভালো করে জানতে পারেন, তারজন্য সচেতনতামুলক প্রচার করা হবে।
মেয়র পারিষদ গুরুদাস ওরফে রকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় এই বৈঠক করা হবে বলে, রাজ্য সরকারের তরফে বলা হয়েছিলো। আমরা দ্রুততার সঙ্গে সব ব্যবস্থা নিয়েছি। অনেক পুজো কমিটির সদস্যরা অংশ নিয়েছিলো। এবার মুখ্যমন্ত্রী সরকারি অনুদান বাড়ানোয় বৈঠকেই পুজো উদ্যোক্তারা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। আসানসোল পুরনিগমের তরফেও পুজোর সময় যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তা এবারেরও করা হবে বলে মেয়র পারিষদ জানিয়েছেন।
এবারের অনুদান বাড়ানোয় আসানসোল শহরের পাশাপাশি গোটা পশ্চিম বর্ধমান জেলার পুজো কমিটিগুলো মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
প্রসঙ্গতঃ, ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার দুর্গা পূজা কমিটিগুলিকে আর্থিক অনুদান দেওয়া শুরু করেছিলেন।প্রথম বছরে ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয় ক্লাবগুলোকে। তারপর করোনা পরবর্তী ধাক্কায় অনুদানের পরিমাণ দ্বিগুণ করা হয়। ২০২২ এবং ২০২৩ সালে অনুদান যথাক্রমে ৬০ হাজার টাকা এবং অনুদান ৭০ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়েছিলো। এছাড়াও, বিদ্যুৎ বিলের উপর ৬৬.৬৬ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়েছিলো জানা গেছে ।