আসানসোল জেলা হাসপাতাল পরিদর্শনে পুলিশ আধিকারিকরা
নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটোসাটো করতে একাধিক প্রস্তাবের ভাবনা
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ আরজি কর হাসপাতালের ভেতরে কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসকের খুনের ঘটনার পরে একেবারে বেআব্রু হয়ে গেছে সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এই ঘটনার পরে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে মহিলা চিকিৎসকেরা আরজি করের ঘটনার পরে রীতিমতো শঙ্কিত।
এমন পরিস্থিতিতে রবিবার সন্ধ্যায় আসানসোল জেলা হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বর্তমানে ঠিক কোন পর্যায়ে আছে তা খতিয়ে দেখলেন আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের আধিকারিকরা। এদিনের এই পরিদর্শনে ছিলেন আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের এসিপি ( সেন্ট্রাল ১) বিশ্বজিৎ নস্কর, আসানসোল দক্ষিণ থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ কৌশিক কুন্ডু ও জেলা হাসপাতালের সহকারী সুপার দেবদ্বীপ মুখোপাধ্যায়। বেশ কিছুক্ষন ধরে পুলিশ আধিকারিকরা জেলা হাসপাতালের পুরনো ভবন ও গোটা হাসপাতাল পরিসর বা চত্বর ঘুরে দেখেন।
এই মুহুর্তে জেলা হাসপাতালে নিরাপত্তা রক্ষী, পুলিশ ক্যাম্পে কতজন পুলিশ কর্মী আছেন, ঠিক কতগুলো সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে, তার একটা তথ্য পুলিশ আধিকারিকরা সংগ্রহ করেন।
আরজি করের ঘটনার পরে জেলা হাসপাতাল কতৃপক্ষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে বেশ কিছু প্রস্তাব ভেবেছেন। যেগুলি পুলিশকে জানানো হয়েছে। যেমন, এখন হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পে মাত্র ৪ জন পুলিশ কর্মী আছেন। এই সংখ্যাটা বাড়িয়ে ১২ থেকে ১৫ জন করার কথা বলা হয়েছে।
যাতে সব সময় (২৪×৭) একাধিক পুলিশ কর্মী হাসপাতালে চত্বরে থাকেন। রাতের শিফটে এমারজেন্সি বিভাগে দুজন উর্দি ধারী পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা। এর পাশাপাশি প্রস্তাবে রয়েছে রাত দশটা থেকে ভোর চারটে পর্যন্ত প্রতি দু’ঘন্টা অন্তর পুলিশের মোবাইল ভ্যানের হাসপাতাল চত্বরে টহল দেওয়া। টহলের পরে পুলিশ কর্মীরা হাসপাতালের ফেসিলিটি ম্যানেজারের অফিসে থাকা কর্মীকে অবহিত করবেন। প্রথম দুটি প্রস্তাব নিয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত পুলিশের তরফে নেওয়া হয়নি। এগুলো পুলিশ কমিশনারকে জানানো হবে। তবে রাতে টহলের প্রস্তাবটি রবিবার রাত থেকেই কার্যকর করা হবে বলে পুলিশ হাসপাতাল কতৃপক্ষকে আশ্বস্ত করেছেন।
এই মুহুর্তে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল চত্বর বাদে বাকি অংশে ৩৪ টি সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে। চিকিৎসকদের কোয়ার্টার চত্বর ও তার আশপাশের এলাকায় কোন সিসি ক্যামেরা নেই। এবার সেই অংশে সিসি ক্যামেরা লাগানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। গোটা বিষয়টি স্বাস্থ্য দপ্তরকে জানানো হবে। আর ৩৪ টি সিসি ক্যামেরার পাশাপাশি আরো কোন কোন জায়গায় সিসি ক্যামেরা লাগানো যেতে পারে, তা নিয়েও আলোচনা করা হবে। প্রয়োজনে পুলিশের সঙ্গে এই ব্যাপারে কথা বলে, তাদের মতামত নেওয়া হবে।
জানা গেছে, আজ সোমবার দুপুরে হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেই বৈঠকে সব চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীদের ডাকা হয়েছে। সেই বৈঠকে সবকিছু আলোচনা করা হবে। সবার মত জানতে চাওয়া হবে। তারপর তা প্রশাসন, পুলিশ ও স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকদের জানানো হবে।
আসানসোল জেলা হাসপাতালে এই মুহুর্তে ৭৫০ বেড ও একাধিক ওয়ার্ড এবং গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ আছে। প্রতিদিন রোগী ও পরিবারের সদস্য মিলিয়ে কয়েক হাজার মানুষ হাসপাতালে আসেন। এছাড়াও রয়েছেন শতাধিক চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মী।