ASANSOL-BURNPUR

বার্ণপুর ইস্কো কারখানার ৩৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণ

বাসিন্দাদের নিয়ে জন শুনানিতে দেওয়া হলো বিস্তারিত তথ্য

বেঙ্গল মিরর, বার্ণপুর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্য/সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : ( SAIL ISP MODERNIZATION PROJECT ) পশ্চিম বর্ধমান জেলার বার্নপুরের সেইল আইএসপি বা বার্ণপুর ইস্কো কারখানার আরো এক পর্যায়ে আধুনিকীকরণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে ৩৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রস্তাবিত আধুনিকীকরণ করা হবে। এই আধুনিকীকরণে কারখানার সম্প্রসারণেরও পরিকল্পনা রয়েছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার বার্ণপুরের ভারতী ভবনে একটি জন শুনানির আয়োজন করা হয়েছিল।


এদিনের এই জন শুনানিতে কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত এই আধুনিকীকরনের পর সেইল আইএসপির মোট ইস্পাত উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে হবে ৭.১মিলিয়ন টন। বর্তমানে এই কারখানার ইস্পাত উৎপাদনের ক্ষমতা সর্বোচ্চ ৩ মিলিয়ন টন। আধুনিকীকরণের সঙ্গে কারখানার সম্প্রসারণের মাধ্যমে কারখানার উৎপাদন ক্ষমতা বাড়িয়ে আরো ৪ মিলিয়ন টন করা হচ্ছে। এদিনের জন শুনানিতে এই কাজটি কিভাবে করা হবে তা প্রজেক্টরের মাধ্যমে বিস্তারিত ভাবে দেখানো হয়। দূষণ প্রতিরোধে নেওয়া পদক্ষেপ, সাম্প্রতিক সময়ে কারখানা সংলগ্ন এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজ, কর্মসংস্থান, প্রশিক্ষণের বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ ও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পক্ষ থেকে আসা আধিকারিকরা জানান।


এদিন জানানো হয় ৩৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে দূষণ রোধে ১৬১৩.৫০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। যার মধ্যে ১ হাজার কোটি টাকা প্ল্যান্ট থেকে বায়ু দূষণ রোধে খরচ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়াও জল দূষণ রোধ, জল সংরক্ষণ এবং দূষিত জল পুনঃব্যবহারের জন্য ২৫০ কোটি টাকা, শক্তি সংরক্ষণের জন্য ৫০ কোটি টাকা বৃক্ষরোপণের জন্য ৯ কোটি টাকা, বৃষ্টির জল সংরক্ষণ এবং দূষণ পর্যবেক্ষণের জন্য ৭.৫ কোটি টাকা ও কন্ট্রোল ল্যাবের জন্য ৩০ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে।


এদিনের জন শুনানিতে গোটা বিষয়টি প্রজেক্টের মাধ্যমে দেখানোট পরে, সামাজিক সুরক্ষার দায়িত্ব স্কিম বা সিএসআরের ( কর্পোরেট সোশাল রেসপনসেবলিটি) অধীনে নিয়োগ করা কর্মীদের  প্রশিক্ষণ, কর্মসংস্থান, স্কুলের উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি সম্পর্কিত তথ্য কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে বলা হয়েছে। এদিন কারখানা কতৃপক্ষের পরিষ্কার করে বলে দেওয়া হয় যে পর্যায়ের আধুনিকীকরণ বা সম্প্রসারণে কোন জমি অধিগ্রহণ করা হবে না। কারখানার যে নিজস্ব জমি বার্নপুর শহর বা তার আশপাশে রয়েছে তাতে এই কাজ হবে।


     এদিনের গণ শুনানিতে অংশ নেওয়া সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে তাদের এলাকার সমস্যা ও পরামর্শ সম্পর্কে তথ্য নেওয়া হয়। এই সময়ে আলোচনায় অনেকেই সিএসআরের আওতায় আইএসপির ৫ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে  উন্নয়ন, কমিউনিটি হল নির্মাণ, পানীয় জল, রাস্তার আলো বা স্ট্রিট লাইট লাগানো , জরাজীর্ণ রাস্তা তৈরি ও চাকরিতে স্থানীয় মানুষদের অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে এদিনের জন শুনানিতে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা বার্নপুরের কিছু মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে আগের আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণ পরিকল্পনায় জমি অধিগ্রহণ করে চাকরি না দেওয়ার অভিযোগ তোলেন। এই অভিযোগের উত্তরে কারখানার এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (প্রজেক্ট )সুরজিৎ মিশ্র বলেন, খুব শীঘ্রই সমস্যার সমাধান করা হবে। সবার  পরামর্শ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।


এছাড়াও, জমি অধিগ্রহণের পরে চাকরি না পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, রাজ্য সরকারের দেওয়া তালিকা মতো চাকরি দেওয়া হয়েছে। কেবলমাত্র বয়সের কারণে হয়তো সেই সময় কেউ কেউ চাকরি পাননি। আইএসপি বা ইস্কো কারখানা কতৃপক্ষ এই ব্যাপারে কারো প্রতি কোনো পক্ষপাতিত্ব দেখায়নি।
এদিনের গণ শুনানিতে, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের
ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ ভট্টাচার্য, পশ্চিম বর্ধমান জেলার ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের অতিরিক্ত জেলাশাসক অরণ্য বন্দোপাধ্যায় , ইস্কোর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (এইচআর) ইউপি সিং উপস্থিত ছিলেন। জন শুনানিতে সবাই বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে কারখানার আধুনিকীকরণের পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়ে তাদের পক্ষ থেকে সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
প্রসঙ্গতঃ, চলতি বছরের দূর্গাপুজোর পরেই বার্ণপুর ইস্কো কারখানার এই আধুনিকীকরণের কাজ শুরু হবে বলে জানা গেছে।

One thought on “বার্ণপুর ইস্কো কারখানার ৩৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণ

  • Pijush

    Asthayee karmi দের shtayee করুন লোকাল jogya লোক niyog এর dabi rakhun, noito, durga pujo te bharati bhavan giye burunpur dekhte hoi, aar kichu bochor por mahisasur mardini theke ma,matadi hoye jaben

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *