ASANSOL

বিজেপির ১২ ঘন্টা ধর্মঘটের ডাক, বিরোধিতা তৃণমূলের

বেঙ্গল মিরর, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত: ছাত্রছাত্রীদের সমর্থনে বুধবার ১২ ঘণ্টার রাজ্যব্যাপী ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বিজেপি। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে বাংলা বনধের ঘোষণা দেন। বুধবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ‘সাধারণ ধর্মঘট’ চলবে বলে জানান তিনি।  মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে। টিয়ার গ্যাস ও জলকামান ছোড়ার পর বাংলার বিজেপি সরাসরি ছাত্রসমাজের পাশে দাঁড়ায়। ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশি নিপীড়নের প্রতিবাদে বুধবার ১২ ঘণ্টার রাজ্যব্যাপী ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আমরা পরশু থেকে আন্দোলন শুরু করব।এছাড়াও ছাত্র সমাজকে সকল প্রকার আইনি ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদানের জন্য আমরা আজ থেকে হেল্পলাইন নম্বরটি পুনরায় চালু করছি।  যেকোনো আইনি সহায়তা বা পরামর্শের জন্য আপনারা এখানে কল করতে পারেন। আসুন ৩০ আগস্ট মহিলা মিছিল করি, সবাই রাজপথে আসবেন। এই আন্দোলন বিজেপির নয়, সমাজের।”

মঙ্গলবার বিকেলে নবান্ন অভিযান নিয়ে কথা বলেন বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারীও। বিধানসভার বাইরে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “অনেক জায়গা থেকে নৃশংসতার খবর আসছে।” তিনি রাজ্য পুলিশ এবং কলকাতা পুলিশকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে দমন না করার অনুরোধ করেন। অন্যথায় বুধবার ‘রাজ্য বনধ’-এর হুঁশিয়ারিও দেন বিরোধী নেতা।  মঙ্গলবার “পশ্চিমবঙ্গ ছাত্রসমাজ’  মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবিতে নবান্ন অভিযানের ডাক দেয়। রাজ্য পুলিশ সচেতন ছিল যে এই অভিযানে মহিলা ও ছাত্রদের সামনে রাখা হতে পারে এবং পেছন থেকে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করা হতে পারে।

 রাজ্য পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার এমনকি বলেন যে পুলিশকে প্ররোচনার মাধ্যমে বল প্রয়োগ করতে বাধ্য করা হতে পারে। এরপর পুরো শহরে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে পুলিশ। মঙ্গলবার সকাল থেকেই নবান্ন মোড়ে ছিল কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী। কলকাতা শহরের বিভিন্ন স্থানে ঢালাই করা রেলিং ও কন্টেইনার বসানো হয়। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একের পর এক এলাকায় বাড়তে থাকে মানুষের ভিড়। সাঁতরাগাছি, হাওড়া ব্রিজে ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করে আন্দোলনকারীরা। স্লোগান ওঠে, “দফা এক, দাবি এক, মমতার পদত্যাগ।” পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ জলকামান ব্যবহার শুরু করে। কাঁদানে গ্যাসও ছেড়ে দেওয়া হয়।  বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হতে থাকে।

বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী এর আগে ছাত্রসমাজের নবান্ন অভিযানে বাইরে থেকে সমর্থন দেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন। এমনকি সোমবার রাতে যখন নবান্ন অভিযানে সমন্বয়কারীর চার নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়, তখন শুভেন্দু অধিকারী আশ্বাস দেন যে তিনি গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তির ব্যবস্থা করবেন। তিনি বলেন যে তার দল প্রয়োজনীয় সমস্ত আইনি পদক্ষেপ নেবে এবং সমস্ত অর্থ ব্যয় করবে।

সুকান্ত মজুমদারের ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, এটা কি ছাত্র আন্দোলন? নাকি অসামাজিক আন্দোলন? তারা কি ছাত্র? ব্যারিকেড ভাঙতে কে গেছে তা সবাই দেখেছে। উন্মত্ত জনতাকে থামানোর জন্য যা করা দরকার তা করা হয়েছে। পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এর পর বাংলায় বনধের ডাক দিল বিজেপি! তাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। এটা বাংলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। কোনো ফাঁদে পা দেবেন না। আগামীকাল পশ্চিমবঙ্গে বাংলা বনধ হবে না জনজীবন স্বাভাবিক থাকবে। বিজেপির ডাকা বাংলা বনধ ব্যর্থ। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *