ASANSOL

বিজেপির ১২ ঘন্টার বাংলা বনধ  : আসানসোল শিল্পাঞ্চলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া, বিক্ষিপ্ত ঘটনা

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ বিজেপির ডাকা বুধবার ১২ ঘন্টার বাংলা বনধে আসানসোল শহর তথা গোটা শিল্পাঞ্চল জুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ও সাড়া মিললো। আসানসোল, কুলটি, বার্ণপুর ও রানিগঞ্জে এই বনধকে ঘিরে বেশ কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনার খবর পাওয়া যায়। অভিযোগ, আসানসোল ও অন্য জায়গায় জোর করে বিজেপির নেতা ও কর্মীরা বনধ সফল করার চেষ্টা করলে গন্ডগোল হয়েছে। তবে সঙ্গে সঙ্গে এইসব জায়গায় গিয়ে পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এদিন সকালে কুলটির নিয়ামতপুরে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের মিছিল মুখোমুখি হলে চরম উত্তেজনা তৈরি হয়। এলাকায় থাকা কুলটি থানা এবং নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশ দুপক্ষকে শান্ত করে পরিস্থিতি সামাল দেয়।


অন্যদিকে, বার্ণপুরের ত্রিবেণী মোড়ে বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিজেপির নেতা ও কর্মীরা রাস্তা আটকান। রাস্তায় চেয়ার দিয়ে বাঁশের ব্যারিকেড দেওয়া হয়। খবর পেয়ে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের এসিপি (হিরাপুর) ঈপ্সিতা দত্তর নেতৃত্বে হিরাপুর থানার পুলিশ সেখান পৌঁছান। পুলিশ সেই অবরোধ তুলতে গেলে বিজেপি নেতা ও কর্মীদের সঙ্গে বচসা হয়। পুলিশ পরে জোর করে তা তুলে দেয়।

এরপর বিজেপির জেলা সভাপতির নেতৃত্বে বিজেপির কর্মীরা মিছিল করে বার্ণপুর স্টেশনে যান। সেখানে তারা রেললাইনের উপরে দলের পতাকা লাগিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। বেশ কিছুক্ষন বিজেপির নেতা ও কর্মীরা সেখানে ছিলেন। পরে তারা আবার ত্রিবেণী মোড়ে ফিরে আসেন। তখন সেখান থেকে পুলিশ তাদের তুলে নিয়ে যায়।
এদিন রানিগঞ্জের বাসস্ট্যান্ডে বিজেপির কর্মী ও সমর্থকেরা বিজেপির রানিগঞ্জ শহর মন্ডলের সভাপতির নেতৃত্বে বাস আটকায় । তারা এদিন বাসস্ট্যান্ডের মধ্যেই সকাল সাতটা থেকে বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু করে। বিজেপির বেশ কিছু কর্মী ও সমর্থক দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে বাসস্ট্যান্ডের সামনে রাস্তার ওপর বসে পড়ে।


অন্যদিকে, এদিন সকাল থেকে আসানসোল শহরে বনধের তেমন কোন প্রভাব চোখে পড়েনি। বেসরকারি বাস কম চললেও, টোটো, অটো ও অন্য গাড়ি চলাচল করে। আসানসোল থেকে বিভিন্ন রুটে সরকারি বাস চলে। সকালের দিকে বিজেপির নেতা ও কর্মীদেরকে আসানসোল শহরে দেখা যায় নি। সকাল দশটার পরে বেশকিছু কর্মী জিটি রোডের ভগৎ সিং মোড়ে রাস্তা অবরোধ করেন। তারা সরকারি ও বেসরকারি বাস আটকান। যাত্রীদেরকে বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ তাদেরকে সরিয়ে দেয়।


সকাল এগারোটা নাগাদ আসানসোলের এসবি গরাই রোড ও হটন রোড মোড় সংলগ্ন এলাকায় বিজেপির কয়েকজন কর্মী দুটি ব্যাঙ্কের শাখায় এসে স্লোগান দেন। তারা ব্যাঙ্ক বন্ধ করতে বলেন।
এদিনের বাংলা বনধে আসানসোলে স্কুল ও কলেজে কোন প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি। পড়ুয়া, শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের উপস্থিতি ছিল অন্যদিনের মতো স্বাভাবিক। অফিস ও কাছারিতেও হাজিরা ছিলো অন্যদিনের মতো।
সবমিলিয়ে বেলা বারোটা পর্যন্ত আসানসোল শহর তথা গোটা শিল্পাঞ্চল জুড়ে জনজীবন মোটামুটি স্বাভাবিক ছিলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *