বার্ণপুরে দামোদর নদী থেকে উদ্ধার আরো এক ছেলের দেহ
বেঙ্গল মিরর বার্ণপুর ও আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ দামোদর নদীতে তলিয়ে গেছিলেন কলকাতার বাসিন্দা একই পরিবারের তিনজন। সম্পর্কে তারা ছিলেন বাবা ও দুই ছেলে। পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলে কুলটির শাঁকতোড়িয়া ফাঁড়ির ডিসেরগড় মাজার শরীফের কাছে মঙ্গলবার দামোদর নদীতে এই ঘটনাটি ঘটেছিলো। স্নান করতে দামোদর নদীতে তলিয়ে গেছিলেন ঐ তিনজন। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাস্থলেই উদ্ধার হয়েছিল বাবা মহঃ ফিরোজ ওরফে মহঃ কাজুর দেহ। বুধবার সকালে ঐ একই জায়গায় সামান্য কিছুটা দূরে উদ্ধার হয় ছেলে মহঃ তৌসিফের দেহ।
ঘটনার দুদিন পরে বৃহস্পতিবার সকালে আসানসোলের হিরাপুর থানার বার্ণপুরে কালাঝড়িয়া পাম্প হাউসের কাছে দামোদর নদী থেকে উদ্ধার হয় আরো এক ছেলে মহঃ আসিফের দেহ। এদিন দুপুরে আসানসোল জেলা হাসপাতালে আসিফের দেহের ময়নাতদন্ত হয়।
তবে, এই ঘটনায় মহঃ ফিরোজ ওরফে কাজুর স্ত্রী ও আরো এক ছেলে বরাত জোরে প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন।
প্রসঙ্গতঃ, গত মঙ্গলবার কলকাতার খিদিরপুরের ইকবালপুর থানার ১৯, বি হোসেন শাহ রোডের বাসিন্দা নাসিমা বেগম তার স্বামী মহঃ ফিরোজ ওরফে কাজু (৪৮ ), ছেলে মহঃ আসিফ (২৪ ), মহঃ তৌসিফ (১৯ ) ও ছোট ছেলেকে নিয়ে কুলটির ডিসেরগড় মাজার শরীফে এসেছিলেন৷ তারা ট্রেনে কুলটিতে আসেন। মঙ্গলবার বিকেলের পরে মাজার শরীফে যাওয়ার আগে তারা সবাই দামোদর নদীতে স্নান করতে যান।
এলাকার বাসিন্দাদের সূত্রের খবর, স্নান করতে নেমে সেলফি তোলার সময় দামোদর নদীতে পড়ে যান একজন। তারপর তাকে বাঁচাতে গিয়ে তারা একে একে দামোদর নদীতে তলিয়ে যেতে থাকেন। এই ঘটনা দেখতে পেয়ে আশপাশের লোকেরা দৌড়ে আসেন। বেশ কিছুক্ষনের চেষ্টায় স্থানীয় বাসিন্দারা নাসিমা বেগম ও তার শিশু সন্তানকে কোনমতে রক্ষা করেন। খবর পেয়ে শাঁকতোড়িয়া থানার পুলিশ আসে। এলাকার বাসিন্দারা পুলিশের উপস্থিতিতে তিনজনের খোঁজে দামোদরে তল্লাশি শুরু করেন। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় ও দামোদর নদীর জলের স্তর বেড়ে যাওয়ায় তখনকার মতো তল্লাশি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে পশ্চিম বর্ধমান জেলার সিভিল ডিফেন্স এবং এনডিআরএফ দল আসে। স্থানীয়রা রাত নটার পরে মহঃ ফিরোজ ওরফে কাজুর দেহ উদ্ধার করে। তারপরে তল্লাশি অভিযান চলছিল। বুধবার সকালে সেই তল্লাশির সময় মহঃ তৌসিফের দেহ উদ্ধার করা হয় ঐ একই জায়গা থেকে ।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সকালে আসানসোলের হিরাপুর থানার বার্ণপুরে কালাঝড়িয়া পাম্প হাউসের কাছে দামোদর নদীতে এক কিশোরের মৃতদেহ ভাসতে দেখেন এলাকার বাসিন্দারা। খবর পেয়ে এলাকায় আসে হিরাপুর থানার পুলিশ। উদ্ধার করা হয় সেই দেহ। পরে খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা এসে সেই দেহ মহঃ আসিফের বলে সনাক্ত করেন।
পুলিশ জানায়, ময়নাতদন্তের পরে দেহ পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।