DURGAPUR

দুর্গাপুরে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কোটি টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা, দুই পুলিশ সহ ৬ জনকে আদালতে পেশ

বেঙ্গল মিরর, দূর্গাপুর, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ* দূর্গাপুরের ১৯ নং জাতীয় সড়কে দিল্লির বাসিন্দা এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১ কোটি ১ লক্ষ টাকা লুঠ করা বা ছিনতাইয়ের ঘটনায় অভিযুক্ত হিসাবে শুক্রবার গ্রেফতার করা হয়েছিলে ৬ জনকে। শনিবার সেই ৬ জনকে দূর্গাপুর আদালতে পেশ করা হয়। পুলিশের আবেদনের ভিত্তিতে বিচারক তাদের জামিন নাকচ করে মৃত্যুঞ্জয় সরকার ও সুভাষ শর্মা নামে দু’জনকে ৫ দিনের পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দেন। অসীম চক্রবর্তী সহ বাকি ৪ জনকে ৫ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। ৫ দিন পরে এই ৬ জনকে আবার দূর্গাপুর আদালতে পেশ করার নির্দেশ বিচারক দিয়েছেন।


এই ঘটনায় ধৃত অসীম চক্রবর্তী আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এনএসআই। বর্তমানে তিনি দুর্গাপুর থানায় কর্মরত আছেন। তাকে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সেই দূর্গাপুর থানার পুলিশই শুক্রবার গ্রেফতার করেছে।  পুলিশের হাতে  থানারই পুলিশ অফিসার গ্রেফতার হওয়ার এমন ঘটনায় তোলপাড় পড়েছে গোটা দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল জুড়ে। আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ মহলেও শোরগোল পড়েছে এই ঘটনাটি নিয়ে ।
এই ঘটনাটি ঘটেছে দুর্গাপুর থানার সিটি সেন্টারের অদূরে ১৯ নং জাতীয় সড়কে। এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর কেউ এই ঘটনায় জড়িত আছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, দিল্লির বাসিন্দা মুকেশ চাওলা  নামে ঐ ব্যবসায়ী রেলের ঠিকাদার। বৃহস্পতিবার তিনি তার এক ব্যবসায়িক বন্ধুর সঙ্গে কথা বলতে আসানসোলের কুলটি থানার সীতারামপুরে আসেন। তার সঙ্গে ছিলেন তার মুন্সিও । সীতারামপুরে বন্ধুর সাথে ব্যবসা নিয়ে কথা বলার পর বৃহস্পতিবারই মুকেশ চাওলা আসানসোল হয়ে কলকাতায় উদ্দেশ্যে গাড়ি করে যাচ্ছিলেন । ঐ ব্যবসায়ীর কাছে ছিল নগদ ১ কোটি ১ লক্ষ টাকা। পুলিশের কাছে এমনই দাবি করেন মুকেশ চাওলা।  তিনি বলেন,  ১৯ নং জাতীয় সড়ক ধরে যাওয়ার সময় দুর্গাপুরে সিটি সেন্টারের অদূরে ডিভিসি মোড় সংলগ্ন পিয়ালা কালীবাড়ির কাছে আমাদের গাড়ি আসতেই রাস্তা আটকায় কয়েকজন অপরিচিত ব্যক্তি। তারা নিজেদেরকে পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিসার বলে পরিচয় দেয়। এরপর আমাদেরকে গাড়ি থেকে নামিয়ে রাস্তার ধারে নিয়ে যায়। এরপর ব্যবসায়ীকে ভয় দেখিয়ে তার কাছ থাকা টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ ।


সেদিন রাতেই দুর্গাপুর থানায় মুকেশ চাওলা গোটা ঘটনার কথা বলে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে  দুর্গাপুর থানার পুলিস ঘটনার তদন্ত শুরু করে । তদন্তে নেমে  নানা সুত্র মারফত খবর পেয়ে দুর্গাপুর থানার পুলিশ গ্রেফতার করে দুর্গাপুর থানার কর্মরত অসীম চক্রবর্তী নামে এক এএসআইকে। এরপর একে একে গ্রেফতার করা হয় সিআইডির বোম স্কোয়াডের এক কনস্টেবল চন্দন চৌধুরী , পুলিশের চাকরি থেকে সাসপেন্ড হওয়া মৃত্যুঞ্জয় সরকার ও আরো তিনজনকে।
শুক্রবার  আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা জানিয়েছিলেন, ঘটনাটিকে  গুরুত্ব দিয়ে  তদন্ত করা হচ্ছে । আইনের চোখে সবাই এক তাই। তাই পুলিস বলে কাউকে রেয়াত করা হবে না। নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করে এই ঘটনায় অনেক সুত্র পাওয়া গেছে ।
তিনি আরো বলেন, এছাড়া সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজও সংগ্রহ করা হয়েছে। এই ঘটনায় সঙ্গে আরো কেউ জড়িত কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।
ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া  এএসআই অসীম চক্রবর্তী কোকওভেন থানায় কর্মরত থাকাকালীন বিভিন্ন বিষয়ে জড়িয়ে পড়েছিলেন। তার প্রমান পাওয়া পরে,  সেই সময় তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিলো আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *