মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছলেন প্রতিবাদ মঞ্চে, বললেন আমি আপনাদের দিদি, ভেঙে দেওয়া হল সমস্ত রোগী কল্যাণ সমিতি
বেঙ্গল মিরর, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাস্টার স্ট্রোক। আজ হঠাৎ জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিবাদের মঞ্চে পৌঁছলেন । তিনি আন্দোলনকারীদের বলেন যে তিনি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নয়, তাদের দিদি হয়ে এসেছেন। জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিবাদের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর আকস্মিক আগমন শুধুমাত্র কোনও নির্দিষ্ট সমস্যা সমাধানের চেষ্টা নয়। তার সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় তা বোঝা গেল। শনিবার স্বাস্থ্য ভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের সমাবেশে যোগ দেওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত সরকারি হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা করেন। এটি খোলা জায়গায় নতুনভাবে গঠিত হবে। ওই সমিতিতে চিকিৎসক, জুনিয়র চিকিৎসক ও নার্স থাকবেন, পুলিশের সদস্যরাও থাকবেন।
লক্ষণীয় বিষয় যে আরজি কর হাসপাতালের এক তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় রোগী কল্যাণ সমিতির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির মধ্যেও ঘুষের পরিস্থিতি নিয়ে অনেকেই অভিযোগ করেছেন। সে সময় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এবার চক্রকে’ ভাঙার উদ্যোগ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। তিনি বলেন, সকল রোগী কল্যাণ সমিতিকে ভেঙে নতুন করে গঠন করতে হবে।
তিনি বললেন, “আপনাদের অনুরোধ, দয়া করে চুপ থাকুন। আমি আপনাদের আন্দোলনকে সমর্থন করি। আমি আপনাদের আন্দোলনের প্রশংসা করি। আমি ছাত্র আন্দোলন থেকে এসেছি। আমি জানি আমার পোস্ট কোন বড় ব্যাপার নয়। গতকাল সারারাত বৃষ্টি হয়েছে, আপনাদের কষ্ট দিয়েছে। আমিও ব্যথা অনুভব করলাম। আপনারা যেভাবে এই বৃষ্টি ঝড়ে বসে আছেন তাতে আমিও ব্যথিত। সারারাত ঘুমাতে পারিনি। রক্ষীদের মতো আমাকেও সজাগ থাকতে হবে। আপনাদের অনেক কষ্ট হয়েছে। আপনারা যদি আর দেরি না করে কাজে ফিরে যেতে চান, আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে আপনার দাবিগুলো সহানুভূতির সাথে বিবেচনা করার কথা ভাববো। কেউ দোষী হলে তার শাস্তি হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমি চাই তিলোত্তমা ন্যায়বিচার পান। আমি চিকিৎসকদের কাছে আবেদন করব, আমাকে একটু সময় দিন।’ আপনারা যদি আমাকে বিশ্বাস করেন। আমার মনে হচ্ছে অনেক মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, দয়া করে এই কাজে যোগ দিন।’ হাসপাতালের কাঠামোগত উন্নয়নের কাজ শুরু করেছি। আমি হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যানদের সভাপতিত্ব করব। এতে জুনিয়র ডাক্তার, নার্স, রোগী
এছাড়াও সমস্ত মেডিকেল কলেজে কল্যাণ সমিতি ভেঙে দেওয়া হবে। আপনার অবশিষ্ট দাবি বিবেচনা করা হবে। দোষীরা আমার বন্ধুরা নয়। যারা মনে করছেন আমার বন্ধু। আমি তাদের চিনি না। কোথাও এই হত্যাকাণ্ড দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, আমি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করব।’ নিজেদের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিন। নিশ্চিন্ত থাকুন, আমি কোনো ডাক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব না। আপনারা ছাড়া সিনিয়র ডাক্তাররা অচল। আমি যেহেতু আপনাদের সঙ্গী হিসেবে প্রতিবাদ মঞ্চে আসতে পেরেছি, আপনারা আমাকে বিশ্বাস করলে ধীরে ধীরে সব দাবি বিবেচনা করব।
তিনি আরও বলেন, “সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে, ১৭ তারিখ শুনানি। আমি কোনো ব্যবস্থা চাই না। আমি আপনার কাছে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নয়, বড় দিদি হিসেবে এসেছি। আমি একজন সমব্যথী। আমি দাবি নিষ্পত্তির চেষ্টা করব। সময় দিন। আপনাদের কাছে আসার জন্য সময় নেওয়া নিজেকে ছোট করা নয়। আপনারা ন্যায়বিচার পান। কোনো অন্যায় হবে না।”