ASANSOL

রানীগঞ্জের শ্রীশ্রী মহামায়া কালী মন্দিরে প্রতিমা স্থাপন

বেঙ্গল মিরর , চরণ মুখার্জি, রানিগঞ্জ : পাড়ার মাঝেই কুয়োর দাওয়াতে একসময় গড়ে উঠেছিল অস্থায়ীভাবে কালী মন্দির। এবার সেই কুয়োর উপরেই পুনরায় স্থায়ীভাবে কালীপুজোর আগেভাগে কালী মায়ের মন্দিরে, স্থাপিত হলো কালী মূর্তি। একসময় রানীগঞ্জের হিল বস্তির, তে মাথা মোড়ের রাস্তার, ছিল এক সরকারি কুয়ো। আর কুয়োর ওপরে, পূর্বে এলাকার মানুষজন যাতে কেউ পড়ে না যায়, তার জন্য দাওয়া তৈরি করা হয়। আর সেই দাওয়াতেই দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আসছিল কালীপুজো। পূর্বে ছোট আকারে মা কালীর পুজোর জন্য, তাল পাতা দিয়ে, শাল পাতা দিয়ে, কখনো বা মহিলাদের শাড়ি দিয়ে, গড়ে তোলা হতো মণ্ডপ।

পরবর্তীতে ডেকোরেটরের প্যান্ডেল তৈরি করে হতো পুজো আর এ সকল বিষয় লক্ষ্য করেই একসময় পাড়ার বয়োজ্যেষ্ঠরা পাড়ার এই কুয়োর ওপরে যখন এলাকার জলের চাহিদা অনেকটাই মিটে যায়, তখন সেখানে এক মন্দির স্থাপনের উদ্যোগ নেন। আর সেই মন্দিরই শ্রীশ্রী মহামায়া কালী মন্দির হিসেবে গড়ে ওঠে। আনুমানিক ১৯৮৮ সালে এখানে মন্দির গড়ে তোলেন এলাকার ধর্মপ্রাণ মানুষজন। পরবর্তীতে সেই কুয়োর উপর গড়ে ওঠা মন্দির মহামায়া কালীর নানান মহিমা দেখে, মানুষজন আরো আকৃষ্ট হয়। সেই মন্দির গত কয়েক বছর ধরে, একটু একটু করে, জীর্ণ প্রায় হয়ে ওঠায়, এবার সেই কুয়ো মোড়ে অবস্থিত শ্রীশ্রী মহামায়া কালী মন্দিরের জীর্ণদ্ধার করে,  মন্দিরকে পুনরায় নতুন করে গড়ে তুলে, সেই মন্দিরে আবারো শ্রীশ্রী মহামায়া কালীর মূর্তি স্থাপন করা হল।

মঙ্গলবার মহা ধুমধাম এর সঙ্গে খনি অঞ্চলের প্রসিদ্ধ মহিলা ঢাকির দল, নানান আঙ্গিকে বাজনা বাজিয়ে দর্শকদের মন জয় করে নিল। আর তার সাথেই ছিল সিং বাজনা যা মাতিয়ে তুলল এদিনের এই মন্দির স্থাপনের আগে কলেজ যাত্রার অনুষ্ঠান কে। এলাকার হাজারো ধর্মপ্রাণ মানুষ এদিন রানীগঞ্জের চীনকুঠি মোড় থেকে শোভাযাত্রা সহযোগে কুমোর বাজারের নন্দীপুকুর থেকে পবিত্র জল কলসে সংগ্রহ করে মন্দিরে স্থাপন করলেন। এরপরই হোম যজ্ঞ পুজো পাঠের মধ্যে দিয়ে মা কালীর মূর্তি স্থাপনের অনুষ্ঠান শুরু হয়। এবারও সেই নজর কাড়া মন্দির কে সাজিয়ে তোলার লক্ষ্যে। মন্দিরের অভ্যন্তরে যেমন দেবী দুর্গার মূর্তি স্থাপিত হয়েছে। তেমনি তার চারপাশে রয়েছে বামদেব, স্বামী বিবেকানন্দ, রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব ও মা সারদার মূর্তি, আর এ সকলের মাঝে বিরাজমান রয়েছেন মা কালীর মূর্তি।

সেখানেই মন্দিরের এক প্রান্তে রয়েছেন লক্ষী ,গণেশ, সরস্বতী অপর প্রান্তে রয়েছে মা অন্নপূর্ণা, এক প্রান্তে অধিষ্ঠান করছেন শিব ও মা লক্ষ্মী, আর দুই পৃথক প্রান্তে রয়েছেন অর্জুন ও শ্রীকৃষ্ণ, সেখানেই মন্দিরের পঞ্চম কোণে রয়েছে পঞ্চমুখী হনুমান। সার্বিকভাবে এই মন্দির কে গড়ে তুলে, আবারো মানুষের মনে কালীপুজোর আগেভাগেই মা কালীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য, ভক্তদের ব্যাপক ঢল লক্ষ্য করা গেছে মন্দির স্থাপনের এই কর্মকান্ড ঘিরে। এখন এলাকার মানুষজনেদের অপেক্ষা কবে হবে কালী পুজো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *