আসানসোলে পেট্রোল পাম্পে হামলায় অভিযুক্ত তৃণমূলের কর্মীরা, থানায় মারধরের অভিযোগ
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ পেট্রোল দিতে দেরী করায় পেট্রোল পাম্পের কর্মীদের সাথে অভব্য ব্যবহার এবং মারধর করার অভিযোগ উঠলো রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসের কর্মী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে। আসানসোল শহরের জিটি রোডের পুরনো রামকৃষ্ণ মিশন মোড় সংলগ্ন এলাকার পেট্রোল পাম্পে এই ঘটনা ঘটেছে। আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র পারিষদ তথা শাসক দলের নেতা রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে তার অনুগামীরা এই ঘটনায় অভিযুক্ত বলে জানা গেছে । পাম্পে লাগানো সিসিটিভির ফুটেজে তাদেরকে সেখানে দেখা গেছে। পেট্রোল পাম্পের মালিক সুবীর সাহা সোমবার রাতে গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে আসানসোল দক্ষিণ থানায় রবিউল ইসলাম ও তার অনুগামীদের নামে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে মঙ্গলবার তিনি নিজেই জানিয়েছেন।
সুবীর সাহা তার করা অভিযোগে বলেছেন, গত ২ নভেম্বর সন্ধ্যায় এক যুবক পাম্পে পেট্রোল নিতে এসেছিল। সেই সময় সেখানে কর্মী পেট্রোল পাম্পের নিয়ম অনুযায়ী তিনটি দুই চাকার মোটরবাইকে পেট্রোল দেওয়ার পর একটি চার চাকার গাড়িতে পেট্রোল দিচ্ছিলেন। তখন ঐ যুবক পাম্পের কর্মীর কাছে জানতে চান, কেন তাকে পেট্রোল দেওয়া হলো না? কর্মী তাকে পাম্পের নিয়মের কথা বলেন। এরপরে ঐ যুবক পাম্পের কর্মীকে হুমকি দিয়ে চলে যায়। এর ঠিক মিনিট পাঁচেক পরে আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র পারিষদ তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন পেট্রোল পাম্পে আসেন। তারা পেট্রোল পাম্পের ঐ কর্মীকে মারধর করেন। একইসাথে কর্মীদের অভব্য আচরণ করেন রবিউল ইসলাম ও তার অনুগামীরা।
সুবীর সাহা সেদিন আসানসোলে ছিলেন। সোমবার তিনি ফিরে আসেন ও গোটা বিষয়টি জানেন। এরপর সোমবার রাতে গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে রবিউল ইসলাম বিরুদ্ধে আসানসোল দক্ষিণ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি এও বলেন, এর আগেও একাধিকবার এই পাম্পে নানা কারণে হামলার ঘটনা ঘটেছে। পাম্পের কর্মীদের মারধর করা হয়েছে। বারবার এই ঘটনা ঘটায় মালিক হিসেবে আমি ও কর্মীরা যথেষ্টই আতঙ্কিত।
এদিকে এই বিষয়ে তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেন রবিউল ইসলাম। তিনি পাল্টা বলেন, আমারই প্রতিবেশী এক যুবক সেদিন ঐ পেট্রোল পাম্প মোটরবাইক নিয়ে পেট্রোল আনতে যায়। সে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলেও তাকে পেট্রোল না দিয়ে একটি চার চাকার গাড়িতে দেওয়া হচ্ছিলো। তখন সে জানতে চায় কেন তাকে পেট্রোল দেওয়া হচ্ছে না? এর উত্তরে তার সঙ্গে খুব খারাপ ভাষায় কথা বলে সেখানে থাকা এক কর্মী। যুবক তখন কিছু না বলে আমার কাছে এসে গোটা বিষয়টি জানায়। তখন ঐ যুবকের দুএকজন সঙ্গী সহ আমি পেট্রোল পাম্পে যাই। জানতে চাই কি হয়েছিলো। কোন কর্মীকে মারধর করিনি বা কারোর অভব্য আচরণ করিনি। উল্টে, তার প্রশ্ন বারবার এই পেট্রোল পাম্পেই কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটে? এই পেট্রোল পাম্পের কয়েকজন কর্মীর ব্যবহার অত্যন্ত খারাপ। যদি পেট্রোল পাম্পের মালিক থানায় অভিযোগ করে থাকেন, তাহলে আমি পুলিশকে বলবো প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করে বার করুক। যদি মনে হয় আমি দোষী তাহলে যে শাস্তি দেবে, সেটা মাথা পেতে নেবো। কিন্তু এরপরের ঐ পেট্রোল পাম্পের কর্মীরা যদি এই ধরনের আচরণ গাড়ির মালিকদের সঙ্গে করে, তাহলে আমি আবারও প্রতিবাদ করবো।
এই প্রসঙ্গে আসানসোলের পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, পেট্রোল পাম্পের মালিক একটি ঘটনার কথা জানিয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। গোটা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।