প্রায় ৩৫০ বছরের প্রাচীন রাস উৎসবে মাতল জামুরিয়ার সাতগ্রাম গ্রামের বাসিন্দারা
বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জি, জামুরিয়া: দীর্ঘ প্রায় ৩৫০ বছরের প্রাচীন রাস উৎসবে মাতল জামুরিয়ার সাতগ্রাম গ্রামের বাসিন্দারা। কথিত আছে পূর্বে বর্ধমানের রাজার সহায়তায় কুলো দেবতা গোপীনাথ জীওকে সে সময়ে মুঘল রাজত্বে, নাদির শাহের অত্যাচারে, সারের কুঁড়ে গোপীনাথ জীওকে লুকিয়ে রাখা হয় পরে চাষবাসের সময় সেই সার খুড়তে গিয়েগোপীনাথ জীও এর কান কেটে যায়। তবে শেষমেষ লুকিয়ে বর্ধমানের রাজার সহায়তায় সাত গ্রামে জায়গা পেয়ে জমিদারি পান কাটোয়ার ভরতপুরের মুখার্জি পরিবার। তারা পরে সাত গ্রামে কুলো দেবতা গোপীনাথ জীওয়ের মন্দির স্থাপন করে, পুজো শুরু করেন।
সে সময় সেই মুখার্জি পরিবারের সদস্যদের অধিকারী পদবি দেওয়া হয়, সেই পদবী থেকেই এখনো সেই রাজার দেওয়া পদবী নিয়ে গোপীনাথ জীওর সেবা করে চলেছেন অধিকারী পরিবার। পূর্বে এটি পারিবারিক রাস উৎসব হলেও থাকলেও, বর্তমানে তা গোটা গ্রামের উৎসব হয়ে উঠেছে। সকলেই এই কার্তিক পূর্ণিমার রাস উৎসবের দিনে, গোপীনাথ জীওয়ের পুজোয় ব্রতি হন। সকাল থেকেই চলে নানান ধার্মিক উপাচার আর রাত্রি হলেই বের হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, ফুলে মোড়া পালকিতে করে গোপীনাথ জীওর বিগ্রহ পালকিতে চড়িয়ে চলে সমগ্র গ্রাম পরিক্রমা।
বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র সহযোগে, আতশবাজি পুড়িয়ে, গ্রামের হাজারো মানুষ সামিল হয় এই শোভাযাত্রায়। শোভাযাত্রা শেষে গোপীনাথ জীওর মূর্তি রেখে চলে, যাত্রা অনুষ্ঠান। যেখানে সাধারণ ভক্তদের সঙ্গে গোপীনাথ জিও পৃথক মঞ্চে অধিষ্ঠিত হয়ে যাত্রা অনুষ্ঠানে থাকেন। কথিত আছে গোপীনাথ জীওর ভোগ খেলে ভক্তদের মনবাঞ্ছাপূর্ণ হয়। আর সে কারণেই বছরের এই বিশেষ দিনে বহু ভক্ত দূর-দূরান্ত থেকে আগত হয়ে গোপীনাথ জীওর রাসযাত্রায় সামিল হন। এবারও সেই রাস যাত্রায় মানুষের ব্যাপক ঢল লক্ষ্য করা গেল। সকলেই শুক্রবার রাতে গোপীনাথ জীওর নাম বন্দনা করে পরিক্রমা করলেন সারা গ্রাম।