কর্মসংস্থান সহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে বিক্ষোভ, উৎপাদন বন্ধ করে, প্রতিবাদ
বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জী, রানীগঞ্জ : একই পঞ্চায়েত এলাকায় তিন পৃথক স্থানে, এলাকার যুবদের কর্মসংস্থান সহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়ে উৎপাদন বন্ধ করে, প্রতিবাদ জানালো বেশ কয়েকটি গ্রামের গ্রামবাসী। বুধবার এমনই বিষয় লক্ষ্য করা গেল রানীগঞ্জ ব্লকের তিরাট পঞ্চায়েত এলাকায়। এদিন প্রথমেই তারা তিরাটে অবস্থিত দামোদর নদের বালি ঘাটে স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের দাবিতে ইসিএলের বালি খাদানে পৌঁছে বিক্ষোভ দেখায়। গ্রামবাসীরা এদিন ঘিরে ধরে বালি উত্তোলন করা ও বালি পরিবহন করা বেশ কিছু যানবাহন। উঠিয়ে দেওয়া হল বালি উত্তোলনকারী মেশিন।
গ্রামবাসীরা দাবি করে যে, এই সকল এলাকায় ইসিএলের নাম করে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে, অথচ যে সকল যানবাহনে করে এই বালি পরিবহন করা হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে না কোন ইসিএল এর নেমপ্লেট, আর বালি উত্তোলন করা অংশগুলি স্নান ঘাটের আশেপাশে হওয়ায় ব্যাপক দুর্ভোগে পড়ছেন এলাকার মানুষজন বহুবার দুর্ঘটনার কবলেও পড়তে দেখা গেছে অনেককে, এই সকলের সাথেই স্থানীয়দের কর্মসংস্থান যাতে ওই বালি ঘাটে হয় তারও দাবি তোলেন তারা। তারা জানান এই অংশে বালি বোঝাই করার জন্য স্থানীয়দের পূর্বের নিয়োগ করা হতো কিন্তু বর্তমানে মেশিন দ্বারা বালি বোঝাই করা হয় এর ফলে স্থানীয়রা কাজ হারাচ্ছে, যার জন্য মানুষজন এদের দিয়ে বালি বোঝায় দাবি তোলে তারা।
পরবর্তীতে ইসিএলের শ্রীপুর সাত গ্রাম এরিয়ার নিমচা হাই ওয়াল মাইনসের মধ্যে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে একদল গ্রামবাসী, বিক্ষোভকারী মানুষজনদের দাবি অন্যায় ভাবে জমি অধিগ্রহণ না করে, তাদের জমি থেকে কয়লা কেটে নেওয়া হচ্ছে। আর তার সাথেই স্থানীয় এলাকার যুবকদের কর্মসংস্থান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ইসিএলয়ার কর্তৃপক্ষ দেব বলে জানালেও, দেওয়া হয়নি বলেই দাবি করেছেন তারা। তাই তাদের দাবি পূরণ না হলে এ সি এল কর্তৃপক্ষকে জমি অধিগ্রহণ না করা অংশে কয়লা উত্তোলন তারা করতে দেবেন না বলেই দাবি করেন।
একই রূপ ভাবে তৃতীয় দফায় ঐ তিরাট গ্রাম পঞ্চায়েতেরই অপর এক কয়লা খনি, ডামালিয়া খোলা মুখ খনি অবস্থিত, সেই কয়লা খনির কাজ বন্ধ করেও চলে বিক্ষোভ প্রদর্শন। সাতগ্রাম শ্রীপুর এরিয়ার নিমচা আম কোলার সম্প্রসারিত কোলিয়ারির এই খোলা মুখ খনিতে, বিক্ষোভ দেখায় বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা। এই কয়লা খনিতেও কর্মসংস্থানের দাবি, এলাকার রাস্তাঘাট যাতে উন্নত হয়, এলাকার ভাঙাচোরা রাস্তাঘাট যাতে মেরামত হয়, ও একই সাথে বাইপাস রাস্তা যেতে তৈরি হয় সেই দাবি ও এই শীতকালের মধ্যেই জল স্তর ক্রমশই নেমে যাওয়ার বিষয় লক্ষ্য করে, এলাকায় জল সরবরাহ যাতে স্বাভাবিক থাকে তার দাবি, বিদ্যুৎ পরিষেবা প্রধানের ব্যবস্থা করার দাবি ও জমি অধিগ্রহণ করে কয়লা উত্তোলন সহ বেশ কিছু দাবিতে বিক্ষোভ দেখায় তিনটি গ্রামের যুবকেরা।
স্থানীয়দের দাবি তাদের এলাকাতেই কয়লার উত্তোলনের পর তা লোডিং করার জন্য স্থানীয় এলাকার যুবদের নিয়োগ করতে হবে, একই সাথে এই এলাকাতেই কয়লা মজুত করতে হবে, বাইরে মজুত করা যাবে না। এই সকল বিভিন্ন দাবি নিয়ে তারা বিক্ষোভ দেখায়। যদিও সামগ্রিক এই বিক্ষোভ কর্মসূচির প্রেক্ষিতে ইসিএল কর্তৃপক্ষের তরফে কয়লা খনির আধিকারিকেরা দাবি করেছেন, সমগ্র বিষয়টি তারা নজরে রেখেছেন এ বিষয়ে গ্রামীণদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। এদিন তিনটি এলাকাতেই বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভ প্রদর্শনের পর ওই অংশে উৎপাদনের কাজ বন্ধ করে দেয়। তাদের দাবি এ বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পরই স্বাভাবিক হবে সবকিছু।