আসানসোল বিশেষ সংশোধনাগারে প্রথমবার বন্দিদের নিয়ে ক্রিকেট লিগ চালু হলো, ২৬শে জানুয়ারি পুরস্কার দেবেন জেলাশাসক
নতুন জেল সুপারের উদ্যোগে হয়ে গেল ভলিবল টুর্নামেন্টও, নিয়মিত ব্যাডমিন্টনেরও ব্যবস্থা হচ্ছে
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল : ( Asansol Special Correctional Home ) এই প্রথমবার আসানসোল জেলে বন্দীদের জন্য ক্রিকেট লিগ বা ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চালু হলো । এতে বন্দীদের মধ্যে থেকে আটটি দল তৈরি হয়েছে।ছোট মাঠের কথা মাথায় রেখেই সেখানে ৬ জন করে এক একটি দলে খেলছেন । ২৩ শে জানুয়ারি এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল হবে। ২৬ শে জানুয়ারি বিজয়ী এবং বিজেতা দল বা সেরা ক্রিকেটার, সেরা বোলার ,সেরা উইকেটকিপার কে পুরস্কার তুলে দেবেন জেলাশাসক বলে জানান সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত এখানকার নতুন জেল সুপার চান্দ্রেয়ী হাইত। প্রেসিডেন্সি জেল থেকে তিনি এসেছেন আসানসোলে জেল সুপার পদে।
প্রতিনিয়তই এখানকার বন্দিদের লেখাপড়া থেকে খেলাধুলা নিয়ে তিনি ভাবনা চিন্তা শুরু করেছেন। তিনি বলেন আমি এখানকার বন্দিদের খেলাধুলা এবং লেখাপড়ার বিষয়ে জেলাশাসকের সাথে কথা বলি। তিনি অত্যন্ত উৎসাহ দেখিয়ে আমাদের যে সহযোগিতা করছেন তা কখনোই ভুলবো না। বন্দিদের জন্য ক্রিকেট ব্যাট ,বল ,ব্যাডমিন্টন, ভলিবল ইত্যাদি দিয়েছেন ।এর মধ্যে একটা ভলিবল প্রতিযোগিতাও ছোট করে ইতিমধ্যে করে ফেলা হয়েছে। সেখানেও ৬টি দল করে মোট ৪৮ জন বন্দি প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছিল । বন্দিরা খুব উৎসাহিত এইরকম খেলাধুলাতে তাদের আগ্রহই এটা বুঝিয়ে দিয়েছে।
এই মুহূর্তে প্রায় ৪০০ বন্দী আছে এখানে। এদের মধ্যে অনেকেই ভিন রাজ্যের বাসিন্দাও আছেন। এরপর এদের নিয়ে নানান ধরনের স্পোর্টসের ব্যবস্থা করছি। সেখানে রিলে রেস, মুখে চামচ নিয়ে দৌড়ানো মহিলা বন্দিদের জন্য মিউজিকাল চেয়ার সহ নানান ধরনের স্পোর্টস থাকবে। আসানসোল জেলের ইতিহাসে এটা প্রথম এইরকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। কয়েকদিন আগে এখানে বসে আঁকো প্রতিযোগিতাও করা হয়েছিল যেখানে ১২ জন বন্দি প্রকৃতি এবং পরিবেশ সম্পর্কিত ছবি এঁকে পুরস্কৃত হলেন।
তিনি বলেন ছবিগুলো দেখলে আপনারা নিশ্চয়ই খুশি হবেন। ওদের আঁকা সেই অসম্ভব ভালো ছবি আমরা দেখলাম যাদের মধ্যে জীবনে কেউ কেউ প্রথমবার হয়তো রং তুলি নিয়ে ছবি আঁকার কাজ করলেন। কিভাবে গ্রামের বাড়িতে মাঠের মধ্যে ধান চাষের পর তা যেখানে রাখা হচ্ছে,তার পাশে গরু বাধা আছে। মেঘের আড়াল থেকে সূর্য ওঠা, সবুজ গাছ বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা জঙ্গলে আগুন না লাগানো,কোননভাবেই যাতে পাখি শিকার না হয় এমন সব ভাবনা এইসব প্রতিযোগীদের তুলিতে ছবি আঁকার মধ্যে দিয়ে উঠে এসেছে। এই প্রতিযোগিতায় অবশ্য কোন মহিলা বন্দী যোগ দেয় নি, পুরুষরাই উৎসাহের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বলে তিনি জানান।
জেল সুপার বলেন খেলাধুলার পাশাপাশি এখানে মাদকাসক্ত যেসব বন্দী আছেন তাদের মানসিক পরিবর্তনের জন্য আমরা মনোবিদদের খুঁজছি । তাদের নিয়ে এইসব বন্দীদের মাদকাসক্ত ভাবনা থেকে কি করে কাটানো যায় তারও চেষ্টা করছি। তিনি বলেন আসলে এখন তো আর জেল নয় এটা সংশোধনাগার এটাই ওদের বোঝাতে হবে এবং বুঝতে হবে