RANIGANJ-JAMURIA

জামুড়িয়া শিল্প তালুকে বেসরকারি কারখানায় দূর্ঘটনায় কর্মীর মৃত্যু , ক্ষতিপূরণ চেয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত তৃণমূলের বিক্ষোভ

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল ও জামুড়িয়া, চরণ মুখার্জী, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্যঃ* পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়ার শিল্প তালুকে একটি বেসরকারি ইস্পাত ও বিদ্যুৎ কারখানায় কর্মরত অবস্থায় ভারী লোহার বস্তু মাথায় পড়ে মৃত্যু হয় এক কর্মীর। এই ঘটনায় মৃত কর্মীর পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঐ কারখানায় বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা এবং সমর্থকেরা। শেষ পর্যন্ত কারখানা কর্তৃপক্ষ মৃত কর্মীর পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হয়। এই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা আসানসোল পুরনিগমের বোরো চেয়ারম্যান উৎপল সিনহা।


জানা গেছে, জামুড়িয়ার ইকড়া শিল্প বুধবার ভোরবেলা একটি বেসরকারি স্টিল অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড কারখানায় ঘটে এই দুর্ঘটনা। তাতে জখম হন সনু সিং নামে ঐ কর্মী। তাকে প্রথমে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে সেখান থেকে তাকে দুর্গাপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, বুধবার রাতেই তার মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার  হাসপাতালে তার ময়নাতদন্ত হয়।
প্রসঙ্গতঃ, এর আগেও এই কারখানা দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিলো এক ঠিকা কর্মীর। কারখানায় গাড়ির চাকা ফেটে মৃত্যু হয়েছিলো ঐ কর্মীর বলে জানা গেছে।


         বুধবার ভোরবেলা হওয়া এই দূর্ঘটনায় আহত হওয়া সনু সিং নামে ঐ ঠিকা কর্মীকে প্রথমে কোন এক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। অভিযোগ এই ঘটনাটিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিলো। যদিও পরে জানাজানি হয় ঘটনাটি। যে কারণে এই দুর্ঘটনা নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে।
আরো জানা গেছে, জামুড়িয়া শিল্পতালুকে বেসরকারি স্টিল অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড কারখানায় বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ঘটে এই দুর্ঘটনাটি। যেখানে ঐ কর্মী গুরুতর আহত হয়। কারখানার অন্য কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারা যায়, কারখানার উপর থেকে একটি ভারী লোহার বস্তু পড়ে সনু সিং নামে ঐ কর্মীর শরীরে। তাতে ঐ কর্মী গুরুতর আহত হন। পরে দুর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। কারখানার আধিকারিক আশুতোষ চৌধুরী জানান, ঐ কর্মীর মাথার আঘাত লেগেছে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার পর সে মারা যায়।


এদিন বোরো চেয়ারম্যান উৎপল সিনহা বলেন, সনু সিংয়ের বাড়ি আসানসোলের গিরমিন্ট এলাকায়। তার দুটি সন্তান আছে। এছাড়াও তার স্ত্রী বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে মৃত কর্মীর পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছিলাম। তারা দাবি মতো ১০ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। এর পাশাপাশি হাসপাতালে চিকিৎসা বাবদ যে ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে সেটাও তারাই মিটিয়েছেন। তবে জামুরিয়াশ প্রায়ই বিভিন্ন কারখানায় এই ধরনের দুর্ঘটনায় কর্মীদের মৃত্যু হচ্ছে। বহু ক্ষেত্রেই বাইরের ভিন জেলা বা রাজ্যের কোন কর্মীর মৃত্যু হলে কারখানা কতৃপক্ষ, তা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। সেজন্য বাইরে থেকেই কর্মীদের কারখানায় এনে কাজ করানোর প্রবনতা বেশি মাত্রায় দেখা যায় কতৃপক্ষের মধ্যে। তিনি আরো বলেন, এইসব কারখানায় নিরাপত্তার গাফিলতি সহ বিভিন্ন সমস্যা ও অভিযোগ নিয়ে আমরা আন্দোলনে নামবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *