ASANSOL

আসানসোলে ফার্নিচার ব্যবসায়ীর বাড়িতে দূষ্কৃতি হানা, ২৪ ঘন্টার মধ্যেই কাঠের মিস্ত্রি সহ গ্রেফতার চার

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ অনেক টাকা আছে, এই খবর মতো ডাকাতির উদ্দেশ্যে শুক্রবার সকালে আসানসোলের হিলভিউ নর্থের ক্ষুদিরাম পার্কে ফার্নিচার ব্যবসায়ী সুবীর বসুর বাড়িতে হানা দিয়েছিলো সশস্ত্র দূষ্কৃতি দল। সেই ঘটনায় তদন্তে নেমে এক দিন বা ২৪ ঘন্টার মধ্যেই চারজনকে গ্রেফতার করলো আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ। রবিবার আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের পক্ষ থেকে আসানসোলের পুলিশ লাইনে এসিপি (সেন্ট্রাল ১) অফিসে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এমনই দাবি করেন ডিসিপি (সেন্ট্রাল) ধ্রুব দাস। সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ছিলেন এসিপি ( সেন্ট্রাল ১) বিশ্বজিৎ নস্কর ও আসানসোল দক্ষিণ থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ কৌশিক কুন্ডু। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে যে চারজনকে শনিবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের নাম হলো শাদাব আহমেদ ওরফে রাজু, অখিলেশ সিং, শামস তাবরেজ খান ও রঘুনাথ কর্মকার।

ধৃতদের বাড়ি হিরাপুর থানার আসানসোলের ইসমাইল মোড়, হিরাপুর থানার বার্নপুরের রহমতনগর, আসানসোল উত্তর থানার রেলপারের রামকৃষ্ণ ডাঙ্গাল ও আসানসোল দক্ষিণ থানার শালবন মল্লিক পাড়া। ধৃতদের কাছ থেকে একটি চারচাকা গাড়ি, একটা নম্বর না থাকা মোটরবাইক, একটা ৯ এমএম পিস্তল ও ৬ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার ধৃতদেরকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজত চেয়ে আসানসোল আদালতে পেশ করা হয়েছিলো। বিচারক সেই আবেদনের ভিত্তিতে ধৃতদের জামিন নাকচ করে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

প্রসঙ্গতঃ, গত ২৪ জানুয়ারি সকাল দশটার সময় আসানসোলের হিলভিউ নর্থের ক্ষুদিরাম পার্ক এলাকার ফার্নিচার ব্যবসায়ী সুবীর বসুর বাড়ি গেট খুলে সশস্ত্র দুই দুষ্কৃতি ঢোকে। সুবীর বসু ও তার বাগানে সেই সময় কাজ করা এক কর্মী দুই দূষ্কৃতিকে বাধা দেয়। কর্মীর সঙ্গে এক দূষ্কৃতির ধস্তাধস্তিও হয়। ঐ কর্মীর মাথায় দূষ্কৃতি পিস্তলও ঠেকায়। কিন্তু ভয় না ঐ কর্মী চিৎকার করলে, বেগতিক বুঝে ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে পাশের গলিতে ঢুকে দুই দূষ্কৃতি পালিয়ে যায়। সেই পালানোর ছবি ব্যবসায়ীর বাড়ির সামনে লাগানো সিসিটিভির ফুটেজে দেখতে পাওয়া যায়। এলাকার বাসিন্দারা এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ঘটনার পরে তারা দাবি করেছিলেন, দুজন ব্যবসায়ীর বাড়িতে ঢুকলেও, বাইরে আরো কয়েকজন ছিলো।

এদিন ডিসিপি ( সেন্ট্রাল) ধ্রুব দাস সাংবাদিকদের বলেন, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের নাম হলো শাদাব আহমেদ ওরফে রাজু , অখিলেশ সিং, শামস তাবরেজ খান ও রঘুনাথ কর্মকার। তিনি জানান, শাদাব আহমেদ আসবাবপত্র তৈরি করে বা ফার্নিচার মিস্ত্রি। সেই কারণে তার সঙ্গে ফার্নিচার ব্যবসায়ী সুবীর বসুর পরিচিত ছিলো। তার ব্যবসায়ীর বাড়ি ও শোরুমে যাতায়াত ছিলো। সেই সূত্রে শাদাব আহমেদ কোনভাবে জানতে পেরেছিলো ২৪ জানুয়ারি ব্যবসায়ীর বাড়িতে মোটা টাকা আসবে। সেইমতো সে বাকি তিনজনকে জানায় যে ২৪ জানুয়ারি সুবীর বসুর বাড়িতে হানা দিয়ে সেই টাকা লুঠ করতে হবে। এরপর তারা ডাকাতির উদ্দেশ্যে সেখানে জড়ো হয়।

কিন্তু সুবীর বসু এবং তার কর্মীদের প্রতিরোধের কারণে তার পালিয়ে যায়। তিনি বলেন যে এই ঘটনায় একটি চার চাকার গাড়ি, একটি ৯ এমএম পিস্তল, ছয় রাউন্ড কার্তুজ, একটি মোটরসাইকেল এবং চারটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি বলেন যে এই ঘটনার তদন্ত চলছে। বাকি এদের সঙ্গীদের খোঁজ চলছে। রবিবারই ধৃতদের আদালতে পেশ করে ১০ দিনের হেফাজতে নিয়ে জেরা শুরু করা হয়েছে। ডিসিপি (সেন্ট্রাল) আরো বলেন ধৃত চারজনের মধ্যে অখিলেশ সিং ও রঘুনাথ কর্মকারের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও খুনের মতো একাধিক অপরাধের মামলা আছে। তারা জেলও খেটেছে।,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *