ব্যবসায়ীকে অপহরণের কিনারা পুলিশের, ধৃত ৫, উদ্ধার চারচাকা গাড়ি, বাইক, পিস্তল, কার্তুজ ও লক্ষাধিক টাকা
বেঙ্গল মিরর, বুদবুদ, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ ( BudBud News ) পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের পানাগড় বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় এক ব্যবসায়ীকে অপহরণের ঘটনার কিনারা করলো বুদবুদ থানার পুলিশ। এই ঘটনায় ১৩ দিনের মাথায় অপহরণের সঙ্গে যুক্ত থাকার সন্দেহে ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে বুদবুদ থানার পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে একজন ইসিএলের কর্মী ও দুজন বি.টেক পাশ বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
রবিবার রাতে এই ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত জানাতে বুদবুদ থানায় সাংবাদিক সম্মেলন করেন আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি ( পূর্ব ) অভিষেক গুপ্তা। এছাড়াও ছিলেন এসিপি ( কাঁকসা) সুমন কুমার জয়সওয়াল, বুদবুদ থানার ওসি মনোজিৎ ধারা সহ অন্য পুলিশ অফিসাররা।
ডিসিপি ( পূর্ব) জানিয়েছেন, গত ১৩ জানুয়ারি বুদবুদ থানার পুলিশ একটি অপহরণের অভিযোগ পান। পান। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে ১০ জানুয়ারি ৯ নং জাতীয় সড়ক বা পানাগড় বাইপাস সংলগ্ন এলাকা থেকে কাঁকসার বিরুডিহার বাসিন্দা জয়ন্ত গরাই নামে ব্যবসায়ীকে অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণ করা ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দিতে মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে ১০ লক্ষ টাকা রফা হয়েছিলো। পরে ৬ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দেওয়ার পরেও ব্যবসায়ীকে মারধর করে ছেড়েছিল অপহরণকারীরা। পরে পুলিশের কাছে ঐ ব্যবসায়ী বলেন, গত ১০ জানুয়ারি তাকে ৫/৬ জন দুষ্কৃতী অপহরণ করেছিলো। পরে তাকে মারধর করাও হয়েছে। পরে তার কাছ থেকে প্রায় ৬ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ নেওয়া হয়। তবে কারা তাকে সেদিন অপহরণ করেছিল সেই বিষয়ে তিনি সঠিক তথ্য পুলিশকে দিতে পারছিলেন না। এরপর বুদবুদ থানার পুলিশ ঘটনার তদন্তে নামে।
বিভিন্ন সূত্র ধরে তদন্ত করার পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা শুরু করেন পুলিশ অফিসাররা। শেষ পর্যন্ত অভিযোগের ১৩ দিন পরে ব্যবসায়ী অপহরনের ঘটনার কিনারা করে বুদবুদ থানার পুলিশ। অভিষেক গুপ্তা আরো বলেন, বিভিন্ন ভাবে তদন্ত করে বেশ কিছু সূত্র পাওয়ার পরে রবিবার ৫ জনকে এই অপহরণের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। আটক করা হয় একটি মোটরসাইকেল ও একটি চার চাকা গাড়ি। এছাড়াও উদ্ধার হয়েছে একটি পিস্তল , দু রাউন্ড গুলি, দুটি ম্যাগজিন, একটি ধারালো অস্ত্র, ১ লক্ষ ১২ হাজার টাকা ও পাঁচটি মোবাইল ফোন।
ধৃতদের নাম হলো অভিজিৎ চক্রবর্তী, সুপ্রিয় খাওয়াস, সঞ্জীব বিশ্বাস, সোহম চট্টোপাধ্যায় ও বিমলেশ কুমার ঠাকুর। এদের বাড়ি দুর্গাপুর ও কাঁকসা এলাকায়। এই ঘটনার সাথে আর কেউ যুক্ত আছে কিনা তা জানতে তদন্ত করা হচ্ছে বলে সাংবাদিকদের ডিসিপি (পূর্ব) জানিয়েছেন। ধৃতদের মধ্যে একজন ইসিএলে চাকরি করে ও দুজন বি.টেক পাস করা যুবক রয়েছে।
সোমবার ধৃত ৫ জনকে দূর্গাপুর আদালতে পেশ করা হবে। তাদের পুলিশের তরফে হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।