আসানসোলের একটি কারখানা বন্ধ হওয়ার মুখে কাজ হারানোর ভয়ে আতঙ্কিত শতাধিক কর্মী
সাত মাস উৎপাদন বন্ধ, সমালোচনায় সরব বিরোধীরা
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ আসানসোলের জিটি রোডের কুমারপুর এলাকার ডিয়োজিয়োর সহযোগী প্রতিষ্ঠান “ইউনাইটেড স্পিরিটস্ ” কারখানায় উৎপাদন গত সাত মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। এমনকি কোম্পানি তরফে কারখানার ভেতরে নির্মিত সমস্ত কর্মীদের আবাসন খালি করানো হয়েছে। পাশাপাশি ঐ আবাসনগুলো ভেঙ্গে সেই জায়গা সমতল করার পরে কারখানায় রাখা সমস্ত যন্ত্রাংশ, মেশিন, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদের বোতল, বোতলের ক্যাপ, মদের বিভিন্ন লেবেল সহ আরো অনেক জিনিস সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কোম্পানির তরফে। ১৮২৬ সালে নির্মিত এই কারখানায় বর্তমানে ১৪৫ জন স্থায়ী ও ১১০ জন ক্যাজুয়াল কর্মী রয়েছেন। এমন পরিস্থিতির কারখানায় কর্মরত সব শ্রমিককে বেতন দিতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি। তবে অবশ্যই প্রতি মাসে স্থায়ী কর্মীদেরকে বেতন দিচ্ছে কারখানা কতৃপক্ষ। স্বাভাবিক ভাবেই এখন এই কারখানার কর্মীদের মধ্যে একটা আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। তারা মনে করছেন যে কোথাও কি কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে কোন ধরনের প্রতারণার চেষ্টা করছে। কারখানা কি বন্ধ হওয়ার মুখে দাঁড়িয়ে আছে?
![](https://bengalmirrorthinkpositive.com/wp-content/uploads/2024/05/img-20240520-wa01481045365085360283686-500x428.jpg)
![](https://bengalmirrorthinkpositive.com/wp-content/uploads/2024/09/img-20240909-wa00806721733580827251668.jpg)
![](https://bengalmirrorthinkpositive.com/wp-content/uploads/2024/12/fb_img_17339279922403722767543487143310-476x500.jpg)
![](https://bengalmirrorthinkpositive.com/wp-content/uploads/2025/02/img_20250206_1948235317586622157329513-500x280.jpg)
এই প্রসঙ্গে কারখানার সিটু নেতা মুক্তেশ্বর বাউরি বলেন, কেন্দ্রের মোদী সরকার এবং রাজ্যে মমতা সরকার একই মুদ্রার দুই পিঠ। ২০১১ সালে বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে রাজ্যের অনেক কারখানা ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। যে কারণে রাজ্যে বেকারত্ব বাড়ছে বলে। তিনি বলেন, আমি এই কারখানায় কর্মী হিসেবে কাজ করি। কারখানার ভেতরে কারখানার কর্মীদের ঘর খালি করা হয়েছে। অস্থায়ী শ্রমিকদের বেতন বন্ধ করা হয়েছে। এটা পরিষ্কার যে এই কারখানাটি বন্ধের পথে। যে কোনো সময় এই কারখানাটিতে তালা লাগতে পারে কতৃপক্ষ।
পশ্চিম বর্ধমান জেলা আইএনটিটিইউসি জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটক বলেন, আমরা এই কারখানার বর্তমান সম্পর্কে অবগত আছি। রাজ্য শ্রম দফতরকেও এই বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। শ্রম দফতরের মধ্যস্থতার মাধ্যমে কারখানা কতৃপক্ষের সাথে একটি বৈঠক করা হবে। কোম্পানি বলছে, এখানে উৎপাদন খরচ বেশি তাই বন্ধ রাখা হয়েছে। এভাবে কারখানা বন্ধ রাখা ঠিক নয় বলে অভিজিৎবাবুর দাবি, কারখানাটি বেশ পুরনো।
রাজ্য প্রদেশ কংগ্রেস নেতা প্রসেনজিৎ পুইতুন্ডি বলেন, একদিকে নরেন্দ্র মোদি, অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে দেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। বিশ্বমানের বাণিজ্য মেলার আয়োজন করছেন। এমন পরিস্থিতিতে তারা দেশ ও রাজ্যে থাকা কারখানার দুর্দশা দেখতে পাচ্ছেন না। তারা কেউই কর্মীদের কথা ভাবছেন না।
বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় আসানসোলের এই কারখানার বর্তমান পরিস্থিতির জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন। তিনি বলেন, রাজ্যে একের পর এক কারখানা বন্ধ হওয়া কোনও নতুন বিষয় নয়। যতদিন রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার ক্ষমতায় থাকবে ততদিন রাজ্যে দুর্দশা এই রকম ভাবে অব্যাহত থাকবে।