ASANSOL

আসানসোল থেকে ছাড়লো মহাকুম্ভ স্পেশাল ট্রেন, রেলের সুবন্দোবস্ত, আরপিএফ ও পুলিশের নজরদারি

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ* দিল্লি স্টেশনে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটেছিলো। তার ঠিক একদিন পরে আসানসোল স্টেশনে সেই রকম ঘটনা ঘটার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিলো। এই সবকিছু দেখে যে কোন ঘটনার পুনরাবৃত্তি আটকাতে ২৪ ঘন্টা আগে থেকেই নেওয়া হয়েছিলো আগাম সতর্কতা। রেলের তরফে করা হয়েছিলো সবরকম বন্দোবস্ত। ছিলেন উচ্চপদস্থ পুলিশ ও রেলের আধিকারিক সহ আরপিএফ ও পুলিশ। এমনই ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে আসানসোল স্টেশন থেকে প্রয়াগরাজ মহাকুম্ভের উদ্দেশ্যে রওনা দিলো মহাকুম্ভ স্পেশাল ট্রেন। এই ট্রেনটি মহাকুম্ভ স্পেশাল ট্রেন বলা হলেও তা আসানসোল থেকে যাবে টুন্ডলা পর্যন্ত।

ট্রেনটি আসানসোল থেকে ছাড়ার পূর্ব নির্ধারিত সময় ছিলো সকাল সোয়া এগারোটা। কিন্তু এদিন সকালে ট্রেনটির ছাড়ার সময় রি-সিডিউল বা পরিবর্তন করার কথা পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়। সেই কারণে প্রায় সোয়া দু’ঘন্টা দেরিতে দুপুর দেড়টার সময় আসানসোল থেকে ছেড়ে যায়। সবকিছু ঠিক থাকলে বুধবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ ট্রেনটি টুন্ডলায় পৌঁছাবে। সবমিলিয়ে ট্রেনটি ২২ টি কামরা আছে। তার মধ্যে ১৯ টি যাত্রী কামরা। জেনারেল কামরা আছে চারটি। বাকিগুলি স্লিপার ও শীততাপনিয়ন্ত্রিত। এদিন দুপুরে আসানসোল থেকে যখন ট্রেনটি ছাড়ে তখন তাতে অসংরক্ষিত কামরায়  যাত্রী সংখ্যা ছিলো ৩৫০ জন। এছাড়াও সংরক্ষিত কামরায় যাত্রী ছিলো আরো তিনশোর মতো। রেলের তরফে বলা হয়েছে, মোট ৯৬৮ জনের টিকিট এই ট্রেনে রিজার্ভড রয়েছে।

এই বিষয়ে এদিন আসানসোল ডিভিশনের এডিআরএম প্রবীণ কুমার প্রেম বলেন, ব্যাঙ্গালুরু থেকে আসা এই ট্রেনটি জসিডিতে দেরিতে পৌঁছায়। যে কারণে আসানসোল স্টেশন থেকে প্রয়াগরাজের উদ্দেশ্যে ট্রেন ছাড়তে ঘন্টা দুয়েকের মতো বিলম্ব হয়েছে । তিনি বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে আসানসোল ডিভিশনের পক্ষ থেকে সব ধরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাত্রীদের পর্যায়ক্রমে ট্রেনে তোলা হয়েছে। যাত্রীদের জন্য একটি হোল্ডিং এরিয়া তৈরি করা হয়েছিলো। যেখান থেকে যাত্রীদেরকে লাইন করে প্ল্যাটফর্মে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এর আগেও আসানসোল স্টেশনে বড় কোন বিশৃঙ্খলা হয়নি। তবে আগেরদিনের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আসানসোল ডিভিশনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্টেশনের মেন গেটের বাইরে যাত্রীদের জন্য অস্থায়ী শেড তৈরি করা হয়েছিলো। ছিলো সিসি ক্যামেরার নজরদারিও। কোনও যাত্রী যাতে কোনও সমস্যার সম্মুখীন না হন সেজন্য অতিরিক্ত জিআরপি ও আরপিএফ জওয়ান মোতায়েন করা হয়। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের আধিকারিকরাও ট্রেন ছাড়ার আগে আসানসোল স্টেশনে চলে আসেন। তারা রেলকে সবরকমভাবে সহযোগিতা করেছেন।

আসানসোল থেকে এই ট্রেনে মহাকুম্ভে যাওয়া আসানসোলের গিরমিন্ট কোলিয়ারির প্রতিমা দেবী, আসানসোল মুন্সি বাজারের রবীন বর্মন ও রেলপারের রামকৃষ্ণ ডাঙ্গালের সঙ্গীতা শর্মা সহ অন্য যাত্রীরা আসানসোল ডিভিশনের সুব্যবস্থায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তারা বলেন, খুবই ভালো ভাবে আসানসোল ডিভিশন যাত্রীদের যত্ন নিয়েছে।  তারা কোনও সমস্যা ছাড়াই প্রয়াগরাজের ট্রেনে উঠতে পেরেছেন। এর জন্য তারা আসানসোল ডিভিশনের আধিকারিকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তবে এর পাশাপাশি তারা এই ট্রেন বিহারে ঢোকার পরে কি হবে, তা নিয়ে তারা শঙ্কা প্রকাশ করেন।
প্রসঙ্গতঃ, আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি আসানসোল থেকে আরো একটি মহাকুম্ভ স্পেশাল ট্রেন ছাড়বে। এর পাশাপাশি তিনটি সাপ্তাহিক ট্রেন রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *