মহাকুম্ভে গেছেন মা, বাড়ি থেকে ষষ্ঠ শ্রেণির স্কুল পড়ুয়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, চাঞ্চল্য
বেঙ্গল মিরর, কুলটি ও আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ বাড়িতে ঘরের মধ্যে সিলিংয়ের লোহার রডে গলায় দড়ি দেওয়া এক স্কুল পড়ুয়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হলো। বৃহস্পতিবারের সকালের এই ঘটনায় আসানসোলের কুলটি থানার বেজডি কোলিয়ারি এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। মৃত স্কুল পড়ুয়ার নাম রিঙ্কু যাদব (১২)। এদিন দুপুরে আসানসোল জেলা হাসপাতালে স্কুল পড়ুয়ার মৃতদেহর ময়নাতদন্ত হয়। মৃত রিঙ্কু যাদব কুলটির সোদপুর স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়তো।




পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কুলটির রিঙ্কু যাদবের বাবা বিক্রমাদিত্য যাদব পেশায় গাড়ি চালক। বুধবার রাতে তিনি বাড়িতে ছিলেন না। তার স্ত্রী অর্থাৎ রিঙ্কুর মা দিন চারেক আগে মহাকুম্ভে গেছেন। যে কারণে রিঙ্কু, তার ছোট দুই ভাই ও এক কাকা বুধবার রাতে বাড়িতে ছিলো। অন্যদিনের মতো বুধবার রাতে রিঙ্কু সবাইকে সঙ্গে নিয়ে খাবার খায়। তারপর রিঙ্কু দুই ভাইকে নিয়ে বারান্দায় শুয়ে পড়ে। কাকা তার নিজের ঘরে শোয়। রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ কাকা জল খেতে গিয়ে দেখে রিঙ্কু, তার দুই ভাইকে নিয়ে ঘুমোচ্ছে। এরপর সে শুয়ে পড়েন।
বৃহস্পতিবার সকালে রিঙ্কুর দুই ভাই ঘুম থেকে উঠে দেখে দিদি নেই। তখন তারা কাঁদতে কাঁদতে দিদির খোঁজ করতে থাকে। তাদের কান্নার শব্দে অন্য ঘরে থাকা কাকার ঘুম ভেঙে যায়। সে এসে দেখেন, রিঙ্কুর বাবা-মায়ের ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ রয়েছে। তিনি দরজা ধাক্কা দিয়ে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু কোন সাড়াশব্দ পাওয়া যায় না। এরপর তিনি আশপাশের লোকেদের ডাকেন। খবর পেয়ে রিঙ্কুর বাবা বিক্রমাদিত্য যাদব, এক মামা সহ আত্মীয় পরিজনেরা আসেন। ধাক্কাধাক্কিতে ঐ ঘরের দরজা ভাঙা যায়নি। তাই শেষ পর্যন্ত, ঐ ঘরের একদিকের দেওয়াল ভাঙা হয়। তখন দেখা রিঙ্কু ভেতরে সিলিংয়ে লোহার রডে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে। সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
জেলা হাসপাতালে বিক্রমাদিত্য যাদব বলেন, বুঝে উঠতে পারছি না যে, মেয়ে কেন এটা করলো। আমি রাতে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যাই। স্ত্রীও ছিলোনা। মেয়ে ভাইদের নিয়ে ছিলো।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, ঐ নাবালিকা কোন কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছিলো। যে কারণে সে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে। পুলিশের তরফে এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।