ASANSOL

আসানসোলের স্কুলের গেটে তালা, অভিভাবকদের বিক্ষোভে উত্তেজনা

শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিড ডে মিলের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত :* আসানসোলের রেলপাড় এলাকার বিসি রায় রোডের বাবুতলাও কাজী নজরুল ইসলাম উর্দু ফ্রি প্রাইমারি স্কুলে বুধবার অভিভাবকরা হট্টগোল বিক্ষোভ দেখান। তারা ঐ স্কুলের এক শিক্ষককে আটকে রাখতে গেটে তালা লাগিয়ে দেন। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।অভিভাবকেরা অভিযোগ করে বলেন, এই স্কুল শিক্ষক সৈয়দ আলম কাদরির বিরুদ্ধে একটি ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্কুলের মিড ডে মিলের জন্য সরকারের দেওয়া কম্পোজিট অনুদানে কারচুপি ও আত্মসাৎ করেছেন। তিনি গত কয়েকদিন ধরে স্কুলে আসছিলেন না। কিন্তু বুধবার তিনি আবার স্কুলে আসেন। এর পরে স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হয়ে আপত্তি জানান। সৈয়দ আলম কাদরির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। সেই অভিযোগের কোনও কিছু না হওয়া পর্যন্ত তিনি কিভাবে আবার তার দায়িত্বে যোগ দিতে পারেন?

অভিভাবকরা স্পষ্টভাবে বলেন, যে অভিযোগে অভিযুক্ত, তিনি তাদের সন্তানদের পড়াবেন তা তারা মেনে নেন না। সৈয়দ আলম কাদরি এদিন স্কুলে আসতেই অভিভাবকরা স্কুলের গেট বাইরে থেকে তালা মেরে দেন। তারা বলেন, যতক্ষণ না তাকে স্কুল থেকে বার করে দেওয়া হয়, স্কুলে প্রবেশ বন্ধ না করা হয়, ততক্ষণ স্কুল থেকে বার হতে দেওয়া হবে না ও তালা খোলা হবে না। ঘটনার খবর পেয়ে আসানসোল পুরনিগমের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিকে রেশমাও ঘটনাস্থলে পৌঁছেন। তিনি অভিভাবকদের সাথে কথা বলেন।

অভিভাবকরাও সিকে রেশমার সামনে তাদের দাবি রাখেন। তারা স্পষ্টভাবে বলেন যে সৈয়দ আলম কাদরির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগের কোনও নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তারা চান না যে অভিযুক্ত কোনও ব্যক্তি তাদের সন্তানদের পড়ান। সিকে রেশমা বলেন, সৈয়দ আলম কাদরির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। আমি নিজেই তার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছি। এখন এটা খুবই অবাক করার বিষয় যে এমন একজন অভিযুক্ত ব্যক্তি ডিপিএসসির চেয়ারম্যানের যোগদানের চিঠি নিয়ে স্কুলে আসতে শুরু করেছেন। যেখানে তিনি ২০২৩ সাল থেকে পলাতক ছিলেন।

এরপর সিকে রেশমা পশ্চিম বর্ধমান জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের এসআই অরিজিৎ মণ্ডলকে ঘটনাটি সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি তড়িঘড়ি স্কুলে পৌঁছে অভিভাবকদের সাথে কথা বলেন। পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা তাকেও বলেন, তারা এমন অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তাদের সন্তানদের শিক্ষক হিসেবে গ্রহণ করবেন না। তারা সিকে রেশমার সাথেও কথা বলেছেন।

পরে অরিজিৎ মন্ডল সাংবাদিকদের বলেন, আমি এখানকার অভিভাবক এবং স্থানীয় কাউন্সিলরের সাথে কথা বলেছি। একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। তিনি এত দিন অনুপস্থিত ছিলেন। এদি তিনি এসেছেন। শ্রী মন্ডল আরো বলেন, আমি এই বিষয়টি আমার ঊর্ধ্বতন আধিকারিককে জানাবো। তাদের সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, সেই অনুযায়ী কাজ করা হবে। তবে, সিকে রেশমা এই পুরো বিষয়ে নিজের ক্ষোভ চেপে রাখতে পারেননি। তিনি বলেন যে, বাচ্চাদের টাকা চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে কিভাবে আবার যোগদানের চিঠি দেওয়া হল, তা ভাবতেই অবাক হচ্ছি।

তিনি বলেন, স্কুলের টাকা আত্মসাতই শুধু করেননি, সরকারি চেকে আমার স্বাক্ষরও জাল করেছিলেন। যার জন্য আমি সৈয়দ আলম কাদরির বিরুদ্ধে থানায় রিপোর্টও করেছিলাম। কিন্তু এটা খুবই অবাক করার বিষয় যে, এখন পুলিশে রিপোর্ট করার পরেও মামলার তদন্তকারী অফিসার বলছেন যে তারা সৈয়দ আলম কাদরিকে খুঁজে পাচ্ছেন না। অথচ তিনি এখন সবার চোখের সামনে। শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসের কাউন্সিলার সিকে রেশমা আক্ষেপের সুরে বলেন, মনে হচ্ছে আমি সরকারি সিস্টেমের কাছে হেরে গেছি। এদিকে, ঐ শিক্ষক বলেন, কি হচ্ছে জানিনা। আমি স্কুলে আসতেই অভিভাবকেরা গেটে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *