কালিপাথর থেকে গরু ব্যবসায়ীকে অপহরণের কান্ডে গ্রেফতার চার
বেঙ্গল মিরর, কাজল মিত্র:- আসানসোলের সালানপুর থানার কালিপাথর গ্রামে মঙ্গলবার সকালে এক গরু ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে তারপরেই পুলিশ তদন্তে নেমে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চার অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে। যারা সকলেই ঝাড়খন্ড এর
মেহিজাম থানার বাসিন্দা ।তারা হল কার্তিক ধীবর অভিষেক দাস,সুরজ সাউ ও মনিশ সাউ ঝাড়খণ্ডের মিহিজাম থানা এলাকার বাসিন্দা। তাদের কে আজ বুধবার সকালে তাদের প্রথমে রূপনারায়নপুর ফাঁড়ি থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পিঠাকেয়ারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।পরে সালানপুর থানা থেকে আসানসোল আদালতে হাজির করা হয়। এবং কার্তিক ধীবর ও অভিষেক দাস পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানানো হয়।পুলিশ সূত্রে জানা যায় কার্তিক ধীবর ও অভিষেক দাসের বিরুদ্ধে পূর্বেও অপরাধের নথি রয়েছে, যা তদন্তে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।ঘটনার শুরু গতকাল সকালে। শামসুল আনসারী কালিপাথর থেকে ধাঙ্গুড়ি হয়ে মেহিজামের পথে রওনা দিয়েছিলেন। ঝাড়খণ্ডের একটি নির্জন এলাকায় পৌঁছতেই অজ্ঞাত অপহরণকারীরা তাকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। তারা শামসুলের পরিবারের কাছে ফোন করে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করে।




খবর ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামে উৎকণ্ঠার কালো মেঘ নেমে আসে।পরিবার আতঙ্কে কাঁপছিল,গ্রামবাসীরা উদ্বিগ্ন। কিন্তু এই সংকটে পুলিশ নিজেদের দায়িত্বের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।সালানপুর থানা ও রূপনারায়নপুর ফাঁড়ির পুলিশ সময় নষ্ট না করে তদন্তে ঝাঁপিয়ে পড়ে। জামুড়িয়া এলাকায় ব্যাপক অভিযান চালিয়ে অপহরণ কারীদের গোপন ডেরা শনাক্ত করা হয়।অল্প সময়ের মধ্যে শামসুলকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয় এবং চার দুষ্কৃতীকে হাতকড়া পরানো হয়। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডেপুটি কমিশনার সন্দ্বীপ কাররা বলেন, “আমরা শামসুলকে উদ্ধার করেছি এবং অপহরণ কারীদের ধরেছি। প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, এটি টাকা লেনদেনের পুরনো বিরোধের জের। তদন্তে আরও তথ্য বেরিয়ে আসবে।”
তিনি জানান, এই ঘটনায় অপহরণ মামলা দায়ের করা হবে এবং আইনি প্রক্রিয়া জোরদার করা হচ্ছে।পুলিশের এই ক্ষিপ্রতা গ্রামবাসীদের মনে নতুন আলো জ্বালিয়েছে। অপহরণকারীদের বোলেরো গাড়িটি ফাঁড়িতে আনার পর উত্তেজিত জনতা গাড়িতে হামলা চালায় ও ভাঙচুর করে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, কিন্তু পুলিশ অত্যন্ত ধৈর্য ও দক্ষতার সঙ্গে তা নিয়ন্ত্রণে আনে। এক গ্রামবাসী আবেগে বলেন, “পুলিশ আমাদের রক্ষাকর্তা। এমন কাজ দেখে গর্ব হয়।” আরেকজন যোগ করেন, “এই পুলিশের হাতে আমরা নিরাপদ।” তবে জনতার এই ভাঙচুর নজরদারির কিছুটা ঘাটতি প্রকাশ করেছে, যা পুলিশের সাফল্যকে ম্লান করতে পারেনি।এই ঘটনা পুলিশের সাহস, নিষ্ঠা ও জনগণের প্রতি ভালো বাসার এক অসাধারণ গল্প।এই ঘটনা কেবল একটি অভিযানের সাফল্য নয়, বরং জনগণের প্রতি পুলিশের অটুট প্রতিশ্রুতির এক প্রাণবন্ত প্রমাণ। গ্রামের মানুষের মুখে এখন পুলিশের প্রশংসার ঝড়, আর মনে ফিরেছে নিরাপত্তার স্বস্তি।