DURGAPUR

দুর্গাপুর ব্যারাজের কাজ খতিয়ে দেখতে পরিদর্শনে রাজ্যের সেচ মন্ত্রী

বেঙ্গল মিরর, দুর্গাপুর, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ দুর্গাপুর ব্যারাজের রাস্তা সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। সেই কাজের পরিদর্শন করলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী ডাঃ মানস ভুঁইঞা । তিনি সোমবার দুর্গাপুরে আসেন। পরে তিনি ব্যারাজের রাস্তা এবং অস্থায়ী বিকল্প রাস্তার ঘুরে দেখেন। তার সঙ্গে ছিলেন পশ্চিম বর্ধমান ও বাঁকুড়ার দুই জেলাশাসক এস পোন্নাবলম ও সিয়াদ এন, আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের কমিশনার সুনীল কুমার চৌধুরী, বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তেওয়ারি, বাঁকুড়ার সাংসদ অরুপ চক্রবর্তী সহ সেচ দপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা।
সেচমন্ত্রী ডাঃ মানস ভুঁইয়া বলেন “ চিফ সেক্রেটারি বা মুখ্য সচিব ইতিমধ্যেই বলেই দিয়েছেন ১৫ জুনের মধ্যে কাজ যতটা হবে তা শেষ করতে হবে । কারন এরপরে বৃষ্টি শুরু হবে । জুলাই মাসে জল বাড়বে। তখন ডিভিসি জল ছাড়বে । আর জল ছাড়া হলে তখন তো আর কাজ করা যাবে না । তাই ১৫ জুনের মধ্যেই কাজ শেষ করতে হবে ।


সেচমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য দুর্গাপুর ব্যারাজের প্রত্যেকটি টেকনিক্যাল সমস্যার সমধান করে দেওয়া। ব্যারাজটির স্টেপ বাই স্টেপ সংস্কার করা হবে। অবশ্যই সাধারণ মানুষের কোন অসুবিধা না করে। সেচমন্ত্রী বারবার জোর দিয়েছেন কাজ ১৫ জুনের মধ্যেই শেষ করতে হবে। কারন এরপরে বর্ষাকাল চল আসবে। তাই আর কাজ করা সম্ভব হবেনা । তবে যতটুকু কাজ এই সময়ের মধ্যে করা হবে ততটকুই টার্গেট করা হয়েছে। কার্যত বর্ষাকে মাথায় রেখেই কাজ করা হবে বলেই মন্তব্য করেন সেচমন্ত্রী । সেচমন্ত্রী আরো বলেন, সরকারের লক্ষ্য সাধারন মানুষের সাথে সাথে পরিবহণের সাথে যুক্তদের কষ্ট লাঘব করা। পাশাপাশি পুলিশ ও প্রশাসনের দিকটাও দেখা। সব কাজ দেখলাম। এরপরে আলোচনায় বসবো। ঠিক কি কি করা হবে এবং কি কি করা হচ্ছে তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।সেই মতো পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সেচমন্ত্রী বলেন, ডিভিসি না বলেই জল ছাড়ে। কিছুদিন আগেই জল ছেড়েছিলো। যে কারণে হুগলির বলাইচক সেতুর ক্ষতি হয়। যা সংস্কার করতে হয়েছে ।


দামোদরের পলি তোলা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সেচ মন্ত্রী বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পলি তোলার দায়িত্ব দিয়েছেন ডবলুবিএমডিটিসিএলকে। এটি শিল্প দপ্তরের একটি শাখা । এরাই পলি তোলার কাজটি দেখবে।
১৯৫৫ সালের এই দুর্গাপুর ব্যারাজ। বড় ধরনের সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে । দুর্গাপুর ব্যারাজের বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। সেচ দপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা দক্ষ। তারা গোটা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছেন।


তিনি ব্যারাজের বিকল্প রাস্তার প্রসঙ্গে বলেন, এই জায়গায় ৩০ ফুট উঁচু জলের স্তর। কিন্তু একেবারে মাটির নিচ দিয়ে কিছুটা জল আসছে । এরফলে, বড় চারচাকা গাড়ি যাতায়াতে কোন সমস্যা হবেনা। তবে মোটরবাইক , অটো , টোটো চলাচলের কিছু সমস্যা হবে। জলের কারনে পিছলে যেতে পারে এইসব গাড়িগুলি । পাঁচটি জায়গায় জল যাচ্ছে বলে জানা গেছে। যা নিয়ে আলোচনায় বসবো। সমস্যাগুলির টেকনিক্যাল দিকগুলি নিয়ে আলোচনা হবে এবং সমাধানের কাজ করা হবে ।
সেচমন্ত্রী কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কড়া সমালোচনা করে বলেন, বিজেপি সরকার ২০১৪ সালের পর থেকে বাঁধ সংস্কার, পুনর্সংস্কার ও নদী ভাঙনের জন্য এক কানা কড়িও দেয়নি । যা করা হয় বাজেটে বরাদ্দ থাকা টাকা থেকে। যা রাজ্য সরকারের টাকা ।

সেচমন্ত্রী আরো বলেন, প্রতি বছর ২৮৫ থেকে ২৯০ কিলোমিটার কাজ করা হয়। যার জন্য ৫৮৫ কোটি টাকা খরচ হয়। যা পুরোটাই রাজ্য বাজেট থেকে করা হয়। তিনি বলেন, পলি ও মাটি তোলা ও কাটার জন্য এজেন্সিকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। যা থেকে রাজস্ব বা রেভিনিউ পাওয়া যাবে।
এদিন সেচমন্ত্রী দুর্গাপুর ব্যারাজ ঘুরে দেখেন ও গোটা কাজের গতিপ্রকৃতি নিয়ে আলোচনা করেন ইঞ্জিনিয়ার ও আধিকারিকদের সাথে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *