দামোদর নদীর উপর পাকা সেতু তৈরির দাবি, বার্নপুরে কমিটির অবস্থান বিক্ষোভে পোষ্টার হাতে শিশুরাও
বেঙ্গল মিরর, বার্নপুর, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের হিরাপুর থানার বার্নপুরে দামোদর নদীর উপরে পাকা সেতু তৈরির দাবি আবারও উঠলো। বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার সঙ্গে পশ্চিম বর্ধমানের যোগাযোগ এবং উন্নয়নের স্বার্থে বিহারীনাথ সংলগ্ন দামোদর নদীর উপর পাকা সেতুর নির্মাণ করা নিয়ে শনিবার দামোদর বিহারীনাথ সেতু বন্ধন কমিটি বিক্ষোভ দেখায়। এই বিক্ষোভে প্ল্যাকার্ড ও পোস্টার হাতে বাড়ির মহিলা ও পুরুষদের সঙ্গে সামিল হয়েছিলো শিশুরাও।




উল্লেখ্য, পশ্চিম বর্ধমান জেলার বার্ণপুর তথা আসানসোল শহরের সাথে বাঁকুড়া জেলার সংযোগ স্থাপন কারী দামোদর নদীর উপর পাকা সেতুর দাবি দীর্ঘদিনের। গ্রামবাসীরা সেপ্টেম্বর থেকে জুন মাস পর্যন্ত নদীর উপর বাঁশের কাঁচা সেতু তৈরী করে তার উপর দিয়ে দুপারের হাজার হাজার শ্রমজীবী মানুষেরা যাতায়াত করেন। কিন্তু জুলাই মাসে বর্ষার সময় সেই কাঁচা সেতু বর্ষার জলের তোড়ে ভেসে চলে যায়। তখন দু জেলার শ্রমজীবী মানুষেরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে নদীর উপর রেল সেতু দিয়ে। অথবা কয়েক কিলোমিটার ঘুরে আসানসোল বা বার্ণপুরে আসতে হবে তাদেরকে।
দামোদর বিহারীনাথ সেতু বন্ধন কমিটির সভাপতি সুবল চক্রবর্তী বলেন, আমার ছোটবেলা থেকে গলা পর্যন্ত জল পার করে বার্ণপুরের স্কুলে পড়তে যেতে হতো। তখনকার ছবি কিছুমাত্র বদলায়নি ২০২৫ সালে এসে। বাঁকুড়া জেলার কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ফসল বর্ষাকালে রাত থাকতে নৌকায় করে বার্ণপুর নিয়ে যেতো। অনেক ফসল নষ্ট হতো। বার্নপুর ইস্কো কারখানার ঠিকা শ্রমিকরা নদী পার করে কারখানায় কাজ করতে যান। তাতে অনেক সময় দেরী হয়ে যায়। নদীর উপর সেতু তৈরীর দাবি নিয়ে বিভিন্ন প্রশাসনিক স্তরে চিঠি করা হলেও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় নি। রাজ্যের আইন ও শ্রম মন্ত্রী মলয় ঘটক একবার সমীক্ষা করার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু কোন কারণে সেই প্রয়াস বন্ধ হয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, তাই কমিটি চায় তাদের সেতু তৈরী করার দাবি প্রশাসন গুরুত্ব দিয়ে ভাবুক। ইতিপূর্বে মেজিয়ার সেতু এবং ডিসেরগড়ের সেতু তৈরী করার আগে একই অবস্থা ছিলো। সরকার থেকে পরে সেইসব সেতু তৈরী করা হয়েছে।
দামোদর বিহারীনাথ সেতু বন্ধন কমিটির সম্পাদক চন্দন মিশ্র বলেন, এই সেতু তৈরী হলে পুরুলিয়া জেলার প্রচুর দ্রষ্টব্য স্থান রয়েছে যেখানে রাজ্য সরকারের পর্যটন শিল্প লাভবান হবেন। তাছাড়া দুই জেলার সংস্কৃতি, কৃষিজাত পণ্যের আদানপ্রদানে দুই জেলা লাভবান হবেন। চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন সহ বিভিন্ন সেবামূলক থেকে শুরু করে ব্যবসায়িক লাভের জন্য তারা পাকা সেতুর দাবি করে আসছেন।
গ্রামবাসীদের বক্তব্য, বর্ষার সময় নদীতে জল ভরে গেলে তাদের ছেলেমেয়েরা পড়ার জন্য বার্ণপুর ও আসানসোল যায় নৌকা করে। তারা ঘরে না ফেরা পর্যন্ত চিন্তায় থাকতে হয়। তাই আমরা এখানে পাকা সেতুর দাবি করছি।উল্লেখ্য, বেশ কয়েক বছর আগে কেন্দ্রের মন্ত্রী থাকাকালীন প্রয়াত রামবিলাস পাসোয়ান বার্নপুরে দামোদর নদীর উপর একটি সেতু তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বলা হয়েছিলো রেল ও সেল যৌথ ভাবে এই সেতু তৈরি করবে। হয়েছিলো শিলান্যাসও। কিন্তু আজও তা হয়নি। সেই পরিকল্পনা আজ কোথায় আছে, কারোর তা জানা নেই।