আসানসোলের হেড পোস্ট অফিসে নির্দিষ্ট হলো এজেন্টদের কাজের সময়, ক্ষোভ, স্মারক লিপি
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলা এজেন্ট ইউনিয়নের পক্ষ থেকে সোমবার আসানসোল প্রধান ডাকঘর হেড পোস্ট অফিসে সিনিয়র পোস্ট মাস্টারের কাছে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়।এই বিষয়ে সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি কিরীট মজুমদার বলেন, আগে বড় পোস্ট অফিসের এজেন্টরা গ্রাহকদের টাকা সকাল ১০:০০ টা থেকে বিকেল ৪:০০ টা পর্যন্ত যে কোন সময় যে কোন কাউন্টারে জমা দিতে পারতেন। কিন্তু সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। যাতে এজেন্টদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে যে তারা গ্রাহকদের যেকোন কাজ করতে পারবেন। তারজন্য দুপুর ৩:০০ টা থেকে বিকেল ৪:০০ টা পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।




তিনি আরো বলেন, এর বিরুদ্ধে এদিন আমরা সংগঠনের তরফে সিনিয়র পোস্ট মাস্টারের সঙ্গে দেখা করে এই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করেছি। কিন্তু সিনিয়র পোস্ট মাস্টার বলেছেন যে রাউটারে এখনই সমস্যা রয়েছে। যে কারণে তিনি এই মুহূর্তে এই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করতে পারবেন না। তবে তিনি বলেছেন এজেন্টদের সমস্যার সাময়িক সমাধানের জন্য এজেন্টকে সকাল ১০:০০ টা আগে যা কিছু টাকা আছে তা কাউন্টারে জমা দিতে পারেন। বা ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে এসে জমা দিতে পারেন।
প্রসঙ্গতঃ, কেবলমাত্র আসানসোল হেড পোস্ট অফিসে এজেন্টদের সঙ্গে কোনরকম আলোচনা ছাড়াই একতরফা ভাবে তাদের কাজের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। কাজের সময় সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত দুপুর তিনটের পর করা হয়েছে। একইভাবে শনিবারও এজেন্টদের যাবতীয় লেনদেন কেবলমাত্র দুপুর বারোটার পরে হবে জানানো হয়েছে । এই বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পরে এজেন্ট সংগঠনের পক্ষ থেকে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে।
এমনকি এই বিষয় নিয়ে আসানসোলের জেলা এজেন্ট সংগঠনের পক্ষ থেকে দেড় হাজারের মতো এজেন্ট শনিবার বৈঠক করেছেন। যেখানে পরবর্তী আন্দোলনে কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিলো।পোস্ট অফিসের এজেন্টরা প্রধানত গ্রাহকদের স্বল্প সঞ্চয় সহ নানান ধরনের প্রকল্পের টাকাগ্রাহকদের নামে এসে জমা করেন । সকালের দিকে তারা তাদের সুবিধামতো এই কাজ করতেন। বিকেলের মধ্যেই তাদের সমস্ত ধরনের বই বা কাগজপত্র আপডেট হয়ে তাদের হাতেই চলে আসতো। সেদিনই তারা সেটা গ্রাহকের কাছে পৌঁছেও দেন । নতুন এই সিদ্ধান্ত কার্যকরী হয়েছে মাত্র দিন কয়েক হলো।তাতে তাদের অভিজ্ঞতা যে তিনটের পরে শুধু তারা আসছেন এমনটা নয়। সাধারণ মানুষও কিন্তু কাউন্টারে আসেন তাদের প্রয়োজনে। ফলে কাজ করতে তাদের রীতিমতো সমস্যা হচ্ছে।
এজেন্ট সংগঠনের অন্যতম নেতা পীযুষ মজুমদার বলেন এই নির্দেশ আচমকা আমাদের সাথে কোন রকম আলোচনা ছাড়াই হেড পোস্ট অফিসের সিনিয়র পোস্টমাস্টার নিয়েছেন। এটা শুধুমাত্র আসানসোলের জন্যই কার্যকরী হয়েছে। এটা কোন কেন্দ্রীয় সরকার বা পোস্টমাস্টার জেনারেলের অর্ডার নয়। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে এখানকার ৬ টি কাউন্টার এর মধ্যে ৪টি কাউন্টারে কম্পিউটার গুলি ঠিক মতো চলছে না। কাজ ব্যাহত হচ্ছে। কম্পিউটারে নিজস্ব কিছু সমস্যা তৈরি হচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা আমরা একদিন তিনটের সময় যেগুলো জমা দিলাম সেই কাজ কিন্তু সেদিন শেষ হল না। পরের দিন গিয়ে কাজ করে তারপর আমাদের দেওয়া হচ্ছে। এতে গ্রাহকের সাথেও আমাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটবে।
এখানকার এজেন্টরা এই সিদ্ধান্তের ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।এই বিষয়ে হেড পোস্ট অফিসের সিনিয়র পোস্টমাস্টার বিমল রাই বলেন, সাধারণ মানুষ যাতে তিনটে পর্যন্ত ডাকঘরে এসে কাজ করতে পারেন সেই জন্যেই এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এটা কেবলমাত্র আসানসোলের হেড পোস্ট অফিসের জন্যই করা হয়েছে। আর যে কম্পিউটারগুলির কিছু সমস্যা হচ্ছে আশা করছি তা দু-তিন দিনের মধ্যেই সমাধান হয়ে যাবে। তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, যদি বিকেলে এজেন্টরা কাগজ জমা দেন ও পরের দিন তা দপ্তর থেকে পান তাহলে অসুবিধা কোথায়?