ASANSOL

দুর্নীতি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ শাসক দলের মন্ত্রী – নেতাদের আক্রমণ

আসানসোলে ” পশ্চিমবঙ্গ দিবস ” পালনের মিছিলে রাজ্য বিরোধী দলনেতা, তৃনমুলকে হারাতে হিন্দুদের আবারও একজোট হওয়ার আহ্বান

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ আসানসোলে ” পশ্চিমবঙ্গ দিবস ” পালনের মিছিলে শুক্রবার যোগ দিয়ে দুর্নীতি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তার ভাইপো সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায় থেকে শাসক দলের মন্ত্রী ও নেতাদেরকে আক্রমণ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মহারাষ্ট্র ও দিল্লির নির্বাচনে দলের জেতার প্রসঙ্গ টেনে ২০২৬ এর বঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে হারাতে আবারও হিন্দুদেরকে একজোট হয়ে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।

এদিনও তিনি আসানসোল থেকে হুঙ্কার দিয়ে বলেন, ২০২১ এ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়েছি। ২০২৬ এ আবারও হারাবো। তার আরো দাবি, পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল ও দুর্গাপুরে নয়টি আসনে বিজেপি জিতবে। বিজেপির ” পশ্চিমবঙ্গ দিবস” উপলক্ষে এদিন বিকেল পাঁচটার পরে আসানসোলের জিটি রোডের পুরনো রামকৃষ্ণ মিশন মোড় থেকে শুরু হওয়া মিছিলে অংশ নেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। ত্রিশূল ও তুলসীগাছ হাতে নিয়ে সুসজ্জিত ও রঙিন এই মিছিলে রাজ্য বিরোধী দলনেতার সঙ্গে ছিলেন বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবতনু ভট্টাচার্য, রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়, তিন বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল, ডাঃ অজয় পোদ্দার, লক্ষ্মণ ঘোড়ুই, আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি সহ একাধিক জেলার নেতারা। বেশ কয়েক হাজার কর্মী ও সমর্থক মিছিলে পা মেলান।

পুরনো রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম মোড় থেকে শুরু হওয়া সেই মিছিল হটন রোড মোড় হয়ে গীর্জা মোড়ে এসে শেষ হয়। তার মাঝে রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে বস্তিন বাজার মোড়ে বিজেপির রাজ্য ট্রেড সেলের কো-কনভেনার সুব্রত ওরফে মিঠু ঘাঁটি উত্তরীয় ও ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। গীর্জা মোড়ের সভায় বক্তব্য রাখার আগে তিনি ডাঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ছবি ও তুলসী মঞ্চে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। মঞ্চে বিরোধী দলনেতাকে ত্রিশূল দিয়ে সম্বর্ধনা জানান মহিলা মোর্চার সদস্যারা।জনসভায়ও বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ হিন্দুদের সংখ্যা কমে যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি জোরের সাথে বলেন, এখনো সময় আছে, গোটা বাংলাকে ধুলিয়ান, সামশেরগঞ্জ ও মহেশতলা হতে দিতে না চাইলে, সনাতনী হিন্দুরা এককাট্টা হন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনদিন এটা হতে দেবেন না। কারণ তিনি একটা সম্প্রদায় ও ধর্মের তোষামোদি করেন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এদিনের সভায় আরো একবার ভোটের অঙ্কের হিসেব তুলে ধরে বলেন, মাত্র কয়েক শতাংশের ফারাক। ওরা ৪৬ শতাংশ। আমরা ৩৯ শতাংশ। কালিগঞ্জের মতো ৭৪ টা বিধান সভা কেন্দ্র আছে, যেখানে মুসলিমদের ভোটের নিয়ন্ত্রক। বাকিগুলো নয়। হিন্দুরা সবাই ভোট দিলে, সেই ফারাক থাকবে না। আপনারা সবাই ভেবে দেখুন।

জনসভার পরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় শুভেন্দু অধিকারী তার পরিচিত স্টাইলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শাসক দলের নেতা ও মন্ত্রীদের আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, এদিন বিজেপির রাজ্য সভাপতি ডঃ সুকান্ত মজুমদারকে ডঃ রজত বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে দেখা করতে যাওয়ার সময় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে নিয়েছে। আজ বাংলায় এমন পরিবেশ তৈরি হয়েছে যে পুলিশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃনমুল কংগ্রেসের নেতাদের নির্দেশে কাজ করছে। তাই, এখন বাংলা পুলিশকে মমতা পুলিশ বলা হচ্ছে কোথায়? তিনি বলেন, এদিন আসানসোলে আসার সময় দুর্গাপুরের ভিরিঙ্গি মোড়ে তাকে কালো পতাকা দেখানো হয়।

এই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এতে বোঝা যাচ্ছে তৃণমূল নেতাদের মনে আমার প্রতি কতটা ভয় তৈরি হয়েছে। আমি তো এক নম্বরে নেই। তিনি বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের উপর থেকে যদি পুলিশ সরিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে পুলিশ ছাড়া তৃণমূল নেতারা কিছুই করতে পারবেন না। পশ্চিম বর্ধমান জেলাতেও তৃণমূলের সমস্ত বড় নেতা পুলিশের জোরে চলছেন। তিনি মন্ত্রী মলয় ঘটক, পান্ডবেশ্বরের বিধায়ক তথা পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, আসানসোল পুরনিগমের মেয়র তথা বারাবনির বিধান উপাধ্যায়, জামুড়িয়ার বিধায়ক হরেরাম সিং এবং তার ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে এই সমস্ত নেতারা দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন। তাদের টাকার কোন হিসেব নেই।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বাংলার বন্যার জন্য ডিভিসিকে দোষারোপ করেন। শুভেন্দু অধিকারীকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি পাল্টা জবাব দেন যে, বর্ষা আসার আগে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাজ্য সরকার কি ব্যবস্থা নিয়েছে, তার জবাব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিতে হবে। প্রথমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তার উত্তর দিতে হবে।এদিনের সভায় বারাবনি বিধানসভার বেশ কয়েকজন দলবদল করে বিজেপিতে যোগ দেন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাদের নাম করেন ও তাদের হাতে দলের পতাকা তুলে দেন জেলা সভাপতি দেবতনু ভট্টাচার্য।

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *