BARABANI-SALANPUR-CHITTARANJAN

জাতীয় সড়কের জমি অধিগ্রহণ কে কেন্দ্র করে সালানপুর ব্লকের ধাঙ্গুরী মৌজা উত্তপ্ত

বেঙ্গল মিরর, কাজল মিত্র :- গোবিন্দপুর থেকে চৌরাঙ্গী পর্যন্ত জাতীয় সড়ক এনএইচ ৪১৯ নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হতেই সালানপুরের ধাঙ্গুরী মৌজায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। স্থানীয় গ্রামবাসীদের দাবি, তাদের পৈত্রিক জমি সরকারি নথিতে খাস জমি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যা তাদের কাছে থাকা কাগজপত্রের সঙ্গে মেলে না। এই ঘটনা জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব এবং ভূমি রেকর্ডে অসঙ্গতির গুরুতর অভিযোগকে সামনে এনেছে, যা এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

জাতীয় সড়ক নির্মাণের জন্য ধাঙ্গুরী মৌজার ৭০২ নম্বর দাগের প্রায় ৮ একর ৯৬ শতক জমির মধ্যেই বেশি গরমিল দেখা গেছে বলে খবর।গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, এই জমি তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি এবং তাদের কাছে এর বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। কিন্তু সরকারি কর্মকর্তারা দাবি করছেন, ১৯৬৩ সালের রেকর্ড অনুযায়ী এই জমির বেশির ভাগ অংশই খাসজমি হিসেবে নথিভুক্ত। এই ভিন্ন তথ্যের কারণে গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।ল্যান্ড অ্যাকুইজিশন অফিসার পলাশ নাথ জানিয়েছেন, তিনি এবং তার দল, ভূমি রেকর্ড অফিসের কর্মকর্তা এবং জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা অধিগ্রহণকৃত জমি পরিদর্শন করেছেন।

8এ সময় গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের জমির কাগজপত্র ভূমি রেকর্ড অফিসে জমা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে গ্রামবাসীরা অভিযোগ করছেন, তাদের কোনো পূর্ব বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি এবং সরকারি নথিতে তাদের জমিকে খাসজমি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তারা আরও জানান, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের ম্যাপ এবং ভূমি রেকর্ড অফিসের তথ্য তাদের কাগজপত্রের সঙ্গে মিলছে না।এই ঘটনা ভূমি রেকর্ডে অসঙ্গতি এবং সম্ভাব্য দুর্নীতির প্রশ্ন তুলেছে। গ্রামবাসীদের মতে, তাদের কাছে থাকা বৈধ কাগজপত্র সত্ত্বেও সরকারি নথিতে ভিন্ন তথ্য কীভাবে এলো, তা স্পষ্ট নয়। এই অসঙ্গতি কি ইচ্ছাকৃত, নাকি প্রশাসনিক ত্রুটি? এই প্রশ্ন এখন স্থানীয়দের মনে ঝড় তুলেছে।

অনেকে মনে করছেন, জমি অধিগ্রহণের নামে তাদের জীবিকার উৎস কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।স্থানীয় এক সমাজকর্মী বলেন, “এই ঘটনা শুধু জমি অধিগ্রহণের বিষয় নয়, এটি সরকারি ব্যবস্থাপনার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রশ্ন। ভূমি রেকর্ডে অসঙ্গতি থাকলে তা তদন্ত করা দরকার।” তিনি আরও জানান, এই ধরনের ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে অবিশ্বাস সৃষ্টি করছে, যা উন্নয়ন প্রক্রিয়ার জন্য ক্ষতিকর।সরকারি কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, তারা নথির ভিত্তিতে কাজ করছেন এবং গ্রামবাসীদের কাগজপত্র পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হবে। তবে এই অসঙ্গতি সমাধানে স্বচ্ছ তদন্ত ছাড়া সমস্যা মিটবে না বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও গ্রামবাসীদের সঙ্গে উন্মুক্ত আলোচনা নিশ্চিত করা এখন জরুরি। এই ঘটনা কেবল সালানপুরের নয়, পশ্চিম বর্ধমান জেলার ভূমি ব্যবস্থাপনার স্বচ্ছতার প্রশ্ন তুলেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *