অবৈধ সম্পর্কের জেরে বৌদিকে খুন! দুর্গাপুর আদালতে ১৩ বছর পরে সাজা ঘোষণা
বেঙ্গল মিরর, দুর্গাপুর, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ অবৈধ সম্পর্কের জেরে বৌদিকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ দোষী সাব্যস্ত দেওরের ১৩ বছর পরে সাজা হলো। দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের অতিরিক্ত জেলা বিচারক ( স্পেশাল কোর্ট) দোষী সাব্যস্ত সমীর মজুমদারের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। এতোদিন জেলে থাকার পরে বুধবার বেকসুর খালাস পেলেন মৃতার স্বামী রঞ্জিত মজুমদার।
পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরের লাউদোহার লবনাপাড়ায় ২০১২ সালের ২৮ জুন এই ঘটনাটি ঘটেছিলো। মাথা থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। নিথর দেহ মেঝেতে পড়েছিলো। রাতের অন্ধকারে, ঘরের ভিতরেই ঘটেছিল এই ঘটনা।




বৌদির সঙ্গে দেওরের অবৈধ সম্পর্কের অভিযোগ উঠে। আর সেই সম্পর্কের জেরেই গড়ে উঠে এক ভয়ংকর ঘটনা। স্বামী রঞ্জিত মজুমদার ও দেওর সমীর মজুমদারের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছিলো খুনের অভিযোগ। পরে দুজনেই গ্রেফতার হন। তারপর দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে চলে বিচার পর্ব। শেষ পর্যন্ত বুধবার দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের অতিরিক্ত জেলা বিচারক ( স্পেশাল কোর্ট) সাজা ঘোষণা ও চূড়ান্ত রায় দান করেন । স্বামী রঞ্জিত মজুমদার বেকসুর খালাস পান। বৌদিকে খুনের দায়ে দেওর সমীর মজুমদার দোষী সাব্যস্ত হয়। তার বিরুদ্ধে ঘোষণা হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। ১৩ বছর আগে ঘটা সেই ঘটনার পরে মৃতার বাপের বাড়ির লোকেরা ভেঙে পড়েছিলেন। এদিনের সাজা ঘোষণার রায়ে তারা স্বাভাবিক ভাবেই খুশি ।
দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস অথরিটির আইনজীবী গোপাল কুন্ডু বলেন, ১৩ বছর আগে ঘটনা ঘটার রাতে ঐ মহিলা স্বামী ও দেওরের সঙ্গে একই বাড়িতে ঘুমোচ্ছিলেন। মহিলার দুই বাচ্চাও ঘরে ঘুমোচ্ছিলো। পরে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তার মাথা ফেটে রক্ত বেরোচ্ছিলো। কে তাকে খুন করেছিলো, কেউ তা দেখেনি। খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। এই ঘটনার কোন আই উইটনেস বা প্রত্যক্ষদর্শী ছিলো না। মৃতার সঙ্গে তার দেওরের একটা অবৈধ সম্পর্ক ছিলো বলে অভিযোগ করা হয়েছিলো। এই মামলা চলাকালীন আদালতে বিচারকের সামনে মোট ৭ জন সাক্ষী দেন। শেষ পর্যন্ত সম্পর্ক, পরিস্থিতি ও তথ্য প্রমাণাদি বিচার করে এবং সওয়াল-জবাব শেষে বিচারক স্বামীকে বেকসুর খালাস করা ও দেওরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করেন। একইসাথে দেওরের ১০ হাজার টাকা জরিমানা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, অভিযুক্তদের মামলা লড়াই করার মতো আর্থিক সামর্থ্য ছিলো না। তাই লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস অথরিটির বিচারক হিসেবে আমি ছিলাম। নিয়ম মতো হাইকোর্টে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।