ASANSOL

আসানসোল আদালতে ২০ বছর ধরে চলা মামলায় সাজা ঘোষণা মঙ্গলবার

পুত্রবধূ খুনে দোষী সাব্যস্ত শ্বশুর, স্বামী সহ বেকসুর খালাস ৫

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* ২০ বছর ধরে চলা একটি মামলায় সোমবার অভিযুক্ত ৬ জনের মধ্যে একজন দোষী সাব্যস্ত হলেন। বাকি ৫ জনকে এদিন বেকসুর খালাস করা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তির নাম হলো শঙ্কর ঘোড়ুই। তিনি জামুড়িয়া থানার চুরুলিয়ার বাসিন্দা। এদিন আসানসোল আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক সেকেন্ড কোর্টের বিচারক মহুয়া রায় বাসু শঙ্কর ঘোড়ুইকে তার পুত্রবধূ টুম্পা ঘোষ ওরফে ঘোড়ুইকে খুনের অভিযোগে ( ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০২ নং ধারা) দোষী সাব্যস্ত করেছেন।

এই মামলায় মৃতার স্বামী সহ আরো ৫ জন অভিযুক্ত ছিলেন। তথ্য প্রমাণাদির অভাবে সেই ৫ জনকে এদিন বিচারক বেকসুর খালাস করার নির্দেশ দেন। তারা হলে হারাধন ঘোড়ুই, উত্তম ঘোড়ুই, মকর ঘোড়ুই, রেখা ঘোড়ুই ও চিন্তা ঘোড়ুই। বর্তমানে ৬ জনই জামিনে ছিলেন। এদিন শঙ্কর ঘোড়ুই দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে তাকে জুডিশিয়াল কাস্টডিতে নেওয়া হয়। ২০০৫ সালের ১৪ আগষ্ট জামুড়িয়া থানার পুলিশ মৃতার বাবা মঙ্গল ঘোষের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ৬ জনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধি বা আইপিসির ৪৯৮, ৩০২ ও ৩০৪/বি নং ধারায় ( কেস নং ১৬১/৫) মামলা করেছিলো। আজ মঙ্গলবার বিচারক দোষী সাব্যস্তর সাজা ঘোষণা করবেন।

এই মামলার সরকারি আইনজীবী বা পিপি হিসেবে ছিলেন বিনয়ানন্দ চট্টোপাধ্যায়। মোট ১৯ জন এই মামলায় বিচারকের সামনে এসে, তাদের সাক্ষ্য দান করেন। এই মামলায় প্রথমে ডিফেন্স লইয়ার বা অভিযুক্তদের আইনজীবী ছিলেন প্রয়াত ত্রিলোচন মুখোপাধ্যায়। পরবর্তী সময়ে এই ডিফেন্স লইয়ার হন দুর্গাপুরের কল্লোল মুখোপাধ্যায়। কিন্তু ২০ বছর ধরে কেন এই মামলা আসানসোল আদালতে চললো? এই প্রসঙ্গে এই মামলার সরকারি আইনজীবী বা পিপি বিনয়ানন্দ চট্টোপাধ্যায় বলেন, মৃতার স্বামী হারাধন ঘোড়ুই মুক ও বধির ছিলেন। তাই আদালতে মামলা চলাকালীন তার ভাবভঙ্গি বুঝতে পারে ( সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ বা সাংকেতিক ভাষা) এমন বিশেষজ্ঞ আনার জন্য ডিফেন্স লইয়ার আবেদন করেছিলেন। যার জন্য এতোটা দেরি হয়েছে।

সরকারি আইনজীবী ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালের ১০ মে জামুড়িয়া থানার কুলডাঙ্গার বাসিন্দা টুম্পা ঘোষের সঙ্গে জামুড়িয়ার চুরুলিয়ার হারাধন ঘোড়ুইয়ের বিয়ে হয়েছিলো। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই বাপের বাড়ি থেকে পন হিসেবে আরো টাকা, গয়না ও মোটরবাইক আনার জন্য শ্বশুর বাড়ির টুম্পার উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করতো। বিয়ের মাত্র তিনমাসের মধ্যেই ১৩ আগষ্ট রাতে শ্বশুর শঙ্কর ঘোড়ুইয়ের ঘরের বাথরুমের ভেতর থেকে টুম্পার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। তার গলায় কাটা দাগ ছিলো। মৃতার বাবা মঙ্গল ঘোষ পরের দিন স্বামী, শ্বশুর সহ মোট ৬ জনের বিরুদ্ধে জামুড়িয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে বলেন, পনের দাবিতে এরা সবাই মিলে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করার পরে মেয়েকে খুন করেছে।

তার আরো অভিযোগ ছিলো যে, টুম্পার স্বামী মুক ও বধির হওয়ায় তার শ্বশুর তাকে কুপ্রস্তাবও দিতো। এই মামলার সরকারি আইনজীবী বা পিপি বিনয়ানন্দ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ২০ বছর ধরে মামলা চলার পরে এদিন ফাস্ট ট্র্যাক সেকেন্ড কোর্টের বিচারক মহুয়া রায় বাসু শ্বশুর শঙ্কর ঘোড়ুইকে পুত্রবধূকে খুনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। বাকি ৫ জন বেকসুর খালাস পেয়েছেন। মঙ্গলবার বিচারক সাজা ঘোষণা করবেন।

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *