জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে শুট আউট, খুনে জড়িত সন্দেহে শিলিগুড়ি থেকে ধৃত তুতো বোন
বেঙ্গল মিরর, কুলটি, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্য রাস্তায় শুট আউটের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আসানসোল পুরনিগমের কুলটি বোরো অফিসের ঠিকা কর্মীর খুনের ঘটনায় আরো একজনকে গ্রেফতার করা হলো। রসোমবার সকালে তাকে উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে কুলটি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। ধৃত মহিলা ফারনাজ খাতুন খুন হওয়া পুর কর্মীর সম্পর্কে খুড়তুতো বোন। তাকে পুলিশ কুলটিতে নিয়ে আসছে। মঙ্গলবার তাকে আসানসোল আদালতে পেশ করে হেফাজতে নেওয়া হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।




গত শুক্রবার রাত দশটা নাগাদ আসানসোলের কুলটি থানার নিয়ামতপুরের রহমান পাড়ায় জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে এই গুলি চলার ঘটনাটি ঘটে। মৃত পুর কর্মীর নাম সৈয়দ জাভেদ বারি (৫০)। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এই ঘটনার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই শুক্রবার রাতেই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ঐ এলাকারই বাসিন্দা ইন্তেকাল আলম নামে এক যুবককে নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশ গ্রেফতার করে। শনিবার সকালে আসানসোল আদালতে পেশ করা হয়েছিলে। বর্তমানে সে ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতে রয়েছে ।
আসানসোলের কুলটি থানার নিয়ামতপুরের রহমান পাড়ায় একটি গলির মধ্যে দুই মোটরবাইক আরোহী সৈয়দ জাভেদ বারির মাথার ডানদিক লক্ষ্য করে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে। সঙ্গে সঙ্গে সে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে। গুলির শব্দে আশপাশের লোকেরা ছুটে আসার আগেই আততায়ীরা মোটরবাইক করে মুহুর্তের মধ্যে বেপাত্তা হয়ে যায়। পুরো ঘটনাটি রাস্তার মোড়ে লাগানো সিসিটিভিতে ধরা পড়েছে। সেই সিসি টিভির ফুটেজ পরে ভাইরাল হয়। তাতে দেখা যাচ্ছে, আগে থেকেই রাস্তার মোড়ে দুজন মোটরবাইকে বসে আছে। তাদের পেছনের দিক থেকে হাঁটতে হাঁটতে আসানসোল পুরনিগমের কুলটি বোরো অফিসের ঠিকা কর্মী সৈয়দ জাভেদ বারি বাড়ির দিকে যাচ্ছে। জাভেদ একটু এগোতেই দুজন মোটরবাইক স্টাট করে। ১০/১৫ ফুট যাওয়ার পরেই মোটরবাইকের পেছনে বসে থাকা যুবক ( গায়ে চাদর ঢাকা দেওয়া) জাভেদের পাশে আসা মাত্রই পিস্তল বার করে, তার মাথা লক্ষ্য করে চালায়। এরপর এলাকার বাসিন্দা ও পরিবারের সদস্যরা গুলিবিদ্ধ আহত জাভেদকে প্রথমে কুলটির একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে তাকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক পরীক্ষা করে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
আসানসোল পুরনিগমের কুলটি বোরো অফিসের ঠিকা কর্মীকে প্রকাশ্য রাস্তায় গুলি করে খুন করার ঘটনার তদন্ত করতে নেমে পুলিশ জমি সংক্রান্ত একটি বিবাদের কথা জানতে পারে। সেই জমি আছে উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়িতে। শ্বশুরবাড়ির সেই জমি নিয়ে সৈয়দ জাভেদ বারির সঙ্গে তার পরিচিত কয়েকজনের বিরোধ চলছিলো। যা নিয়ে, আগেও গন্ডগোল হয়েছে। খুন হওয়ার পরে মৃত ব্যক্তির স্ত্রী সবনম খাতুন সহ পরিবারের সদস্যরা সেই জমির কথা বলেছেন। তাদের দাবি, এই জমির জন্যই তাকে খুন করা হয়েছে। তারা বেশ কয়েকজনের নাম পুলিশকে জানিয়েছেন। এরপরেই রাতেই নিয়ামতপুর থেকে ইন্তেকাল আলমকে পুলিশ প্রথমে আটক ও পরে গ্রেফতার করে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ধৃত যুবক সৈয়দ জাভেদ বারিকে শুটারদের কাছে দেয়। এমনকি সে, গুলিবিদ্ধ জাভেদকে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো, তখন সে সেখানে ছিলো। পরিবারের তরফে জমি নিয়ে একটা বিবাদের কথা বলা হয়েছে। পরিবারের করা লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে একটি খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশ যে এফআইআর করেছে, তার মধ্যে এখনো পর্যন্ত ধৃত দুজনের নাম আছে বলে জানা গেছে।