দুর্গাপুরে বাগানবাড়ি থেকে উদ্ধার তৃণমূল নেতার ঝুলন্ত দেহ, তদন্তে পুলিশ
বেঙ্গল মিরর, দুর্গাপুর, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* নিজের বাগানবাড়ি থেকে উদ্ধার হলো এক তৃণমূল নেতার ঝুলন্ত দেহ। মৃত তৃণমূল নেতার নাম নিখিল নায়েক (৬৪)। তিনি দুর্গাপুর নগর নিগমের ১ নং ওয়ার্ডের কমলপুরের বাসিন্দা ছিলেন। শনিবার সন্ধ্যার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। তাকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে দুর্গাপুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী এবং কমব্যাট ফোর্স। পুলিশ কুকুর আনা, দোষীদের দ্রুত বার করা ও এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখার দাবি তুলে পরিবারের সদস্য ও এলাকার বাসিন্দারা পুলিশকে দেহ তুলতে বাধা দেন। আসেন আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি ( পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা। পরে সন্ধ্যে সাতটা নাগাদ খবর পেয়ে এলাকায় আসেন রাজ্যের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। তিনি পুলিশকে এই ঘটনার তদন্ত করার বলেন।



একইসাথে তিনি সেখানে থাকা এলাকার বাসিন্দা, তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী ও সমর্থক এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে তাদেরকে আশ্বস্ত করেন। এরপরই পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। মন্ত্রী বলেন, পুলিশকে গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে বলা হয়েছে। তিনি দলের নেতা হিসেবে এলাকায় জনপ্রিয় ছিলেন। এলাকার সমাজকর্মীও ছিলেন। আমি গোটা বিষয়টি রাজ্য সরকারকে জানিয়েছি। আমাদের মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে যে তিনি নেই।স্থানীয়দের অভিযোগ, নিজের এই বাগান বাড়িতে মাঝেমধ্যেই যেতেন নিখিল নায়েক। তিনি এলাকার ভালো সংগঠক এবং ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ঝুলন্ত দেহ কিন্তু হাঁটু নিচে ঠিকে রয়েছে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে তাকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। দ্রুত এই ঘটনার সাথে যারা যুক্ত তাদের গ্রেফতার করা না হলে দেহ তুলতে দেওয়া হবে না।আরো জানা গেছে, এদিন তিনি দুপুরে বাগানবাড়িতে ছিলেন। সেখানে তার কয়েকজন বন্ধু ছিলেন।
তারা চলে যাওয়া তিনি সেখানে দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন। কারন, সিঁড়ির পাশে তার ঝুলন্ত দেহের কাছেই তার খাবারের থালা ছিলো। যা আধ খাওয়া অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। মনে করা হচ্ছে, সেখানে দুপুরে খাওয়ার সময়ই এই ঘটনাটি ঘটেছে । এলাকার লোকজনদের অভিযোগ,নিখিলবাবুকে খুন করা হয়েছে। বাগানবাড়িতে দোতলায় উঠার রেলিং থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেহটি উদ্ধার হয়েছে। হাঁটু থেকে দেহের বাকি অংশ মাটিতে ঠেকে ছিল। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী যায়। কিন্তু কে বা কারা এবং কেনই বা নিখিলবাবুকে এরকমভাবে খুন করবে, তা নিয়ে দুর্গাপুর জুড়ে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। এলাকার উত্তেজিত লোকজনেরা অবিলম্বে দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেফতারের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন।মৃত নেতার ভাইপো অনুপম নায়েক বলেন, কাকার বাগানবাড়ি মানিক ঘোষ নামে একজন দেখাশোনা করতেন। সে অন্যদিনের মতো বিকেলর দিকে আসেন। কাজ শেষ করে তিনি দেখতে যান, কাকা ঘুম থেকে উঠছে না কেন। তখন সে গিয়ে দেখে দরজা বন্ধ। ধাক্কা মারতেই দরজা খুলে যায় ও তিনি দেখেন কাকা ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। তার দাবি, কাকাকে খুন করা হয়েছে। এদিকে, ডিসিপি ( পূর্ব) জানিয়েছেন, কমলপুর এলাকার একটা বাগান বাড়ি থেকে এক ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এলাকার বাসিন্দা ও পরিবারের সদস্যদের কিছু অভিযোগ রয়েছে। সবকিছুর তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।