আসানসোলের গরাই পরিবারে ” রাজলক্ষ্মী” রুপে পূজিত হন মা লক্ষী, দুদিনের পুজোয় দেওয়া হয় ৫৬ ভোগ ও ১০৮ রকমের মিষ্টি
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ* আসানসোলের গরাই পরিবারে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো প্রতি বছর হয় জাঁকজমক সহকারে ও সাড়ম্বরের সঙ্গে। গরাই পরিবারে দেবীকে পুজো করা হয় “রাজলক্ষ্মী রূপে”। এই বছর তার কোন ব্যতিক্রম হয়নি। গরাই পরিবারের লক্ষী পুজো হয় দুদিন। পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা হলো এসবি গরাই রোড। যাদের নামে এই রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে, সেই গরাই পরিবারেই হয় এই লক্ষ্মী পুজো।













এসবি গরাই রোডে গড়াই পরিবারের বাসভবন ” গরাই ম্যানসন” নামে পরিচিত। সেই গরাই ম্যানসনেই দেবীকে পুজো করা হয় রাজলক্ষ্মী রূপে। দেবীকে দেওয়া হয় ৫৬ ভোগ ও ১০৮ রকমের মিষ্টি। দুদিন ধরে হয় গরাই পরিবারের এই পুজো। সোমবার রাতে পঞ্জিকা মেনে শ্রী শ্রী রাজলক্ষ্মী মাতার পুজো হয়। পরে হয় আরতি ও পুষ্পাঞ্জলি। পরের দিন মঙ্গলবার দুপুরে হয়েছে শ্রী শ্রী রাজলক্ষ্মী মাতার অন্নকূট মহোৎসব ও প্রসাদ গ্রহণ। ১৯৭৫ সালে এই পুজো শুরু করেছিলেন প্রয়াত ষষ্ঠী নারায়ণ গরাই। তার অবর্তমানে ছেলেরা এই পুজোর প্রথা ধরে রাখেন।
এখন ষষ্ঠী নারায়ণ গরাইয়ের ছেলেদের পাশাপাশি নাতি ও পরিবারের সমস্ত সদস্যরা উদ্যোগ নিয়ে এই পুজো চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এতো আধুনিক প্রযুক্তির বাজারে এই গরাই পরিবারের পুজোর আকর্ষণ কোন অংশ কমেনি। যেমন কমেনি আড়ম্বর ও ঐতিহ্য। আসানসোল শহরের পাশাপাশি শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা মানুষেরা গরাই পরিবারের এই পুজোয় অংশ নেন।
এই পুজো নিয়ে পরিবারের তৃতীয় পুরুষ ষষ্ঠী নারায়ণ গরাইয়ের ছেলে কাশিনাথ গরাই, সোমনাথ গরাই ও কেদারনাথ গরাই বলেন, আমাদের পরিবারের এই পুজোতে রয়েছে বেশ কিছু বিশেষ নিয়ম ও রীতি আছে । বাবা প্রয়াত ষষ্ঠী নারায়ণ গড়াই ১৯৭৫ সালে এই পুজো শুরু করেছিলেন। মাঝে মাত্র একবার ১৯৮১ সালে মা মারা যাওয়ায় পরিবারের সদস্যরা পুজোয় অংশ নিতে পারেননি। সোমনাথবাবুরা বলেন, ১৯৭৫ সাল থেকে পুজো শুরু হওয়ার পরে সাধারণভাবে একদিনের পুজো হত।
পরে তা দুদিন পুজো শুরু হয়। এর কারণ হলো, যাতে সবাই পুজোর আনন্দ নিতে পারেন। কেননা, কোজাগরী লক্ষী পুজো বলতে গেলে, সব বাঙালির বাড়িতেই হয়। পুজোয় ১ মন চালের ভোগ হয়। মায়ের ইচ্ছায় ১০৮ রকমের মিষ্টি দেবীকে দেওয়া হয়ে আসছে। পুজোর প্রথম দিন সোমবার পুজো হয়েছে। মঙ্গলবার অর্থ্যাৎ দ্বিতীয় দিনে হয়েছে অন্নকূট ও ভোগ প্রসাদ গ্রহণ। তারা আরো বলেন, রীতি মেনে আজও পুজোর আয়োজন করা হচ্ছে।

