পশ্চিম বর্ধমান জেলা / চলতি বছরেই থ্যালাসেমিয়ার সঙ্গে তৈরী করা হচ্ছে আলাদা ইউনিট / স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রথম উদ্যোগ/ আসানসোল জেলা হাসপাতালের এমারজেন্সি বিভাগে চালু হলো হিমোফিলিয়া আক্রান্তদের চিকিৎসা
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১৯ ফেব্রুয়ারিঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল জেলা হাসপাতালে বুধবার থেকে শুরু হলো হিমোফিলিয়া রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা। এতদিন পর্যন্ত মেডিক্যাল কলেজগুলিতে এই রোগের চিকিৎসা করা হতো।
বাংলার মধ্যে আসানসোল জেলা হাসপাতাল প্রথম যেখানে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর এই পরিসেবা চালু করলো। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের সহযোগিতায় হিমোফিলিয়া সোসাইটি দূর্গাপুর চ্যাপ্টার রোগীদের এই চিকিৎসা দেওয়ার কাজে সহযোগিতা করবে। রোগীদের প্রতিষেধক দেওয়ার জন্য জেলা হাসপাতালের দুই চিকিৎসক ডাঃ স্বাগত চক্রবর্তী ও ডাঃ সোমনাথ গুপ্ত রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন। আরো জানা গেছে, আসানসোল জেলা হাসপাতালে হিমোফিলিয়া ও থ্যালাসেমিয়া নিয়ে পৃথক একটি ইউনিট করা হবে। আগামী মার্চ মাস থেকেই তার কাজ শুরু হয়ে যাবে।
আরো জানা গেছে, পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল ও দূর্গাপুরে হিমোফিলিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আপাততঃ ৪৫। হিমোফিলিয়া সোসাইটি দূর্গাপুর চ্যাপ্টারের আওতায় রয়েছে মোট সাতটি জেলা। সেগুলি হলো পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, মালদহ ও মুর্শিদাবাদ।
বুধবার সকালে এই চিকিৎসা চালু করা উপলক্ষে আসানসোল জেলা হাসপাতালের ডিএনবি রুমে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বা সিএমওএইচ ডাঃ দেবাশীষ হালদার, সুপার ডাঃ নিখিল চন্দ্র দাস, সহকারী সুপার ভাস্কর হাজরা, ডাঃ নির্ঝর মাজি, ডাঃ সঞ্জিত চট্টোপাধ্যায়, ডাঃ নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায় সহ অন্যান্য চিকিৎসক ও নার্সরা। এছাড়াও ছিলেন হিমোফিলিয়া সোসাইটি দূর্গাপুর চ্যাপ্টােরের সহ সভাপতি অজয় কুমার রায়, সম্পাদক পিনাকি বন্দোপাধ্যায়, হিমোফিলিয়া আক্রান্ত রোগী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।
অনুষ্ঠানে সিএমওএইচ বলেন, স্বাস্থ্য দপ্তর অনেকদিন ধরেই চাইছিলো যে, এই জেলার আসানসোল জেলা হাসপাতালে এই রোগের চিকিৎসা শুরু করা হোক। আমরা তা শুরু করলাম। সুপার বলেন, খুব দ্রুত হাসপাতালে হিমোফিলিয়া ও থ্যালাসেমিয়া রোগের আলাদাভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। চালু করা হবে একটি আলাদা ইউনিট। অনেক প্রতিকুলতা থাকা সত্বেও আমরা চিকিৎসক ও নার্সদের সহযোগিতায় এদিন থেকে এই রোগের চিকিৎসা শুরু করা হলো।
চিকিৎসক ডাঃ স্বাগত চক্রবর্তী ও হিমোফিলিয়া সোসাইটির সভাপতি অজয় রায় বলেন, হিমোফিলিয়া একটি বিরল, জিনঘটিত ও জন্মগত রক্তের রোগ। এই রোগের চিকিৎসা ঠিক সময় ধরা না পড়লে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তারা আরো বলেন, সাধারণভাবে হিমোফিলিয়া “এ ” ও হিমোফিলিয়া “বি ” বেশী হয়। এই রোগে আক্রান্ত মানুষদের শরীরে রক্তক্ষরণ দীর্ঘস্থায়ী হয় বা তা বন্ধ হয় না। সরকারি সাহায্যে এই জেলা হাসপাতালে বিনামূল্যে তার চিকিৎসা করা হবে।