ASANSOL-BURNPUR

ন্যানো ব্লাড ক্যাম্প লকডাউনে বাঁচিয়ে রেখেছে আসানসোল এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলার রোগীদের

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, ২৭ শে মার্চ ২০২০, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত :  সারা দেশজুড়ে জারি রয়েছে ২১ দিনের লকডাউন । প্রধানমন্ত্রী লকডাউন ঘোষণার আগে থেকেই করোনা আতঙ্কে রক্তদান শিবির প্রায় বন্ধ রয়েছে ৷ আর এরই  ফলস্বরূপ চরম রক্তসংকটে ভুগছে রাজ্যের হাসপাতালগুলো এবং  আসানসোল জেলা হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্ক এর ব্যতিক্রম নয় ।

 রক্তের এই  আকাল মেটাতে ছোট ছোট রক্তদান শিবিরের উদ্যোগ নিচ্ছে বিভিন্ন  স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন যারা সারাটা বছর রক্ত সংকট মেটাতে নিরন্তর চেষ্টা করে।

 গতকাল ২৬ শে মার্চ বিকেলে সংবাদ মাধ্যমের এক প্রতিনিধির থেকে জানতে পেরে “মাড়োয়ারি যুব মোর্চা”-র আসানসোল শাখা দুই ঘণ্টার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে একটি ছোট রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে। বিকেল ৫ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত এই শিবির চলে।

মারওয়ারি যুব মোর্চার সদস্যরা মোট ৯ ইউনিট রক্ত দেন। আয়োজকরা ধন্যবাদ দেন বিনীত চ্যাটার্জী নামে এক যুবক কে যিনি নিজে রক্তদান করার সঙ্গে সঙ্গে তার আরো চারজন বন্ধুকে রক্তদানের জন্যে উৎসাহ দিয়ে রক্তদানে  সামিল করেন। এছাড়া এই শিবিরে ইসমাইলের অঙ্কিতা আইচ নামে একজন যুবতী রক্তদান করেন যা এই উদ্ভুত করোনা পরিস্থিতিতে বিশেষ দৃষ্টান্ত রাখে। ওই যুবিতিকেও যুব মোর্চার সদস্যরা ধন্যবাদ দেন। 

এই শিবিরে উপস্থিত ছিলেন মাড়োয়ারি যুব মোর্চার আসানসোল শাখার প্রেসিডেন্ট সুদীপ আগরওয়াল, পশ্চিমবঙ্গ মাড়োয়ারি যুব মঞ্চের প্রাক্তন ট্রেজারার আনন্দ পারিক, শাখা এবং প্রান্ত রক্তদান সংযোজক অঙ্কিত আগরওয়াল উপস্থিত ছিলেন এবং তার তত্ত্বাবধানে এই রক্তদান শিবির আয়োজিত হয়।
আসানসোল হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কের উপর নির্ভরশীল প্রচুর রোগী এবং এর মধ্যে থ্যালাসেমিয়া রোগীর সংখ্যাও অনেক ।  দুর্ঘটনা আর অস্ত্রোপচারজনিত কারণে রক্ত যোগান দরকার। আর ঠিক এই কারণবশত: ন্যানো ব্লাডক্যাম্পের ভাবনা।
আসানসোলের রাধানগর এলাকার জীবন সুরক্ষা  নামের এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা আসানসোলের বিভিন্ন আবাসনে গিয়ে মানুষকে কোরোনা পরিস্থিতিতে রক্তের সংকটের কথা বোঝাচ্ছেন এবং আবাসনে আয়োজন করা হচ্ছে ন্যানো ব্লাডক্যাম্প । আবাসনের বাসিন্দারা নির্দিষ্ট দূরত্বে থেকেই ব্লাড ক্যাম্পে রক্ত দান করেছেন। 
গত ২৫ তারিখ থেকে তারাই প্রথম শুরু করেন ন্যানো ব্লাডক্যাম্প। ওইদিন রাধানগর রোডের “মনসা পার্ক প্লাজা” নামে এক বহুতলে ব্লাডক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয় বুধবার । 
‘জীবন সুরক্ষা’র সম্পাদক অসীম সরকার বলেন, “আমরা আবাসনের বাসিন্দাদের অনুরোধ করে সেখানেই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করছি ৷”
আসানসোল জেলা হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কের মেডিকেল অফিসার সঞ্জিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এই উদ্যোগ এই সংকটের সময় প্রশংসনীয়।”

এদিকে ফেডারেশন অফ্ ব্লাড     
ডোনারস্ অফ্ ইন্ডিয়া- র পশ্চিমবঙ্গের সম্পাদক শ্রী কবি ঘোষকে সাংবাদিকের তরফ থেকে ফোনে ওই দুই সংগঠনের করোনা পরিস্থিতিতে রক্তসঙ্কট মেটানোর ওই উদ্যোগের ব্যাপারে জানানো হলে তিনি রক্তদাতাদের এবং আয়োজকদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
ভবিষ্যতের লক ডাউনের দিন গুলোতে এই ছোট ছোট রক্তদান শিবির যে হাসপাতাল এবং রোগীদের অন্যতম ভরসা সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *