করোনা পরিস্থিতিতে আসানসোলের রেলপারে ৩ টি মসজিদে ৩০ জন বিদেশি সহ ৩৩ জন কোয়ারান্টাইনে; পরবর্তি সময়ে প্রশাসনের তৎপরতায় কলকাতার হজ হাউসে স্থানান্তরিত করার প্রক্রিয়া জারি
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, ১ লা এপ্রিল, ২০২০, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : দিল্লীর নিজামুদ্দিন এলাকার মসজিদে তাবলিঘি জামাতের অনুষ্ঠানে উপস্থিত লোকজনের করোনা সংক্রমণ নিয়ে দেশ জুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এই জামাতের অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিভিন্ন রাজ্যের মানুষের যোগসূত্র খুঁজতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ইতিমধ্যে দ্রুত সক্রিয় হয়েছে।
file photo
আর ঠিক তারই মাঝে আসানসোলে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, অসম ও বিহার থেকে ধর্মপ্রচারে আসা 33 জনকে তিনটি মসজিদে আলাদা আলাদা ভাবে কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়েছিল। এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত খবর পাওয়া যায় তাদের সবাইকে কলকাতার হজ হাউসে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে।
খতিয়ে দেখা হচ্ছে দিল্লির নিজ়ামউদ্দিনের ঘটনার সঙ্গে কোয়ারান্টাইনে রাখা মানুষদের কোনও যোগসূত্র রয়েছে কিনা এবং তাদের ট্র্যাভেল হিস্ট্রি তদন্ত করা হচ্ছে।
যদিও যতদূর খবর পাওয়া যাচ্ছে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত 33 জনের শরীরে কোরোনার কোনও উপসর্গ দেখা যায়নি ।
আসানসোল পৌরনিগমের স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে জানা গেছে, এদের মধ্যে ১১ জন ফেব্রুয়ারি মাসে ইন্দোনেশিয়া থেকে এসেছিলেন । তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ধর্মপ্রচার করেন যায় মধ্যে আসানসোল, বার্ণপুর, পুরুলিয়া প্রভৃতি স্থান রয়েছে এবং গত ৩১ শে মার্চ আসানসোল উত্তর থানা এলাকায় তারা আসেন । ১৯ জন বাংলাদেশ থেকে সরাসরি আসানসোলে এসেছিলেন এবং ৩ জন এছাড়াও অসম ও বিহার থেকে।
বিষয়টি জানার পরই তড়িঘড়ি জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের লোকজন এবং পুলিশ গিয়ে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে। পাশাপাশি তাঁদের তিনটি মসজিদের মধ্যে আলাদা আলাদাভাবে কোয়ারান্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে এই 33 জনকে নিয়ে ইতিমধ্যে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এবং এই আতঙ্ক লোকমুখে আসানসোলের অন্যান্য প্রান্তেও ছড়িয়ে পড়ছে।
আসানসোল পৌরনিগমের মেডিকেল অফিসার শামিম আলমের বয়ান অনুযায়ী,” এই 33 জনকে তিনটি মসজিদের মধ্যে কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়েছে এবং মসজিদের বাইরে কফ-থুতু যাতে না ফেলা হয় সেই ব্যাপারে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে ।
“সোশ্যাল ডিসটেন্স প্রটোকল” অনুযায়ী মসজিদের মধ্যে একে অন্যের সঙ্গে কমপক্ষে ৪ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে বলে দেওয়া হয়েছে । এরই সঙ্গে বারবার হাত ধোয়া ও সমস্ত প্রাথমিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আপাতত ১৪ দিন ওই কোয়ারান্টাইন স্থলেই থাকতেই হবে তাঁদের এরকমই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং এটিও বলা হয়েছে পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত তারা যাতে মসজিদ ছেড়ে কোথাও বের না হন।”
যদিও খবর পাওয়া পর্যন্ত তাদের কলকাতার হজ হাউসে স্থানান্তরিত করার প্রক্রিয়া চলছে।
রেলপার এলাকার ওই বিদেশিরা ছাড়াও দেশের অন্যান্য রাজ্যেও একইরকমভাবে মানুষদের এভাবে রাখা হয়েছে কিনা সে বিষয়েও তদন্ত চলছে।