ASANSOL-BURNPUR

লক ডাউনে ১ মাসের ওপর আটকে থাকার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে রাজস্থানের কোটা থেকে পশ্চিমবঙ্গে ফিরল প্রায় ২৬০০ পড়ুয়া

আসানসোল, বেঙ্গল মিরর, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত, ১লা মে,২০২০: 
সারা দেশব্যাপী লক 
ডাউন চলছে। আর এই কারণ বশত: রাজস্থানের কোটায় গত দেড় মাসের বেশী সময় ধরে কার্যত বন্দী হয়ে পড়েছিল পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা ও বিভিন্ন জেলার আড়াই হাজারেরও বেশী পড়ুয়া ৷

তাদের এই অবস্থার কথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পৌঁছয় এবং শেষ পর্যন্ত তিনি উদ্যোগ নিয়ে আটকে পড়া সেইসব পড়ুয়াদের রাজ্যে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেন।

    লক ডাউনের ৩৮ দিনের মাথায় শুক্রবার সকাল থেকে  বাসে করে সেইসব পড়ুয়া বাংলা – ঝাড়খণ্ড সীমান্ত পার করে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় আসে। আজ সকালে বেশ কিছু বাস আসানসোলের ডুবুরডিহি চেকপোস্ট এসে পৌছায় ।

উপস্থিত ছিলেন আসানসোল দুর্গাপুর  পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (এস বি) সহ বিভিন্ন আধিকারিকরা এবং কুলটি থানার পুলিশ ।ডুবুরডিহি চেকপোস্ট দিয়ে বাস গুলো এক এক করে  পশ্চিমবঙ্গের সীমানায় প্রবেশ  করে। সূত্রের খবর অনুসারে জানতে পারা যাচ্ছে প্রায় ৯৫ টির মত বাসে প্রায় ২৬০০ এর মত পড়ুয়া ফিরে এসেছে।

আসানসোলে দুর্গাপুর পুলিশের ডিসি সেন্ট্রাল সায়ক দাস জানিয়েছেন, ছাত্রদের অভ্যর্থনা সাময়িক বিশ্রাম ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্যে ৪ টি কেন্দ্র করা হয় জেলায় ৷ 
   তার মধ্যে ২ নং জাতীয় সড়কের পাশেই চৌরঙ্গী ফাঁড়ি লাগোয়া মনোরমা পার্কে একটি এবং আসানসোলে দুটি হোটেল রয়েছে। 
জেলাশাসক পূঁণেন্দু মাজি জানিয়েছেন সরকারের নির্দেশ অনুসারে সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷

 চৌরঙ্গী ফাঁড়ির কাছে মনোরমা পার্কে  সেইসব পড়ুয়ার  আবার নতুন করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। তাদের দেওয়া হয় মাস্ক। পরে খাবার খাইয়ে তাদের রাজ্য সরকারের বাসে নিজেদের জেলায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। মনোরমা পার্কে ছাত্রছাত্রীদের সাথে দেখা করতে যান রাজ্যের শ্রম ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। তিনি সমস্ত ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন।

সাংবাদিকদের মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, ” কি বলে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানাবো সেই ভাষা আমার জানা নেই। আমি ছাত্রছাত্রীদের সেট কথা বলেছি।তারাও অনেক ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীকে এই বিরাট কাজের জন্য। এই কথা আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেব। এছাড়া রাজস্থানের কোটা ছাড়াও অন্যান্য রাজ্যে যারা এখনো আটকে পরে রয়েছেন তাদের ফেরানোর জন্যে মুখ্যমন্ত্রী একটি কমিটি গড়ে দিয়েছেন। কমিটি বৈঠকে বসছেন রোজ এবং অন্যান্য রাজ্যে আটকে থাকা মানুষজনকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।” 

  এদিন আসানসোলের ২নং জাতীয় সড়কের জামুড়িয়ার নিংঘায় সিটি রেসিডেন্সি হোটেলে ছিলেন আসানসোল পুরনিগমের মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি, আসানসোল দূর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার সুকেশ জৈন ও পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু কুমার মাজির নেতৃত্বে জেলার প্রশাসন ও পুলিশের আধিকারিকরা। সেখানে তারা রাজস্থান থেকে আসা পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করেন। তাদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি তাদের হাতে মাস্ক তুলে দেন।তারা নিজেরা দাঁড়িয়ে থেকে তাদের খাবার খাওয়ান।

তারপর স্বাস্থ্য কর্মীরা পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করলে, তারা তাদের জেলায় ফিরে যাওয়ার তদারকি করেন।

 মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি  বলেন,” রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় নিজের এই ব্যবস্থায় নজরদারি করছেন। ম যেরকম সন্তানদের আগলে রাখেন সেরকম ভাবেই মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি পড়ুয়াদের ঠিকভাবে তাদের বাবা মা পরিবারের কাছে ফাইটেলে যেতে পারেন সেই ব্যবস্থা করেছেন। সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায় প্রতি মুহূর্তের খবর নিচ্ছেন।

মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে যেভাবে পড়ুয়ারা আজ নিজেদের বাড়িতে ফিরতে পারছে এবং তাদের চেহারায় যে খুশি ফুটে উঠেছে অবর্ণনীয়। জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের সবাই পড়ুয়াদের যেখানে যেখানে পাঠানোর তা করছেন।

  প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পড়ুয়াদের মেডিক্যাল চেকআপ এবং খাওয়াদাওয়া করিয়ে ট্রান্সপোর্ট এবং মোটর ভেহিকেলস দপ্তরের সহযোগিতায় সরকারি এস বি এস টি সি বাসে তুলে দিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা করিয়ে দিচ্ছেন জেলা প্রশাসন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *