আসানসোলের স্কুলের শিক্ষকের অভিনব উদ্যোগ / প্রতীকী মে দিবস পালনের পাশাপাশি যৌন কর্মীদের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ২ মেঃ করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক ও লক ডাউনের মধ্যে আসানসোলের কুলটি থানার নিয়ামতপুরের লছিপুর নিষিদ্ধ পল্লীতে শুক্রবার মে দিবসে এক অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হয়। নিষিদ্ধপল্লীর যৌনকর্মীদের প্রতীকী মে দিবস পালনের পাশাপাশি তাদের হাতে চাল, ডাল, আটা ও সোয়াবিনের মতো খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।



এই লক ডাউনের জন্য এখন এই যৌনকর্মীদের আয় পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। অনেক যৌন কর্মীর আবার রেশনকার্ডও নেই। আর তা থাকায় তারা চরম সমস্যায় পড়েছেন ৷ এমন একটা পরিস্থিতিতে তাদের কথা ভেবে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তাদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন ৷
কিন্তু আসানসোলের ইষ্টার্ণ রেলওয়ে বয়েজ স্কুলের শিক্ষক বিশ্বনাথ মিত্র মে দিবসে এইসব যৌনকর্মীদের পাশে এসে দাঁড়ালেন বলতে গেলে একটু অন্যরকম ভাবেই ৷ এদিন বিভিন্ন মানুষের সহযোগিতায় তিনি ৩০০ জনের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দেন।
শুধু তাই নয়, মে-দিবসের ব্যাজ পড়িয়ে যৌনকর্মীদের শ্রমের মর্যাদা দেওয়ার পাশাপাশি তাদের অধিকারের একটা বার্তাও বিশ্বনাথবাবু দেওয়ার চেষ্টা করেন। বিশ্বনাথবাবুর এই কাজে তাকে সাহায্য করেছেন আসানসোলের মহিশীলা কলোনির অআকখ ক্লাবের সদস্যরাও।
বিশ্বনাথবাবু বলেন, আমররা কয়েকদিন আগেই একবার এখানে এসেছিলাম ৷ কিন্তু আজকের দিনটাকে একটা বিশেষ উদ্দেশ্যেই নিষিদ্ধ পল্লীর মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বেছে নিয়েছি ৷ কারণ আমি মনে করি, মে মাসের প্রথম দিনের আন্দোলন শুধুমাত্র ৮ ঘন্টা কাজের দাবিতে ছিলে না। সেটা ছিল শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়েরও ৷ সামাজিক ও আর্থিক কারণে এরা এই পেশা বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে বা অনেককে বাধ্য করানো হয়েছে। তাদেরকে বেঁচে থাকার জন্য অন্যদের মতো প্রতিদিন লড়াই করতে হয়। এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবেনা। বিশ্বনাথবাবুরা এই কাজ দেখতে হাজির ছিলেন নিয়ামতপুর পুলিশ ফাঁড়ির আইসি পলাশ মন্ডল সহ অন্যরা।
তারাও এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন। বিশ্বনাথবাবুর এমন আয়োজনে নিষিদ্ধ পল্লীর মানুষেরা বলেন, এইরকম সম্মান ও স্বীকৃতি আজ পর্যন্ত কেউ দেননি । কোনদিন পাবো কিনা তাও জানিনা। আসানসোল থেকে বিশ্বনাথবাবু সঙ্গে আসানসোল থেকে এসেছিলেন দীপান্বিতা বাল্মীকি, প্রসেনজিৎ দাস সহ বেশ কয়েকজন।