ASANSOL-BURNPUR

করোনা আবহে বৃদ্ধার বার্ধক্যজনিত মৃত্যুর পর তাঁর স্মৃতির উদ্দেশ্যে আসানসোলের বিভিন্ন স্থানের প্রায় ৩৫০ গরীব মানুষকে খাওয়ালেন সুমথপল্লীর চ্যাটার্জী পরিবার

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, ৮ ই মে, ২০২০, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত:   মারণ করোনা ভাইরাসের প্রকোপে ভারতবর্ষে তৃতীয় দফার লক ডাউন জারী রয়েছে। আসানসোলের পরিস্থিতিও একইরকম। পশ্চিম বর্ধমান জেলাকে অরেঞ্জ জোন ঘোষণা করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সরকার এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি গরীব মানুষ,দিন আনা দিন খাওয়া শ্রমিক, ভবঘুরে প্রভৃতি মানুষরা যাতে খেতে পান তার আয়োজন করে চলেছেন। সরকারি বিধি অনুযায়ী সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ রয়েছে যেখানে লোকসমাগম হতে পারে। 

 
আর এই অবস্থাতেও কয়েকদিন আগে অসুস্থ বৃদ্ধার প্রয়াণের পর ধর্মীয় শ্রাদ্ধনুষ্ঠান খুব কম মানুষের মধ্যে নিরাপদ দূরত্ব মেনে করলেও লকডাউন পরিস্থিতিতে ওই প্রয়াত বৃদ্ধার স্মৃতির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে প্রায় ৩৫০ জন গরীব মানুষকে খাইয়ে আত্মতৃপ্তি লাভ করলেন আসানসোলের রাসডাঙ্গা সুমথপল্লীর বাসিন্দা চ্যাটার্জী পরিবার। 

  বস্তুত: গত ১৩ ই এপ্রিল স্বর্গীয় শ্রীমতি আরতি চ্যাটার্জীর বিকেল ৩:২৫ নাগাদ বাড়িতেই  মৃত্যু হয়। তিনি বেশ কয়েকমাস ধরে বার্ধক্য জনিত সমস্যায় শয্যাশায়ী ছিলেন। এদিকে তাঁর স্বামী সনৎ চ্যাটার্জী জীবিত রয়েছেন। এছাড়া পরিবারে দুই ছেলে তাপস ও মানস,দুই পুত্রবধূ রীনা ও মৌ, দুই নাতনী প্রিয়াঙ্কা ও তিতাস, নাতি সৌভিক রয়েছেন।

  আরতীদেবির প্রয়নের পর লক ডাউনের কারণে শ্রাদ্ধনুষ্ঠান কোনরকমে করলেও তাঁর স্মৃতির উদ্দেশ্যে পরিবারের সদস্যরা ঠিক করেন যে তারা গরীব , অভুক্ত মানুষদের খাওয়াবেন। সেই মত গতকাল বাড়িতেই খিচুড়ি, তরকারি রান্না করে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে গরীব, ভবঘুরে, অভুক্ত মানুষদের ভোজনের ব্যবস্থা করেন।

 সকাল থেকেই তারা ম্যাটাডোর গাড়ি করে আসানসোলের ডি আর এম অফিসের সংলগ্ন অঞ্চল, ১৩ নং মোড় , স্টেশনের ব্যাস স্ট্যান্ড, বি এন আর মোড়, কোর্ট সংলগ্ন অঞ্চলের গরীব মানুষদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেন। প্রায় ৩৫০ জন মানুষকে তারা এই পরিষেবা দেন। সেই কর্মকাণ্ডে  পরিবার বর্গের বাকি সদস্যদের মধ্য উপস্থিত ছিলেন বুম্বা, টিংকু, ঋজু, সৌম্য, রঞ্জন আচার্য্য, নিত্য পাল, অনুপ, বাপ্পা, সানি প্রমুখ। 

 প্রয়াত আরতী দেবীর বড় ছেলে তাপস চ্যাটার্জী বলেন,
“করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেক মানুষ অভুক্ত থাকছেন। তাই মায়ের স্মৃতির উদ্দেশ্যে অসহায়, ভবঘুরে ও গরীব মানুষকে খাইয়ে মানসিক শান্তি অনুভব করছি।”
করোনা আবহে এই ধরনের  উদ্যোগ সমাজের প্রতিটি মানুষের কাছে মানবসেবার আঙ্গিকে অভিনব বার্তা বহন করল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *