রাজ্যে প্রথম মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন ও ব্যবসায়ী সংগঠনের উদ্যোগে পরিযায়ী শ্রমিকদের চাকরীর নিয়োগপত্র দেওয়ার কাজ শুরু ;আসানসোলের রবীন্দ্র ভবনে হয়ে গেল কর্মশালা
আসানসোল ১৭ ই জুন ২০২০, বেঙ্গল মিরর, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত:
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সারাদেশে পঞ্চম দফার লক ডাউন জারী রয়েছে। কিন্তু ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্য থেকে আগত বহু শ্রমিক কাজ হারিয়েছে রাজ্যে চলে আসায় জীবন-জীবিকা নির্বাহের আশঙ্কার মেঘ দেখা দিয়েছিল। আর এই পরিস্থিতিতে সেইসমস্ত শ্রমিকদের কর্মের সুযোগ করে দেওয়ার লক্ষ্যে সারা রাজ্যে প্রথমবার পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলের রবীন্দ্রভবন প্রেক্ষাগৃহে আজ জেলা প্রশাসন চেম্বার অফ কমার্স এর সহযোগিতায় একটি কর্মশালার মাধ্যমে ১০২ জনের হাতে চাকরির নিয়োগপত্র নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়।
এই কর্মশালায় অতিথি হিসেবে ছিলেন রাজ্যের সিএমআরওর চেয়ারম্যান কর্ণেল দীপ্তাংশু চৌধুরী আসানসোল পুরনিগমের মেয়র তথা পান্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্র তেওয়ারি, আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের কমিশনার সুকেশ জৈন ও আসানসোল দূর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডার চেয়ারম্যান বিধায়ক তাপস বন্দোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাধিপতি শ্রীমতি সুভদ্রা বাউরী, দুর্গাপুরের মেয়র দিলীপ অগস্থি।
এদিনের কর্মশালার নেতৃত্বে ছিলেন পশ্চিম বর্ধমান জেলাশাসক পূর্ণেন্দু কুমার মাজি।
এই উপলক্ষে পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি বলেন,” করণা পরিস্থিতিতে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় যখন অন্যান্য রাজ্য থেকে শ্রমিকরা আসছেন ঠিক তখনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এই শ্রমিকদের ডাটাবেস তৈরি করা হয়। এখনো পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিকের নাম নথিভুক্ত আছে। এদের মধ্যে থেকেই ১০২ জন শ্রমিকের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হল।” এর কারণেই তিনি জেলার সমস্ত ব্যবসায়ী এবং শিল্পপতিদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি এই উদ্যোগকে অভূতপূর্ব আখ্যা দেন। পরিযায়ী শ্রমিক দের এইভাবে নতুন করে কাজের ব্যবস্থা করায় পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই। এই কর্মকান্ডের মাধ্যমে প্রমাণ হয়ে যায় যে করোনা পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে উদ্যোগ নিয়ে চলেছেন তার থেকে শিক্ষা নিয়ে সারা দেশকে তা অনুসরণ করে চলা উচিত।”
এদিকে সিএমআরওর চেয়ারম্যান কর্ণেল দীপ্তাংশু চৌধুরী বলেন, পরিযায়ী শ্রমিকরা অনেক কাজ করতে দক্ষ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় সব জেলার জেলাশাসকদের পরিযায়ী শ্রমিক দের জন্য ডাটা ব্যাঙ্ক তৈরীর নির্দেশ দিয়েছেন৷ যেজন্য এদিন আসানসোলে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরা এগিয়ে আসায় এই পরিযায়ী শ্রমিকরা কাজ পাবেন৷ এটা সবে শুরু। এটা চলতেই থাকবে৷ তিনি আরো বলেন, আজ পুরো দেশে যেভাবে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে, তাতে কেন্দ্র সরকার সঠিক ভাবে পরিকল্পনা নিয়ে লক ডাউন করলে, এই চেহারা হয়তো হতোনা। যখন করোনার প্রকোপ কম ছিলো, সেই সময় অন্য রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিক দের রাজ্যে ফেরানো উচিত ছিলো৷ যখন ভালোভাবে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লো, তখন পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানোর ব্যবস্থা করা হলো। কেন্দ্র সরকার প্রতিদিনই আইন ও নির্দেশে বদল আনছে৷
যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকে উপেক্ষা করেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা না বলে কেন্দ্র সরকার যা খুশি করছে৷ যেকারণেই গোটা দেশের এই পরিস্থিতি আজ সবার সামনে। বাংলাকে নিয়ে সবাই কথা বলে্ছে। অথচ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় নিজে লক ডাউনের শুরু থেকেই সাধারণ মানুষদের বাঁচানোর জন্য রাস্তায় নেমে কাজ করছেন। জেলায় জেলায় জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনার থেকে সবাই রাস্তায় নেমে কাজ করছেন৷
পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে লক ডাউনে কাজ হারিয়ে ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের নতুন করে কাজের ব্যবস্থা সারা রাজ্যে এবং অন্যান্য রাজ্যগুলির কাছে নতুন দিশা দেখাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।