ASANSOLBengali NewsFEATURED

তেলের ট্যাঙ্কার থেকে উদ্ধার ৫৬ কেজি গাঁজা, ধৃত ৫

জেরা করে আন্তঃরাজ্য তেলের চোরাকারবারি চক্রের হদিশ পেলো আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ

বেঙ্গল মিরর,রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১৭ সেপ্টেম্বরঃ তেলের ট্যাঙ্কার থেকে উদ্ধার হলো বিপুল পরিমানে গাঁজা। আর সেই গাঁজা সহ ধৃতদের জেরা করে আন্তঃরাজ্য পেট্রোল ও ডিজেলের চোরাকারবারি চক্রের হদিশ পেলো আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ। স্বাভাবিকভাবেই গোটা ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। সেই চক্রের ৫ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাদের মধ্যে ২ জন কলকাতা, ২ জন বিহার ও ১ জন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। যার মধ্যে ২ জন আপাততঃ আসানসোল উত্তর থানার পুলিশের ১০ দিনের রিমান্ডে আছে।

এই চক্রের মূল পান্ডা বা মাষ্টারমাইন্ডের খোঁজ করছে আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ।
গত সোমবার রাতে আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ ২ নং জাতীয় সড়কের গাড়ুইয়ের পুরনো টোল প্লাজার কাছে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে একটি তেল ট্যাঙ্কারকে আটকায়। পুলিশের কাছে খবর ছিলো যে, ঐ ট্যাঙ্কার করে কিছু পাচার করা হচ্ছে।

পুলিশ দেখে, ট্যাঙ্কার থামিয়ে চালক, খালাসি সহ ৫ নেমে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তারা তা পারেনি। পুলিশ ৫ জনকেই পাকড়াও করে। ট্যাঙ্কারে দীর্ঘক্ষন তল্লাশি করে পুলিশ কেবিনের মধ্যে যেখানে চালক ও খালাসি বসে, সেই সিটের তলা থেকে দুটি প্যাকেট পায়। তাতে ২০ কিলো ৬৫০ গ্রাম ও ৩৬ কিলো ১০০ গ্রাম গাঁজা ছিলো।

অরবিন্দ যাদব ও সমীর হোসেনকে ১০ দিন পুলিশ রিমান্ড ও বাকিদের জেল

গাঁজা পাচার করার জন্য সিটের তলায় খুব সুন্দর করে বক্স বা খোপ করা হয়েছিলো। বাইরে থেকে তা খালি চোখে বোঝা খুব মুশকিল। ধৃতরা হলো উত্তরপ্রদেশের মীরগঞ্জ থানার বড়কি দাহিয়ার অরবিন্দ যাদব ওরফে অরবিন্দ হরিবংশ যাদব (৪০), কলকাতার একবালপুর থানার খিদিরপুরের সমীর হোসেন (৪০), একবালপুর থানার কদমতলা মহল্লার মহঃ নাভেদ খান (২২), বিহারের বাঁকা জেলার জগৎপুর পাঁচওয়ারা থানার রাজবাঁধ গ্রামের ছটু প্রসাদ চৌহান (২২) ও গোপালপুরা থানার বৃন্দাবন গ্রামের অরুপ নারায়ণ দেব (৪০)। মঙ্গলবার ধৃতদের আসানসোল আদালতে পাঠানো হলে বিচারক তাদের জামিন নাকচ করেন। অরবিন্দ যাদব ও সমীর হোসেনকে ১০ দিন পুলিশ রিমান্ড ও বাকিদের জেল হাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।


পুলিশ ধৃতদের জেরা করে জানতে পারে যে, তেল ট্যাঙ্কারের আড়ালে এরা গাঁজা পাচারের কাজ করতো। এরা বাংলা, বিহার, উত্তরপ্রদেশ ও ঝাড়খন্ডের মধ্যে এই কাজ করতো। রাষ্ট্রায়ত্ব তেল সংস্থার তেল ট্যাঙ্কার হওয়ায় রাস্তায় পুলিশ তাদের আটকাতো না। যে সুযোগটাই এরা নিতো। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ গাঁজার পাশাপাশি আন্তঃরাজ্য পেট্রোল ও ডিজেলের চোরাকারবারি চক্রেও হদিশ পেয়েছে। তাদের এই তেল চুরি করার কায়দা জানার পরে পুলিশ হতবাক।

মাত্র ৪৫ মিনিটে ২০ হাজার লিটার পেট্রোল বা ডিজেল চুরি

বাংলার হলদিয়া থেকে বিহারের বারাউনি পর্যন্ত একটি রাষ্টায়ত্ব সংস্থার তেলের পাইপ লাইন গেছে। এই চক্রের সদস্যরা জানতো যে, কোন জায়গায় মাটির কতটা নিচ দিয়ে সেই পাইপ লাইন আছে। তারা বিশেষ কিছু জায়গায় সেই পাইপে একটা ফুটো করতো। সেই ফুটোয় বিশেষ ধরনের একটা ডিভাইস লাগাতো। তা দিয়ে এই চক্রের সদস্যরা মাত্র ৪৫ মিনিটে ২০ হাজার লিটার পেট্রোল বা ডিজেল চুরি করে ট্যাঙ্কারে ভরতো। এই পরিমান তেলের দাম বাজারে ১৫ লক্ষ টাকার মতো। কিন্তু এই চক্র তা ৮/১০ লক্ষ টাকায় বিক্রি করতো।

ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পারে যে, এই চক্রের মাষ্টার মাইন্ড হলো একটি বড় বেসরকারি সংস্থার আধিকারিক। সে এদেরকে এই কাজের কৌশল শিখিয়েছে। তার খোঁজ পুলিশ করছে। গত কয়েক বছর ধরে এই চক্র কাজ করছে।
পুলিশের এক আধিকারিক এদিন বলেন, গত কয়েক মাস আগে আসানসোল উত্তর ও জামুড়িয়া থানা এলাকায় এমন একটা চক্রের হদিশ পাওয়া গেছিলো। সেই চক্র আবার সক্রিয় হয়েছে। আমরা সবাইকে গ্রেফতার করার চেষ্টা করছি।

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *