কবর থেকে তোলা হলো ব্যবসায়ীর দেহ, চাঞ্চল্য
৫ খুড়তুতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ শ্বশুরের
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ৮ অক্টোবরঃ দোকানের সামনে নোংরা ফেলা নিয়ে বিবাদের জেরে ব্যবসায়ী ভাইকে মারধর করে খুনের অভিযোগ উঠলো তার খুড়তুতো ভাইদের বিরুদ্ধে। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে আসানসোল উত্তর থানার রেলপারের ওকে রোড এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত, শ্বশুরের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রশাসনের তরফে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সকালে আসানসোলের রেলপারের ওকে রোড সংলগ্ন কবরস্থান থেকে ব্যবসায়ীর দেহ তোলে পুলিশ। পরে সেই দেহর ময়নাতদন্ত করা হয় আসানসোল জেলা হাসপাতালে। মৃত ব্যবসায়ীর নাম মহঃ ইশরার ওরফে গোল্ডেন (৩৫)। তার বাড়ি ওকে রোডে ।




তিন বছর আগে বিয়ে হয়েছিলো
ব্যবসায়ীর তিন বছর আগে বিয়ে হয়েছিলো। তার স্ত্রী ও এক দেড় বছরের শিশু সন্তান আছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আসানসোল বাজারে ওকে রোডের বাসিন্দা মহঃ হাজি ইমতিয়াজের ছেলে মহঃ ইশরার ওরফে গোল্ডেনের কাপড়ের দোকান আছে। গত রবিবার সেই দোকানের সামনে নোংরা ফেলা নিয়ে হাজি ইমতিয়াজের ভাই মহঃ জালোর পাঁচ ছেলের সঙ্গে ঝগড়া হয়। অভিযোগ তখন তারা পাঁচজন মিলে ইশরারকে মারধোর করে। প্রথমে দুজন তাকে বেধড়ক পেটায় ও গলা টিপে দেয়। পরে ফোনে বাকি
তিনজন খবর পেয়ে সেখানে আসে।
পরে তারাও মারধর করে বলে অভিযোগ। মার খেয়ে ইশরার অসুস্থ ও অচৈতন্য হয়ে পড়ে। সেই অবস্থায় তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ইশরার মারা গেছে বলে চিকিৎসক জানান। এরপর রবিবারই ইশরারের মৃতদেহ রেলপারের কবরস্থানে কবর দেওয়া হয়।
জামাই ইশরারের এই মৃতুর খবর পান তার শশুর মুস্তাফিজ আলম।
বিচারক কবর থেকে দেহ তুলে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন
তিনি হাজারিবাগ থেকে এসে ইশরারকে খুন করার একটি অভিযোগ দায়ের করেন তার খুড়তুতো ভাইদের বিরুদ্ধে আসানসোল দক্ষিণ থানায়। সেই অভিযোগ পেশে পুলিশ একটি মামলা করে। সেই মামলা আসানসোল আদালতে উঠলে বিচারক কবর থেকে দেহ তুলে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন।
বুধবার আদালতের নির্দেশমতো পুলিশ কবরস্থানে মৃতদেহ তুলতে গেলে উত্তেজনা ছড়ায়। তখন অবশ্য ম্যাজিস্ট্রেট সেখানে যাননি। মৃতদেহ বুধবার তোলা না হলেও, কবরস্থানে পুলিশ পিকেট করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকালে বিশাল পুলিশ বাহিনী বিচারক ও চিকিৎসকের উপস্থিতিতে কবর থেকে মৃতদেহ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে।
ইশরারের শশুর মুস্তাফিজ আলম এদিন বলেন, মহঃ জালোর পাঁচ ছেলের নামে খুনের অভিযোগ থাকলেও পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করেনি । আমরা চাই তাদেরকে গ্রেফতার করা হোক।
অন্যদিকে আসানসোলের মহকুমাশাসক দেবজিৎ গাঙ্গুলি বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে দেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। সেই মতো এদিন দেহ তুলে ময়নাতদন্ত হয়েছে ।
স্থানীয় পুর কাউন্সিলর হাজি নাসিম আনসারি বলেন, পুলিশ প্রশাসন নিজেদের মতো কাজ করছে । আমরা ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের পাশে আছি । আইন আইনের পথে চলবে।
আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। নির্দেশমতো দেহ তুলে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।