দামোদরে তলিয়ে যাওয়া স্কুল পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার
রানিগঞ্জে মর্মান্তিক ঘটনা
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১৯ অক্টোবরঃ প্রায় ২৪ ঘন্টা পরে বন্ধুদের সঙ্গে স্নান করতে গিয়ে তলিয়ে যাওয়া স্কুল পড়ুয়ার দেহ সোমবার সকালে উদ্ধার হলো আসানসোলের রানিগঞ্জ থানার বল্লভপুরের বল্লভপুর শ্মশান ঘাট লাগোয়া দামোদর নদী থেকে। রানিগঞ্জের গীর্জাপাড়ার কাঠগাদা এলাকার বাসিন্দা মৃত স্কুল পড়ুয়ার নাম অখিলেশ কুমার (১৩)।




গোটা এলাকায় শোকের ছায়া
এই ঘটনায় গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। এদিন দুপুরে আসানসোল জেলা হাসপাতালে স্কুল পড়ুয়ার দেহের ময়নাতদন্ত হয়। মৃত অখিলেশ রানিগঞ্জের বল্লভপুর রঘুনাথচক হিন্দি হাইস্কুলের নবম শ্রেণির পড়ুয়া ছিলো। এছাড়াও সে প্রতিভাবান ক্রিকেট খেলোয়াড়ও ছিলো। এই বছরই অখিলেশ কুমার সিএবি পরিচালিত অনূর্ধ্ব ১৩ অম্বর রায় সাব জুনিয়র ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় সুযোগ পেয়েছিলো।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অন্যান্য দিনের মতো রবিবার সকালে রানিগঞ্জের বল্লভপুর পেপার মিল সংলগ্ন মাঠে বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে যায়। সেই খেলার শেষে মাঠের অদূরে বল্লভপুর শ্মশান ঘাট সংলগ্ন দামোদর নদীতে স্নান করতে নামে। কিন্তু আচমকাই সে জলের টানে তলিয়ে যায়। দুপুরে বাড়ির লোকেরা খবর পান যে, অখিলেশ দামোদর নদীতে তলিয়ে গেছে। বাড়ির লোক ও এলাকার বাসিন্দারা সেখানে ছুটে আসেন। খবর রানিগঞ্জের বল্লবপুর ফাঁড়ির পুলিশ আসে। প্রথমে আশপাশের লোকেরাই দামোদরে তার খোঁজে তল্লাশিতে নামে। কিন্তু তারা অখিলেশের খোঁজ পাননি। পরে জেলা ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের দল দামোদরে উদ্ধার কাজে নামে। রাত পর্যন্ত দামোদরে তল্লাশি করেও তাকে পাওয়া যায়। সোমবার সকালে বল্লভপুরের কিরন বালি ঘাটে অখিলেশের দেহ ভাসতে দেখা যায়। পুলিশ এসে সেই দেহ উদ্ধার করে।
স্বাভাবিক ভাবেই মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ার পরে অখিলেশের পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। বাড়ির লোকেরা পুলিশকে জানান, সাঁতার না জানলেও প্রতিদিন খেলার শেষে অখিলেশ বন্ধুদের সঙ্গে মাঠ লাগোয়া দামোদর নদীতে স্নান করতে নামতো। পরে সে বাড়ি ফিরে আসতো৷ তবে সে সাঁতার জানতো না।
অখিলেশ দামোদরে ডুবে যাওয়ার সময় যারা আশপাশে ছিলেন, তারা পুলিশকে বলেন, যে ঘাটে সবাই স্নান করে, সেখানে অখিলেশ ও তার বন্ধুরা স্নান করতে নামেনি এদিন। এই ঘাটে দামোদরের গভীরতা অনেকটাই কম। অখিলেশরা একটু দূরে স্নান করতে যান।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, সাঁতার না জেনে দামোদর নদীতে স্নান করতে নামাতেই এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ও স্থানীয় পঞ্চায়েতের তরফে বলা হয়েছে, স্নানের নির্দিষ্ট ঘাট ছাড়া অন্য কোথাও যাতে কেউ স্নান করতে না নামে তার দিকে নজর রাখা হবে।